রূপচর্চায় দই ব্যবহার




ত্বক উজ্জ্বল করে
১ টেবিল চামচ দইয়ের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মেশান। ভালো করে নেড়ে মিশ্রণটি ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। আধা ঘণ্টা পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকে ফিরে আসবে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা।

ত্বকের ময়লা দূর করে
বড় হয়ে যাওয়া লোমকূপের ভেতর থেকে ময়লা বের করে ত্বক পরিষ্কার রাখে দই। ১ টেবিল চামচ মধুর সঙ্গে পরিমাণ মতো দই মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। মিশ্রণটি ত্বকে লাগিয়ে রাখুন ১৫ থেকে ২০ মিনিট। ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ত্বকের ধরন অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার লাগান।

বলিরেখা দূর করতে
১ টেবিল চামচ দইয়ের সঙ্গে অর্ধেকটি কলা চটকে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। আধা ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন ঠাণ্ডা পানি দিয়ে। মুখ মুছে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে
দইয়ের অ্যাসিডিক উপাদান ত্বকের অতিরিক্ত তেল দূর করে ব্রণমুক্ত রাখে ত্বক। দইয়ের সঙ্গে ১ চিমটি জয়ফল গুঁড়া মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে গেল ধুয়ে ফেলুন।

খুশকি দূর করতে
১ টেবিল চামচ দইয়ের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ বেসন মিশিয়ে তৈরি করুন হেয়ার প্যাক। মিশ্রণটি চুলের গোড়ায় লাগিয়ে রাখুন। আধা ঘণ্টা পর ভেষজ শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন চুল। নিয়মিত ব্যবহারে খুশকি দূর হবে। এছাড়া দইয়ের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করলেও উপকার পাবেন।

চুল পড়া কমাতে
সমপরিমাণ দই ও নারকেলের দুধ মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি মাথার ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। কিছুক্ষণ পর মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন চুল। এটি চুল কমানর পাশাপাশি চুলে নিয়ে আসবে ঝলমলে ভাব।

শুষ্ক চুলের যত্নে
শুষ্ক ও রুক্ষ চুলে প্রাণ ফেরাতে দইয়ের হেয়ার প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। ৩ টেবিল চামচ দইয়ের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ নারকেল তেল ও ৪ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে ৩০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন চুলে। এরপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে চুল ধুয়ে শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। চুলের রুক্ষতা দূর হবে।

চুল ঝলমলে করতে
দই ভালো করে ব্লেন্ড করে চুলে লাগান। একটু তোয়ালে দিয়ে চুল ঢেকে নিন। ২০ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন চুল। চুল হবে উজ্জ্বল ও ঝলমলে।

ঘরে তৈরী এলোভেরার ফেসপ্যাক

যেভাবে তৈরি ও ব্যবহার করবেন অ্যালোভেরার ফেসপ্যাক
  • একটি পাত্রে ১ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল নিন।
  • ১ চা চামচ মধু মেশান।
  • আধা চা চামচ লেবুর রস দিন মিশ্রণে।
  • ত্বক পরিষ্কার করে আঙুলের সাহায্যে ঘষে ঘষে লাগান ফেসপ্যাকটি। চক্রাকারে ম্যাসাজ করবেন।
  • ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন।
  • ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ত্বক।
  • ত্বকের ধরন অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।
  • সপ্তাহে দুইবার এই ফেসপ্যাক ব্যবহার করুন।  
ত্বকে অ্যালোভেরার ফেসপ্যাক ব্যবহার করবেন কেন?
  • অ্যালোভেরায় রয়েছে ভিটামিন এ, বি, বি১, বি২, বি৩, বি৬ এবং বি১২। এগুলো ত্বকের সুস্থতায় কার্যকর।
  • ত্বকের লালচে ভাব দূর করতে পারে অ্যালোভেরা জেল।
  • অ্যালোভেরায় রয়েছে অ্যান্টি-সেপ্টিক ও অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল উপাদান। এগুলো বিভিন্ন জীবাণু থেকে সুরক্ষা করে ত্বককে।
  • অ্যালোভেরা জেল ও লেবুর রসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ব্রণ ও ব্রণের দাগ দূর করতে পারে।
  • লেবুর রসে রয়েছে সাইট্রিক অ্যাসিড ও ভিটামিন সি। এগুলো ত্বক উজ্জ্বল করে ও ব্রণের দাগ দূর করে।
  • মধু প্রাকৃতিকভাবে ত্বকে নিয়ে আসে জৌলুস।   
  • মধুতে থাকা প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক উপাদান ব্যাকটেরিয়ামুক্ত রাখে ত্বক।
  • অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে মধু ও লেবুর রস ধীরে ধীরে ব্রণের দাগ দূর করে ত্বক উজ্জ্বল ও কোমল করে।

শীতে ত্বকের যত্ন

  • শীতের সময় ত্বক শুষ্ক হয়ে ফেটে যায়। শুষ্ক ও রুক্ষ হওয়া থেকে ত্বক বাঁচাতে নিয়মিত তেল ব্যবহার জরুরি। ময়েশ্চারাইজারের সঙ্গে ১ অথবা ২ ফোঁটা আমন্ড অয়েল মিশিয়ে নিন। অ্যাভোকাডো অয়েল মেশালেও উপকার পাবেন। তেলমিশ্রিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন গোসলের পর পরই।
  •  
  • ফেসওয়াশ অথবা বডিওয়াশের সঙ্গে সামান্য মোটা দানার চিনি মিশিয়ে নিন। হালকা হাঁটে কয়েক মিনিট ঘষে নিন ত্বকে। এটি ত্বকের মরা চামড়া দূর করবে। ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ত্বক ধুয়ে সামান্য নারকেল তেল ঘষুন ত্বকে। ত্বক নরম ও কোমল থাকবে পুরো শীতকাল জুড়েই।
  •  
  • টক দইয়ের সঙ্গে ওটমিল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। চক্রাকারে পেস্টটি ত্বকে ম্যাসাজ করুন। ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি মরা চামড়া দূর করে ত্বক নরম করবে।  
  •  
  • শীতে ত্বক ও চুলের যত্নে অ্যালোভেরা ব্যবহার করতে পারেন। অ্যালোভেরা জেল সরাসরি চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন। কিছুক্ষণ পর ভেষজ শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। ত্বকেও সরাসরি ব্যবহার করতে পারেন এই জেল। এটি ত্বক নরম রাখবে।
  •  
  • চুলের রুক্ষতা দূর করতে নারকেল তেল সামান্য গরম করে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন। তোয়ালে গরম পানিতে ডুবিয়ে নিংড়ে চুল ঢেকে রাখুন ১৫ মিনিট। কিছুক্ষণ পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  •  
  • ঠোঁট ফাটা রোধ করতে সুইট আমন্ড অয়েল ব্যবহার করেত পারেন ঠোঁটে। রাতে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন।
  •  
  • হাত ও পায়ের যত্নে ব্যবহার করুন লেবু। লেবু অর্ধেক করে কেটে বেকিং সোডা মিশিয়ে হাত ও পায়ের ত্বকে ঘষে নিন। কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। রাতে ঘুমানোর আগে নারকেল তেল ম্যাসাজ করুন হাত-পায়ের ত্বকে।
  •  
  • পায়ের গোড়ালি ফেটে গেলে গরম পানি ও শ্যাম্পুর মিশ্রণে পা ডুবিয়ে রেখে পিউমিস স্টোন দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। পা মুছে গ্লিসারিন ব্যবহার করুন। রাতে মোজা পরে ঘুমাবেন।

ঘরোয়া উপটান: উজ্জ্বল ত্বক ঝটপট

ফেসপ্যাক ১
  • ১ চা চামচ হলুদ গুঁড়ার সঙ্গে আধা চা চামচ লেবুর রস মেশান।
  • ২ টেবিল চামচ দুধের সর ও কয়েক ফোঁটা রোজমেরি এসেনশিয়াল অয়েল মেশান মিশ্রণে।
  • মুখ ও গলার ত্বকে ফেসপ্যাকটি লাগিয়ে রাখুন।
  • শুকিয়ে গেলে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগান।  
ফেসপ্যাক ২
  • ১টি পাকা কলা চটকে ২ চা চামচ খাঁটি মধু মেশান।
  • ১ চা চামচ লেবুর রস ও কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিন।
  • মিশ্রণটি ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। মুখের পাশাপাশি গলা ও হাতের ত্বকেও লাগাতে পারেন।
  • ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ত্বক ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
ফেসপ্যাক ৩
  • ২ চা চামচ ওটমিলের সঙ্গে ৩ টেবিল চামচ টমেটোর রস মেশান।
  • ১ চা চামচ চিনি মিশিয়ে নেড়ে নিন।
  • ত্বকে লাগিয়ে রাখুন মিশ্রণটি।
  • শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন।
ফেসপ্যাক ৪
  • ১ চা চামচ বেসনের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ টক দই মেশান।
  • ১ চা চামচ অ্যালোভেরা জেল ও আধা চা চামচ নারকেল তেল মিশ্রণে দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন।   
  •  উপটানটি ত্বকে লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট।
  • কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
ফেসপ্যাক ৫
  • ১টি ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন।
  • মিশ্রণটি মুখ ও গলার ত্বকে লাগিয়ে রাখুন আধা ঘণ্টা।
  • কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
ফেসপ্যাক ৬
  • ১ চা চামচ আলুর রসের সঙ্গে ১ চা চামচ অ্যালোভেরা জেল মেশান।
  • ২ চা চামচ পাকা পেঁপের শাঁস ও ১ চা চামচ গোলাপজল মিশিয়ে নেড়ে নিন।
  • উপটানটি ত্বকে লাগিয়ে রাখুন না শুকালো পর্যন্ত।
  • শুকিয়ে গেলে ধুয়ে নিন পানির ঝাপটায়।

সাদা নখ পাওয়ার সহজ টিপস

ঘরে বসে ফটফটে সাদা নখ পাওয়ার ৬টি উপায়:-

১. টুথপেস্ট:- দাঁত ব্রাশ করার মতোই ব্রাশ করুন নখ। টুথ ব্রাশে টুথপেস্ট তা দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করতে হবে নখ। বেশকিছু দিন এই পদ্ধতি চালিয়ে গেলেই পাওয়া যাবে ঝকঝকে নখ।

২. লেবুর-বেসনের পেস্ট:- একটা কাচের পাত্রে বেশ কিছুটা লেবুর রস করে তার সঙ্গে বেসন মেশাতে হবে। লেবুর রস আর বেসনের পেস্ট তৈরি হয়ে গেলে ওই পেস্ট নখের ওপর লাগিয়ে রাখতে হবে।

৩. ডেনটিউর ক্লিনার:- দাঁতের পাটি পরিষ্কার করার জন্য ওষুধের দোকানে এক ধরণের ট্যাবলেট কিনতে পাওয়া যায়। এই ট্যাবলেট গরম জলে মিশিয়ে সেই জলে মিনিট পাঁচেক ডুবিয়ে রাখতে হবে নখ।

৪. বেস কোট:- নখের সাদা ভাব ধরে রাখতে সবসমইয় নেল পলিশ লাগানোর আগে লাগানো দরকার বেস কোট। এতে নখ ভালো থাকে।

৫. মইশ্চারাইজার:- শীত হোক বা গ্রীষ্ম। হাত সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ধপধপে সাদা নখ পেতে রোজ নিয়ম করে লাগাতে হবে মইশ্চারাইজার।

৬. নেল হোয়াইটনিং পেনসিল:- নখ সাদা রাখার জন্য দোকানে কিনতে পাওয়া যায় নেল হোয়াইটনিং পেনসিল। প্রয়োজনে গোটা ম্যানিকিউরের কিট কিনে বাড়িতেই করা যেতে পারে ম্যানিকিউর। এতে নখ শুধু সাদাই হবে না, ভালো থাকবেও।

ক্যাস্টর অয়েল: চুল বাড়বে দ্রুত

অয়েল চুলে কীভাবে ব্যবহার করবেন-
  • সমপরিমাণ ক্যাস্টর অয়েল ও নারকেল তেল একসঙ্গে মেশান। মাথার তালুতে ভালো করে ম্যাসাজ করে অপেক্ষা করুন ৪৫ মিনিট। শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন চুল।
  •  
  • ক্যাস্টর অয়েলের সঙ্গে সমপরিমাণ অ্যালোভেরা জেল মেশান। মিশ্রণটি চুল ও মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করুন। চুল তোয়ালে দিয়ে মুড়ে আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। সবচেয়ে ভালো হয় সারারাত রাখলে। শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  •  
  • ১ টেবিল চামচ মেথির সঙ্গে ৫ টেবিল চামচ নারকেল তেল ও ক্যাস্টর অয়েল মেশান। মিশ্রণটি কুসুম গরম করে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন। চুলেও ব্যবহার করুন। সপ্তাহে দুইবার এটি চুলে লাগান।
  •  
  • ২টি ডিমের কুসুমের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ ক্যাস্টর অয়েল মেশান। আধা কাপ পানি মিশিয়ে নেড়ে নিন মিশ্রণটি। চুলে ব্যবহার করে অপেক্ষা করুন ২০ মিনিট। ঠাণ্ডা পানি দিয়ে চুল ধুয়ে শ্যাম্পু করে নিন। চুলের আগা ফাটা দূর হবে।
  •  
  • ৩ টেবিল চামচ ক্যাস্টর অয়েলের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ সরিষার তেল মেশান। মিশ্রণটি মাথার ত্বকে ঘষে ঘষে লাগান। ১ ঘণ্টা পর মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন চুল।

চুল দ্রুত লম্বা করতে যা করবেন


  • তেল ম্যাসাজ করুনঃ
    চুলের বৃদ্ধিতে সব চাইতে কার্যকরী উপায় হচ্ছে তেলের ম্যাসাজ। নারিকেল তেল,অলিভ অয়েল চুলের জন্য অনেক ভালো। এই দুইটি তেল একসাথে মিশিয়ে কিংবা আলাদা একটি তেল চুলে ভালোভাবে ম্যাসাজ করে নিন। সারারাত রেখে সকালে শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন।
  • ডিমের হেয়ার মাস্কঃ
    ১ টি ডিম, পরিমাণ মতো অলিভ অয়েল এবং মধু মিশিয়ে চুলে লাগান। একটি শাওয়ার ক্যাপ কিংবা কাপড় দিয়ে চুল ঢেকে রাখুন ৩০ মিনিট। এরপর মৃদু শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২/৩ দিন এই মাস্ক ব্যবহার করুন।
  • দুধ বা টক দইঃ
দুধ বা দই চুলকে নরম আর মসৃণ করে চুলের রুক্ষতা দূর করে। ফলে চুল পুষ্টি পাবে এবং চুল ফাটবে না। নারিকেল             তেল, আমণ্ড অয়েল (কাঠবাদামের তেল), আধা কাপ দুধ বা টক দই মিশিয়ে নিন। এরপর এই মিশ্রণটি ভালোভাবে             চুলে লাগিয়ে ৩০-৪০ মিনিট রেখে দিন এবং শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত ২ দিন এই মিশ্রণটি মাথার               ত্বকে এবং চুলে ভালো করে লাগিয়ে ১ থেকে ২ ঘণ্টা রাখুন। দ্রুত ভালো ফল পাবেন।
  • লেবুর রসঃ
    চুলের সৌন্দর্য চর্চায় লেবুর রসের ব্যবহার নানাভাবে হয়। লেবুর রসের সাথে সমপরিমাণ পানি মেশান। এবার চুলে ভালো করে লাগান। ২০-৩০ মিনিট রেখে চুল ধুয়ে ফেলুন।
  • চায়ের লিকারঃ
চুল বৃদ্ধি করতে চায়ের লিকারের তুলনা হয় না। কারণ এটি চুলের কন্ডিশনার হিসেবে খুব ভালো। একটি পাত্রে                   চায়ের লিকার নিয়ে তাতে চুল ডুবিয়ে রাখুন ১০ মিনিট অথবা গোসল শেষে লিকারটি দিয়ে আস্তে আস্তে চুল ধুয়ে                 ফেলুন। এভাবে ২/৩ দিন চায়ের লিকার ব্যবহার করুন আপনার চুলে।
  • ভিটামিন-ই ক্যাপস্যুলঃ
চুলের বিশেষ যত্নের জন্য চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী অলিভ অয়েল নিয়ে এতে ১ টি ভিটামিন ই ক্যাপস্যুল ভেঙ্গে নিন।                  এরপর একে হালকা গরম করে মাথার ত্বকে ভালোভাবে লাগান। ৩০ মিনিট রেখে চুল ধুয়ে ফেলুন। সবচেয়ে ভালো                ফলাফলের জন্য পুরোরাত এই মিশ্রণটি মাথায় লাগিয়ে রেখে সকালে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২/৩ দিন ব্যবহার                    করুন।
এভাবে আপনি ঘরে বসে সহজে আপনার চুল সুন্দর করতে পারবেন এবং চুল দ্রুত বড় হবে।
সতর্কতাঃ
  • চুল মোছার জন্য নরম তোয়ালে ব্যবহার করতে হবে। চুল বেশি ঘষে ঘষে মোছা যাবেনা। এতে চুল ফেটে যায় বেশি। ভেজা চুল আস্তে আস্তে মুছতে হবে।
  • ভেজা চুল আঁচড়ানো যাবে না।
  • চুল শুকাতে, চুল ভালোভাবে নরম তোয়ালে দিয়ে মুছে, ফ্যানের বাতাসে বা আলো বাতাসপূর্ণ জায়গায় শুকাতে হবে। কোনক্রমেই হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করা যাবে না।
  • ইলেক্ট্রিক সকল যন্ত্র ব্যবহার পরিহার করতে হবে।
  • চুলের রুক্ষতা কমাতে এবং আগা ফেটে যাওয়ার প্রবণতা রোধ করতে, প্রতিদিন শ্যাম্পু করা বাদ দিতে হবে। কারণ চুল ধোয়ার ফলে, মাথার ত্বকের তেলও ধুয়ে যায়। তাই সপ্তাহে দুই থেকে তিনবারের বেশি শ্যাম্পু করা উচিত নয়। শ্যাম্পুর রাসায়নিক উপাদানও চুলের ক্ষতির কারণ হতে পারে।

নিস্প্রাণ হাত-পায়ে কিভাবে কোমল ভাব আনবেন

কী কী লাগছে তবে দেখে নিন এবার –
  • নারকেল তেল
  • লবণ
  • লেবু
  • কুসুম গরম পানি
  • গ্লিসারিন, গোলাপজল অথবা ময়েশ্চারাইজিং লোশন
যেভাবে করবেন –
হাতের তালু বাবাটিতে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী লবণ নিন। হাত এবং পায়ের জন্য একচা – চামচের খানিকটা বেশি লবণ দরকার হবে। কেবল হাতের জন্য আধচা – চামচেই হয়ে যাবে।
এবার তাতে নারকেল তেল ঢালুন। একটু মিশিয়ে নিয়ে এই মিশ্রণটি ত্বকে লাগিয়ে নিন ভালো করে। এবার আলতো ভাবে ম্যাসাজ করতে থাকুন। দুই/তিন মিনিটের জন্য ম্যাসাজ করতে পারেন বা চাইলে আর সামান্য বেশি সময়ও নিতে পারেন আপনি।
লেবুর ব্যবহার এখানে আপনার ইচ্ছে অনুযায়ী হতে পারে। ত্বক থেকে দাগ – ছোপ দূর করার থাকলে মিশ্রণে কিছুটা লেবুর রস যোগ করে নিন কেবল।
ম্যাসাজ করা শেষে পাত্রে কুসুম গরম পানি নিয়ে তাতে হাত – পা ডুবিয়ে রাখুন। ওই পানিতেই ধীরে ধীরে ত্বক থেকে মিশ্রণ ছাড়িয়ে নিন।আরেকবার পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে শুকনো করে মুছে ফেলুন।
নিজের ত্বকের ব্যাপক পরিবর্তন আপনার মনোযোগ কেড়ে নেবে তখনই। খুব সাথে – সাথেই চামড়ায় কোমলতা টের পাবেন আপনি।বিশেষ করে বহু দিন যদি রুক্ষ নিষ্প্রাণ ত্বক দেখে থাকেন তবে হুট করে এই মোলায়েম ভাবটা আপনাকে অবাক করবে নিঃসন্দেহে।
হাত মুছে নিয়ে এবার পছন্দ বা দরকার মতন ময়েশ্চারাইজিং করুন। ডিপ ময়েশ্চারাইজিং এর জন্য গ্লিসারিন ব্যাবহার করতে পারেন, কয়েক ফোঁটা গোলাপজল মিলিয়ে।বা নিজের প্রিয় লোশনেই শেষ করুন ত্বকচর্চার পাট।
বিশেষ করে রুক্ষতার মৌসুমে এই উপায়টি যেকারোই ভীষণ উপকারে আসবে। কয়েক দিনের টানা প্রয়োগ দীর্ঘ সময়ের নির্জীব ত্বকে প্রাণ ফিরিয়ে আনবে।নারকেল তেল প্রাকৃতিকভাবে ময়েশ্চারাইজিং হিসেবে  খুব কার্যকরী, সাথে লবণ ত্বকের মৃতকোষ দূর করে দিচ্ছে স্ক্রাবিং এর মাধ্যমে। হাত-পায়ের পুরনো মলিনতা চটজলদি কাটিয়ে দিয়ে ত্বকে চনমনেভাব নিয়ে আসতে এই পদ্ধতিটি সত্যিই দারুণ।

দৈনন্দিন রূপচর্চায় কার্যকরী কিছু টিপস

  • ত্বকের রং আরও ফর্সা করার জন্য টক দই লাগান মুখে। যাদের ত্বক শুষ্ক তাঁরা মধু ও দই মিশিয়ে নিন। মিনিট বিশেক রাখুন মুখে, তারপরে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত তিন দিন এরকম লাগাতে হবে।
  • প্রাণখোলা হাসি শারীরিক চাপ এবং স্ট্রেস মুক্ত হতে সাহায্য করে। একটি ভালো হাসির পরে ৪০ মিনিট পর্যন্ত শরীরের পেশী শিথিল থাকে।
  • কাঁচা দুধে তুলা ভিজিয়ে কয়েকদিন ঠোটে ঘষুন ,কালো দাগ উঠে যাবে।
  • রসুন, পিয়াজ, আমলকী আর কোকোনাট অয়েল একসাথে মিশিয়ে হাল্কা গরম করে মাথায় দিয়ে শ্যাম্পু করুন। এটি চুল বৃদ্ধি করবে আর চুল পরা বন্ধ করবে।
  • একটি হট ওয়াটার ব্যাগে গরম পানি ভরে আপনার কপালে ও ঘাড়ে লাগান। এর ফলে ওই স্থানের মাসেলগুলো রিলেক্স হবে এবং মাথা ব্যথা ও টেনশন কমবে।
  • কয়েকটি পেয়ারা পাতা নিন। তারপর এক গ্লাস পানিতে সিদ্ধ করুন। এবার ওই পানি দিয়ে কুলকুচি করুন। দাঁত ব্যাথা কমে যাবে।
  • তরমুজের বীচি বেটে ত্বকে লাগালে ত্বক ভালো থাকে। এ ছাড়া ত্বকে সরাসরি তরমুজের বীচির তেল লাগালে ব্রণের সমস্যা দূর হয়ে যায়।
  • খালি পেটে ফলের রস পান করা, কিংবা ফল খাওয়া ডায়াবেটিস রোধে খুবই কার্যকর। তবে দেখা গেছে, স্বাদে তিতা ফলের রস খেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে করোল্লা বা উচ্ছা জাতীয় খাবার সাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। এগুলো জুস বা ভাঁজি করে খাওয়া যেতে পারে। এজন্য অবশ্য আপনার নিয়মিত খাবারের তালিকা পরিবর্তনের দরকার হবে না।
  • ঘাড়, গলায় ও মুখে পাউডার লাগানোর সময় হালকা ভেজা স্পঞ্জ ব্যবহার করুন। কমপ্যাক্ট পাউডার সহজে সেট করবে এবং বেশিক্ষণ মেকআপটিকে থাকবে।
  • নিয়মিত সাইকেল চালালে ওজন কমে। সাইকেল চালালে ক্যালোরি খরচ বৃদ্ধি পায় এবং মেটাবলিজম বা বিপাকের হার বৃদ্ধি করে, যার ফলে ওজন কমতে সাহায্য করে।
  • নেল পলিশ ব্যবহারের আগে স্বচ্ছ নেল পলিশ লাগান। এতে নখ হলুদ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
  • অনেক সময় কোক, পেপসির বোতল ফ্রিজে রেখে দিলেও ঠাণ্ডা হতে সময় নেয়। এক টুকরো ভেজা তোয়ালে দিয়ে বোতলটি পেঁচিয়ে রাখুন। দেখবেন কিছুক্ষণের মধ্যে কোকের বোতল ঠান্ডা হয়ে গেছে।
  • ছিঁড়ে যাওয়া ব্যাগের বেল্ট আপাতত আটকাতে সেফটিপিন ব্যাবহার করুন।
  • গরম পানি শরীরের বিপাক ক্রিয়া খুব ভালোভাবে সম্পন্ন করে। যার ফলে বাড়তি মেদ কমবে। তবে আরো বেশি কাজ দিবে যদি সকালে খালি পেটে গরম পানির সাথে লেবু মিশ্রিত করে পান করেন। এটা বডি ফ্যাট ভাঙতে সাহায্য করবে।
  • চুল বড় হোক কিংবা ছোট, খুশকি থেকে বাঁচতে চাইলে তা কখনোই ভেজা অবস্থায় আঁচড়ানো যাবে না।
  • টুথ পেস্ট আর লবণ মিশিয়ে নাকে লাগিয়ে রাখুন ১০ মিনিট। তারপর ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন নাকে কোন ব্ল্যাকহেডস এবং হোয়াইটহেডস নেই।
  • যদি মুখে কালো দাগ হয়ে যায় তাহলে শশা, পেঁপে আর টমেটোর রস সম পরিমাণে মিশিয়ে মুখে লাগান৷ এই লেপটা যখন শুকিয়ে যাবে তখন দ্বিতীয় বার আবার এই লেপটা লাগান৷ এইভাবে তিন-চার বার এই লেপটা লাগান৷ ২০মিনিট লেপটা লাগিয়ে রাখার পরে মুখটা ভালো করে উষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে নিন৷
  • মধু ও দুধ একসঙ্গে মিলিয়ে ব্যবহারে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে।
  • রোদে পোড়া দাগ দূর করতেচিনি ও লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে ত্বকে ম্যাসেজ করা যেতে পারে। একটি লেবুর অর্ধেকটা রস করে গোসলের পানিতে বা বাথটবে মিশিয়ে নিলে তা ত্বক ও হাত সুন্দর নরম করবে৷ হাতের নখে হলুদ দাগ থাকলে তার ওপর তাজা লেবুর রস কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখলে, সেই দাগও একেবারে উঠে যাবে এবং নখও শক্ত হবে।
  • কয়েক ফোটা বাদাম বা নারকেল তেল হাতে নিয়ে আস্তে আস্তে চুলের আগায় লাগিয়ে নিন৷ এতে চুলের আগা ফাটা বন্ধ হয়ে চুলকে করবে মসৃণ, সুন্দর৷
  • তক সুস্থ রাখতে রাতে শোবার আগে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে  নিবেন। মুখে মেকাপ থাকলে ভালোভাবে তুলে ফেলতে হবে।
  • শুষ্ক তকের জন্য ৩ ৪ চামচ গরম দুধের মধ্যে ১ চামচ মধু আর লেবুর রস মিশিয়ে ভাল করে ফেটিয়ে নিন। এই প্যাকটা ময়শ্চারাইজারের কাজ করবে৷ এই প্যাকটা ব্যবহার করলে ত্বকের উজ্বলতা বাড়বে।
  • আমলকীর তৈরি তেল চুলের জন্য অনেক বেশি উপকারী। এটি নিয়মিত ব্যবহারের ফলে চুল পরা কমে, চুলের বাদামী ভাব দূর হয়, চুল দ্রুত বড় হয়, খুশকি মুক্ত থাকে, চুল ঘন হয়।

কেন মেক-আপ থেকে দূরে থাকবেন?

১. ত্বক
সৌন্দর্যকে ঠিকঠাক রাখার এই প্রসাধনীগুলোর ব্যবহার আপনার ত্বককে কিছুটা সময়ের জন্যে ভালো দেখায় বটে, কিন্তু এর কিছু স্থায়ী নেতিবাচক প্রভাবও রয়েছে। আর সেটাও কিন্তু ভবিষ্যতে ভুগতে হবে আপনাকেই। প্রসাধনীগুলো তৈরিতে ব্যবহৃত নানা রকমের রাসায়নিক পদার্থ খুব সহজেই আপনার ত্বকের সজীবতা আর ত্বকের কোষগুলোর নষ্ট হয়ে যাওয়াকে ত্বরান্বিত করে। আর তাই সৌন্দর্যবৃদ্ধির এই উপকরণগুলো থেকে দূরে থাকলে আপনার ত্বকই ধন্যবাদ জানাবে আপনাকে প্রথমে।

২. সময়
এক গবেষনায় পাওয়া যায় যে সারা বিশ্বে নারীরা কেবল মেক-আপ করার জন্যেই ৪৭৪ দিন ব্যয় করে থাকেন। অদ্ভূত হলেও শুনতে সত্যি এই তথ্যটি বারবার সবাইকে যেন ছোটবেলায় পড়া সময়ের মূল্য রচনাটির কথাই মনে করিয়ে দেয়। সত্যিই তো! প্রতিদিন ঠিক কতটা সময় প্রসাধনীর পেছনে খরচ করছেন আপনি সেটা কি হিসেবে রাখছেন? সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে, সারাদিন নানা কাজের ফাঁকে বেশ কয়েকবার, রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগেতো রয়েছেই, এছাড়াও আছে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের উপলক্ষ্য। আর তাই প্রসাধনীর ব্যবহার বন্ধ করলে আপনার ত্বকই নয়, এতগুলো সময়ও বেঁচে যায়।

৩. মানসিক সুস্থতা
কেন আপনি প্রসাধনী ব্যবহার করেন? চেহারার অসামঞ্জস্যতা ঢাকবার জন্যেই তো? ভাবুন তো, কয়দিন এমন হয়েছে যে আপনি মেক-আপ করে আপনার সূক্ষ ত্রুটিগুলোকে ঢেকে দিয়ে সবার সামনে হাসিমুখে কথা বলেছেন আর আপনার মাথায় সবসময়ই এই ভয়টা কাজ করেনি যে- মেক-আপটা ঠিকঠাক আছে তো? মুখের দাগটা সবার চোখে পড়ে যায়নি তো? ভেবে দেখুন। কখনোই হয়নি। আর এই সারাটাক্ষণের অস্বাভাবিক মানসিক অস্থিরতা আপনার মানসিক সুস্থতার পথেও বাঁধা হয়ে দাড়ায়। খোলা মনে কোন কিছু করা, বিশেষ করে বৃষ্টিতে বন্ধুদের সাথে হঠাত্ করে ভিজতে যাওয়া আপনার পক্ষে কখনোই সম্ভবপর হয়না। তাই মেক-আপ করা ছেড়ে দিন। নিজের মানসিক সুস্থতাকে নিশ্চিত করুন।

৪. ভালোবাসা
অনেকেই বলে থাকেন যে – মেক-আপ করলে নিজেকে আরো সুন্দর বলে মনে হয়। অনেকের ভালোবাসা পাওয়া যায়। কথাটা কিন্তু একদমই ভুল। আপনার মেক-আপ করা মুখকে তারা কখনোই প্রাধান্য দেবে না যারা আপনাকে সত্যিকারের ভালোবাসে। আর যারা প্রাধান্য দেবে তারা কখনোই আপনাকে ভালোবাসেনি। বরং আপনার ত্রুটিগুলোকে যে বা যারা ভালোবাসবে তারাই আপনার প্রকৃত কাছের মানুষ। মেক-আপ করে তাই অযথাই জীবনের পথে কিছু আগাছাকে তুলে আনবেন না।

৫. দৃঢ়তা
প্রসাধনীর ব্যবহার আপনাকে ক্রমশ নিজে ওপরে থাকা আত্ববিশ্বাস আর দৃঢ়তাকে সরিয়ে ফেলে সেখানে এক ধরনের অসহায় ভাবকে ফুটিয়ে তোলে। কারন আপনি জানেন যে আপনার সমস্ত চেহারার অনেকটাই কিছু পণ্যের ওপর নির্ভরশীল। আপনার মনে তখন এক ধরনের অনুভূতি কাজ করতে শুরু করে যে প্রসাধনীগুলো ছাড়া আপনি আসলে কিছুই নন। কিন্তু আসলেই তাই কি? ঝেড়ে ফেলুন নিজের জীব্ন থেকে মেক-আপ শব্দটাকে আর নিজের যা আছে সেটার ওপরেই বিশ্বাস গড়ে তুলুন।

৬. টাকা
এ কথাটা না বললেই নয় যে বিশ্বের প্রতিটি নারী-পুরুষই কোটি কোটি ডলার খরচ করেন কেবল প্রসাধনীর জন্যে। আপনি নিজেরও কি সেখানে খুব একটা কম অবদান রয়েছে? যে টাকাগুলো আপনি প্রসাধনীর পেছনে খরচ করছেন সেগুলো দিয়ে মৌসুমী ফল কিনে খান। এতে আপনার ত্বক এমনিতেই ভালো থাকবে। প্রচুর পানি খান। আর কিছু না হলে জমিয়ে রাখুন টাকাগুলো। কিছুদিন পরে নিজেকে কোন উপহার দিন।

চুলের সমস্যা দূর করতে টক দইয়ের হেয়ার প্যাক

চুলের যত্নে নানা রকম হেয়ার প্যাক ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে মেহেদি প্যাক অন্যতম। এটি চুল পড়া রোধ করে প্রাকৃতিকভাবে চুল কালার করে থাকে। আরও একটি উপাদান আছে যা চুল নরম-কোমল করে, খুশকি রোধ করে চুলকে মজবুত করে তোলে। তা হল টক দই। অনেকেই জানেন চুলের খুশকি দূর করার জন্য টক দই বেশ কার্যকর। শুধু খুশকি দূর করা নয় চুলের আরও অনেক সমস্যা সমাধান করে দিতে পারে টক দই-এর হেয়ার প্যাক।
চুলের সমস্যা দূর করতে টক দইয়ের হেয়ার প্যাক-

১। চুল নরম কোমল করতে
টক দই, নারকেল তেল এবং অ্যালোভেরা জেল ভাল করে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। এই প্যাকটি চুলে ব্যবহার করুন। ১৫ মিনিট পর শ্যাম্পু করে ফেলুন। প্রাণহীন, নির্জীব, রুক্ষ চুলকে নরম, কোমল, এবং ময়োশ্চারাইজ করে তুলবে এই প্যাকটি। নিয়মিত ব্যবহারে এই প্যাকটি চুলের রুক্ষতা দ্রুত দূর করে দেবে।

২। চুল পড়া রোধ
১/৪ কাপ মেথি গুঁড়োর তার সাথে ১ কাপ টক দই মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। মাথার তালুসহ সম্পূর্ণ চুলে এই প্যাকটি ব্যবহার করুন। ২ ঘন্টা রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন। এটি সপ্তাহে এক বার ব্যবহার করুন। এই প্যাকটি চুল পড়া রোধ করতে সাহায্য করে।

৩। রুক্ষতা দূর করতে
টকদই, বাদাম তেল এবং একটি ডিম ভাল করে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। এই প্যাকটি চুলের গোড়া থেকে সম্পূর্ণ চুলে ভাল করে লাগিয়ে রাখুন। ৩০ মিনিট পর চুল শ্যাম্পু করে ফেলুন। ডিমের পুষ্টি এবং তেলে চুলের রুক্ষতা দূর করে দিয়ে চুল স্লিকি করে তোলে।

৪। খুশকি দূর করতে
মাথার তালুর রুক্ষতা, খুশকি দূর করতে এই প্যাকটি বেশ কার্যকর। তিন টেবিল চামচ অলিভ অয়েল টক দইয়ের সাথে ভাল করে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। এটি মাথার তালুতে ১০ মিনিট চক্রাকারে ম্যাসাজ করে লাগান। ৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি সপ্তাহে দুই বার ব্যবহার করুন।

যেভাবে ঘরোয়া ৩টি উপায়ে ত্বকের দাগ দূর করবেন

১) টমেটো ও বেসনের মাস্ক

বেসন ত্বকের দাগ দূর করতে অনেক আগে থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই ত্বকের নানা ধরণের দাগ দূর করতে এর জুড়ি নেই।
 – ২ টেবিল চামচ বেসনের সাথে প্রয়োজন মতো টমেটো রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন।
– এরপর এই পেস্টটি মুখ, ঘাড় ও গলায় ভালো করে লাগিয়ে নিন।
– ১৫ মিনিট পর পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।
– সপ্তাহে ২ বার ব্যবহার করবেন এই মাস্কটি।

২) শসা ও লেবুর রসের মাস্ক

লেবুর রসের ব্লিচিং এজেন্ট ত্বকের দাগ ফিকে হয়ে আসতে সহায়তা করে এবং শসা প্রাকৃতিক ময়েসচারাইজার হিসেবে ত্বকের যত্ন নেয়।
– ৩ টেবিল চামচ শসা ও ৩ টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে মিশ্রন তৈরি করে নিন।
– এই মিশ্রণটি মুখ, ঘাড় ও গলায় লাগিয়ে রাখুন ১৫ মিনিট।
– এরপর সাধারণ পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। এই মাস্কটি প্রতিদিনই ব্যবহার করতে পারবেন।

৩) দুধ, মধু ও লেবুর রসের মাস্ক

প্রাচীনকাল থেকেই দুধ ও মধু রূপচর্চায় ব্যবহার হয়ে আসছে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিহীন উপাদান বলে এর কদর রয়েছে বেশ।
– ১ টেবিল চামচ দুধ, ১ টেবিল চামচ মধু ও ১ টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিন ভালো করে।
– এরপর মুখ, ঘাড় ও গলায় লাগিয়ে রাখুন মাত্র ১০ মিনিট।
– পানি দিয়ে ধুয়ে নিন ভালো করে এবং তোয়ালে আলতো চেপে মুখ শুকিয়ে ফেলুন।
– সপ্তাহে ২-৩ দিন ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন।

ত্বকের যত্নে চন্দনের ৫ টি অসাধারণ ব্যবহার

# বলি রেখা দূর করে
চন্দন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান সমূহের সমন্বয়ে গঠিত যা আপনার মুখের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। এর বিরোধী প্রদাহজনক এজেন্ট আছে, যা বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে। চন্দন একটি চমৎকার anti-aging উৎস হিসেবে পরিচিত।

# রোদে পোড়া দাগ দূর করে
রোদে পোড়া ভাব দূর করতে চন্দন বেশ উপকারী। শসার রস, চন্দনের গুঁড়ো, দই ও গোলাপ জল একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে রোদে পোড়া ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। ২০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ত্বক ধুয়ে ফেলুন। এই ফেস প্যাক রোদে পোড়া ভাব কমাবে এবং রোদের পোড়ার কারণে ত্বক জ্বলা কমাবে।

# ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে চন্দনের জুড়ি নেই। মসৃণ ও উজ্জ্বল ত্বকের জন্য হলুদ বাটা ও চন্দনের গুঁড়ো মিশিয়ে লাগান। ২০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের রঙ উজ্জ্বল হবে।

# ডার্ক সার্কেল দূর করে
আপনার যদি ডার্ক সার্কেল থাকে তাহলে অল্প পরিমাণ চন্দনের গুড়ার সঙ্গে গোলাপ জল মিশিয়ে চোখের চারপাশে লাগান। সারারাত রেখে সকালে ধুয়ে ফেলুন। এক সপ্তাহের মধ্যে চোখের চারপাশের কালো দাগ দূর হোয়ে যাবে।

# মুখের দাগ দূর করে
ডিমের কুসুম, মধু ও চন্দন গুঁড়া একসঙ্গে মিক্সড করে লাগালে মুখের দাগ দূর হয়। প্রতিদিন দুই চা চামচ চন্দনের গুঁড়ো ও গোলাপ জল মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন। এবার এই প্যাক মুখে লাগিয়ে নিয়ে ১৫ মিনিট রাখুন। এভাবে প্রতিদিন রাখলে মুখের দাগ দূর হবে ও ত্বক উজ্জ্বল হবে।

# উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায়
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে ১চা চামচ সাদা চন্দন কাঠের পেস্ট নিয়ে, আধা কাপ দুধের সাথে ভালভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। আবার এই চন্দনযুক্ত দুধ খালিপেটে পান করুন। এরপর ৭-৮টি তুলসী পাতা চিবিয়ে নিন। কিছু সময়ের মধ্যেই রক্তচাপ কমে আসবে। ব্রঙ্কাইটিস রোগের ক্ষেত্রেও এই পদ্ধতিটি অবলম্বন করলে উপকার পায়া যাবে

ফর্সা ও কোমল ত্বকের জন্য কাঁচা দুধের অসাধারণ ফেসপ্যাক

(১) কাঁচা দুধ, বেসন ও মুলতানি মাটির প্যাক

এই প্যাকটি তৈলাক্ত ত্বকের জন্য দারূণ কাজ করে। কাঁচা দুধের ল্যাকটিক এসিড প্রাকৃতিক ব্লিচের কাজ করে ত্বকের রঙ হালকা করে। বেসন ও মুলতানি মাটি ত্বকের তৈলাক্ততা দূর করে এবং সেই সাথে ত্বককে গভীর থেকে পরিস্কার করে।
একটা পাত্রে ১ চা চামচ বেসন, ১ চা চামচ মুলতানি মাটি ও ২ টেবিল চামচ কাঁচা দুধ ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। এটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। এবার হাতে অল্প পানি নিয়ে মুখে লাগিয়ে আলতো হাতে ম্যাসাজ করতে হবে। এতে করে মুখের ত্বকের গভীর থেকে ময়লা উঠে আসবে। এবার মুখ ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।

(২) কাঁচা দুধ ও কলার প্যাক

এই প্যাকটির জন্য লাগবে অর্ধেক পাঁকা কলা ও পরিমাণ মত (প্রায় ২ চা চামচ) কাঁচা দুধ। কলা খুব ভালো করে ম্যাশ করে নিতে হবে। এর সাথে অল্প অল্প করে কাঁচা দুধ মিশিয়ে একটি থকথকে মিশ্রণ বানাতে হবে। এই প্যাকটি মুখে লাগিয়ে রাখতে হবে ২০ মিনিট। তারপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই প্যাকটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির সাথে সাথে ত্বককে ময়শ্চারাইজও করবে। এজন্য এটি ধোয়ার পর আলাদা করে ময়শ্চারাইজার লাগানোর কোন দরকার নেই।

(৩) কাঁচা দুধ, পেঁপে ও মধুর প্যাক

এই প্যাকটি মূলত বয়স্ক ত্বকের জন্য। যাদের ত্বকে হালকা রিংকেল পড়ে গেছে তারা এই প্যাকটি থেকে অনেক উপকার পাবেন। দুই টুকরা পাঁকা পেঁপে খুব ভালো করে ম্যাশ করে নিতে হবে। এর সাথে মিশাতে হবে দুই চা চামচ কাঁচা দুধ ও ১ চা চামচ মধু। এটি মুখে লাগিয়ে রাখতে হবে ১৫ মিনিট। এরপর ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে।

(৪) কাঁচা দুধ, মধু ও লেবুর রসের প্যাক

কাঁচা দুধ মধু ও লেবুর রসের সাথে মিশালে এটি প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবে কাজ করে যা কেমিকেল ব্লিচের মত কোন ধরণের ক্ষতি ছাড়াই ত্বকের রঙ হালকা করে। দুই চা চামচ কাঁচা দুধের সাথে এক চা চামচ মধু ও এক চা চামচ লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে রেখে দিতে হবে ১৫ থেকে ২০ মিনিট। এরপর পানি দিয়ে ভাল করে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা দেখে আপনি নিজেই অবাক হয়ে যাবেন।

(৫) শুধুই কাঁচা দুধ

আর এত কিছু যদি আপনার জন্য কষ্টকর মনে হয় তবে আপনার জন্য অতি সহজ একটা রূপচর্চার উপায় বলে দিচ্ছি। শুধু কাঁচা দুধ হাতে নিয়ে মুখে লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। এরপর ধুয়ে ফেলুন। আপনি যদি প্রত্যেকদিন এই শুধু কাজটিও করতে পারেন, তাহলেও আপনার ত্বক আস্তে আস্তে অনেক উজ্জ্বল হয়ে যাবে।

তৈলাক্ত ত্বকের জন্য কার্যকরী ৫টি ফেসপ্যাক

১। বেসন এবং হলুদের ফেসপ্যাক

দুই টেবিল চামচ বেসন, আধা চা চামচ হলুদের গুঁড়ো এবং কিছু পরিমাণ লেবুর রস একসাথে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। এই প্যাকটি ত্বকে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে ম্যাসাজ করে মুখ পরিষ্কার করে নিন। বেসন এবং হলুদ ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করবে।

২। মুলতানি মাটির ফেইস প্যাক

মুলতানি মাটি, গোলাপ জল এবং অল্প একটু লেবুর রস একসাথে মেশান। এবার এটি মুখে লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। মুলতানি মাটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল শুষে নেয়। গোলাপ জল ত্বক ময়শ্চারাইজ করে এবং লেবুর রস প্রাকৃতিক ব্লিচিং হিসেবে কাজ করে থাকে।

৩। টমেটো এবং লেবুর রস

দুই টেবিল চামচ টমেটো রস এবং লেবুর রস মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। এটি মুখে ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। ২০ মিনিট পর পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাক স্কিন টোন ধরে রেখে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।

৪। নিম ফেইস প্যাক

চারটি নিম পাতা কুচি করে সিদ্ধ করে বেটে নিন। এরপর এর সাথে এক চা চামচ গোলাপ জল বা লেবুর রস মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। আপনার ত্বকে এই প্যাকটি ভাল করে লাগান। ১৫ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে কসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। ব্রণ দূর করতে নিম অনেক কার্যকরী। এর অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান ব্রণ দূর করে ত্বক পরিষ্কার করে থাকে।

৫। কমলার খোসার ফেসপ্যাক

কমলার খোসা শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিন। এরসাথে পানি অথবা টকদই মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। কমলার এই প্যাকটি মুখ এবং ঘাড়ে ব্যবহার করুন। শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। কমলার এই প্যাকটি ত্বকের অভ্যন্তরীণ ময়লা পরিষ্কার করে। এছাড়া এটি ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল দূর করে দেয়।

ত্বকের দাগ দূর করতে পরামর্শ

১. দাগের ওপর ক্যালামিন লোশন লাগান। এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে নেয় এবং দাগ দূর করতে সাহায্য করে।

২. পাতলা কাপড় বা ছোট তোয়ালেতে একটি বরফ টুকরা নিয়ে দাগের ওপর পাঁচ মিনিট ধরে রাখুন। এটি ধীরে ধীরে ত্বকের দাগ ও অন্যান্য জ্বালাপোড়া দূর করতে সাহায্য করবে।

৩. বাইরে বের হওয়ার আগে ভালো মানের সানস্ক্রিন (এসপিএফ ১৫+) লাগিয়ে বের হবেন। সূর্যের তাপ আপনার দাগের জন্য খুবই ক্ষতিকর।

৪. রান্নায় বা খাবার মেন্যুতে আদা ও রসুন রাখার চেষ্টা করুন। প্রচুর পরিমাণে আঁশযুক্ত ফল ও সবজি খান। নিয়মিত ৬-১০ গ্লাস পানি পান করুন।

৫. প্রতিদিন বালিশের কাভার বদলে নিন। কারণ, এটি দ্রুত ময়লা ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত হতে পারে।

৬. লেবুর রস ত্বকে ব্লিচের কাজ করে। এ ছাড়া ঘুমানোর আগে দাগের ওপর ভিটামিন ই কিংবা ক্যাস্টর অয়েল লাগিয়ে রাখতে পারেন।

৭. এক ফোঁটা অ্যাপল সিডার ভিনেগার ও আট ফোঁটা পানি দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে প্রতিদিন একবার বা দুবার মুখ ধুয়ে নিন।

৮. রসুনের একটি কোয়া নিয়ে পেস্ট করে তাতে এক টেবিল চামচ ময়েশ্চারাইজার মিশিয়ে দাগের ওপর লাগিয়ে রাখুন।

৯. ক্যামোমিল, লেবুর রস ও পানি একসঙ্গে সেদ্ধ করে নিন। এই মিশ্রণ ত্বকে ব্রণ বা অন্য সমস্যা থেকে সৃষ্টি হওয়া দাগ দূর করতে সবচেয়ে কার্যকর।

১০. সামান্য পরিমাণে ভিনেগার এবং তিনটি আলু (থেঁতলে নেওয়া) একসঙ্গে মেশান। সারা রাত দাগের ওপর দিয়ে রাখুন।

১১. তিনটি গাজর থেঁতলে মুখে ১৫-২০ মিনিটের জন্য লাগিয়ে রাখুন। তার পর দুধ দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

১২. সবুজ, অর্থাৎ কাঁচা পেঁপে থেঁতলে ১৫ মিনিটের জন্য মুখে লাগিয়ে রাখতে পারেন।

১৩. সামান্য পরিমাণ মধু, লেবুর রস ও এক চিমটি হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে নিয়মিত ত্বকে লাগান। এই মিশ্রণ ত্বকের জন্য বেশ উপকারী।

১৪. চন্দন গুঁড়ার সঙ্গে অল্প পানি মিশিয়ে ত্বকে লাগান। চন্দন গুঁড়া ত্বককে পরিষ্কার, উজ্জ্বল, ব্রণ, দাগমুক্ত রাখতে সাহায্য করে।

১৫. তিনটি স্ট্রবেরি একটি পাত্রে নিয়ে থেঁতলে নিন। ভিনেগার দিয়ে পেস্ট করে নিন। ত্বকের যেখানে দাগ আছে, সেখানে লাগিয়ে সারা রাত রেখে দিন। বালিশের ওপর একটি তোয়ালে দিয়ে শুয়ে পড়ুন। সকালে উঠে ভালো করে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

ত্বকের ধরন ভেদে শীতকাল উপযোগী ঘরোয়া স্ক্রাব

(১) ফেস স্ক্রাব 

ফেস স্ক্রাব টি আপনি ব্যবহার করবেন শুধুমাত্র মুখেই। কারন, মুখের ত্বক অনেক পাতলা হয়। তাই, সেটি খেয়াল রেখেই সবসময়  স্ক্রাব ব্যবহার করতে হবে।
  • চালের গুঁড়ো
  • অ্যালোভেরা জেল
  •  মধু
যেভাবে তৈরি করবেন – 
চালের গুঁড়ো এর সাথে মধু এবং এলোভেরা জেল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। বেশী ঘন হয়ে গেলে একটু পানি মিশিয়ে নিন এবং ব্যবহার করুন।

(২) হাত-পায়ের জন্যে স্ক্রাব

  • দারুচিনি
  • মধু
  • লেবুর রস
  • অলিভ অয়েল
যেভাবে তৈরি করবেন-
দারুচিনি গুঁড়ো  করে নিন। দানা-দানা ভাব যেন থাকে। এবার দারুচিনির সাথে বাকি উপকরণ মিশিয়ে নিন।   হাত এবং পায়ে ভালো করে লাগিয়ে নিন।

(৩) বডি স্ক্রাব

  • চিনি
  • আমন্ড বাদাম
  • গুঁড়ো দুধ
  • টমেটোর রস

যেভাবে তৈরি করবেন – 
আমন্ড বাদাম গুড়ো করে নিন। এবার বাকি সব উপকরণ এক সাথে মিশিয়ে নিন।

(৪) লিপ স্ক্রাব 

  • চিনি
  • অলিভ অয়েল
  • ভ্যানিলা ফ্লেভার
যেভাবে তৈরি করবেন-
সব উপকরণ একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে ঠোঁটে ব্যবহার করুন।

(৫) নখের জন্যে স্ক্রাব 

শুনতে একটু অদ্ভুত লাগলেও, নখেও স্ক্রাবিং এর প্রয়োজন রয়েছে। নখ এবং নখের আশেপাশের মড়া চামড়া দূর করে নখকে শক্ত করে তুলতে স্ক্রাবিং জরুরী।
  • অলিভ অয়েল
  • লেবুর রস
  • ছোট ব্রাশ
যেভাবে তৈরি করবেন –
অলিভ অয়েল এবং লেবুর রস ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। একটি কটন বলের সাহায্যে নখে মিশ্রন টি কিছুহ্মন লাগিয়ে রাখুন। এবার ছোট ব্রাশের সাহায্যে নখ এবং নখের চারদিক ঘষে নিন এবং ধুয়ে ফেলুন।

(৬) হাত ও পায়ের তালুর জন্যে স্ক্রাব 

হাত ও পায়ের তালুও শীতের রুক্ষতা থেকে রেহাই পায় না। যার ফলাফল হাত ও পায়ের তালু শক্ত হয়ে যাওয়া, চামড়া ওঠা, ফেটে যাওয়া। এজন্য এই সব স্থানেও স্ক্রাবিং প্রয়োজন।
  • চিনি
  • অলিভ অয়েল
যেভাবে তৈরি করবেন –
চিনি এবং অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি হাত-পায়ের তালুতে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করুন ৫ মিনিট।

সৌন্দর্য চর্চায় অ্যালোভেরার বহুরূপী ব্যবহার

কী কী করতে পারে এই অ্যালোভেরা-

একনে বা পিম্পল দূর করে
পায়ের গোড়ালি ফাঁটা কমায়
সান বার্ন দূর করে
ত্বকে বলিরেখা রোধ করে
ত্বকের যৌবন ধরে রাখে
ত্বককে সজীব রাখে
চুলের বৃদ্ধি ঘটায়
মেকআপ উঠাতে প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

আসুন জেনে নিই অ্যালোভেরার কিছু সহজ ব্যবহার-
শুষ্ক ত্বকের যত্নের কসমেটিক্স এ অ্যালোভেরা থাকে কারণ এটি ত্বককে সজীব করে যা আপনিও বাসায় করতে পারেন। ছুরি দিয়ে অ্যালোভেরার ভিতরের জেল বের করে মুখের ত্বকে লাগালে ত্বক মসৃণ , উজ্জ্বল আর নরম হবে।

বয়সের বাড়ার সাথে আমাদের চামড়ায় ভাজ পড়ে যা আপনি সহজেই রুখতে পারেন এই অ্যালোভেরা ব্যবহার করে কারণ এটি এন্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান সমৃদ্ধ। এই জেল ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে এবং এর ভিটামিন এ,বি,সি ও এ উপাদান ত্বকের পুস্টি যোগায়।

রোদে পোড়া দাগ দূর করে ত্বকের আদ্রতা ঠিক রাখতে এটি ব্যবহার করা হয়। ২ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল আর অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে এই মাস্ক সান বার্ন হয়ে যাওয়া ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

অ্যালোভেরা দিয়ে ত্বকের মৃত কোষ দূর করার মাস্ক তৈরি করার জন্য আপনার লাগবে ১ চা চামচ ফ্রেশ অ্যালোভেরা জেল যা ব্লেন্ড করে নিন। এরপর এক চা চামচ ওটমিলের গুড়া আর ১/২ চা চামচ অলিভ ওয়েল মিশিয়ে মাস্কটি মুখে আর গলায় লাগিয়ে ৩০ মিনিট রাখবেন। এরপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলুন । সপ্তাহে ১ বার এটি ব্যবহার করুন।

অ্যালোভেরার প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান একনে সারাতে আর নুতন কোষ জন্মাতে কার্যকর। অ্যালোভেরার জেল আইস কিউব ট্রেতে করে এলোভেরার আইস কিউব তৈরি করে এই কিউব দিনে দু তিনবার আপনার একনেতে ঘষলে একনের সমস্যা কমে যাবে।

ত্বকের পাশাপাশি চুলের জন্য অ্যালোভেরা অনেক দরকারি । অ্যালোভেরার ব্যবহারে মাথার ত্বকের পি এইচ ঠিক থাকে আর খুসকিও দূর হয় । ২ঃ ১ অনুপাতে এলেভেরা জেল আর ক্যাস্টর ওয়েল মিশিয়ে মাথার ত্বকে লাগিয়ে সারারাত রেখে সকালে শ্যাম্পু করতে হবে। চুল খুসকিমুক্ত থাকবে।

ঠোঁট এর রঙ উজ্জ্বল রাখতে ঠোঁট নরম আর মসৃন করতে অ্যালোভেরা ব্যবহার করা যায়। নিয়মিত অ্যালোভেরা জেল ঠোঁটে লাগলেই ঠোঁট উজ্জ্বল হবে। এক টেবিল চামচ চালের গুড়া, আর অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে আস্তে আস্তে এই মিশ্রণ ঠোঁটে লাগিয়ে ৫ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে । দেখুন ঠোঁট কত উজ্জ্বল, মসৃণ আর নরম।

অ্যালোভেরার এন্টিসেপটিক গুনাগুনও উল্লেখযোগ্য । অ্যালোভেরার পাতার জেল বের ফ্রিজে রাখুন আর অল্প কেটে গেলে বা ক্ষত হলে লাগান । দিনে দুই বা তিন বার লাগালেই ক্ষত আরাম হবে।
অতি অল্প খরচে বাজারে এই অ্যালোভেরা পাওয়া যায়। আপনার রূপচর্চার এই ঘরোয়া উপাদান টি আপনাকে সতেজ, সুন্দর আর উজ্জীবিত রাখবে।

ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দেবে যে খাবারগুলো

গাজর

গাজরে আছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন-সি ও ক্যারোটিন এবং গাজর হল সবজির মধ্যে সেরা সবজি যার স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক বেশি ও এটি আমাদের ত্বক ও চুলের জন্য খুবই ভালো। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে গাজর কিংবা গাজরের জুস খাদ্য তালিকায় রাখুন।

পেঁপে

দারুন মজার সুস্বাদু ফল পেঁপে খেতে কে না ভালবাসে। পেঁপেতে আছে ভিটামিন-সি, এ, ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের ত্বক পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে ও ত্বককে ব্রন ও ব্লেমিসেস থেকে রক্ষা করে। পেঁপে আপনি খেতেও পারেন অথবা পেস্ট করে ত্বকে লাগাতে পারেন।

টম্যাটো

লাল রঙের তাজা এই জুসি সবজিটিতে আছে লাইকোফেন। ত্বকের জন্য টম্যাটো খুবই ভালো, তাছাড়া টম্যাটো দেহের ওজন কমায় এবং ক্যানসার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

সবুজ পাতার শাকসবজি

সবুজ শাকসবজিতে আছে প্রচুর ভিটামিন যা শুধু ত্বকের জন্যই নয় পুরো দেহের জন্য অনেক ভালো। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন সবজি।

স্ট্রবেরি

স্ট্রবেরিতে আছে ভিটামিন সি যা ত্বককে সুরক্ষা দান করে ও উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।

গ্রিন টি

গ্রিন টি হল একটি হারবাল পানীয় যা ত্বকের জন্য অনেক ভালো। এটি ত্বকের পোড়া দাগ দূর করে, ত্বক নরম রাখে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে, ত্বকের গভীর কাল দাগ দূর করে ও ব্লেমিসেস দূর করে।

ব্রকলি

ব্রকলির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন এ ও সি প্রাকৃতিক ভাবেই ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে।

মাছ

মাছের গুরুত্বপূর্ণ উপদান ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড ও বিভিন্ন ভিটামিন ত্বকের জন্য খুবই ভালো। তাই উজ্জ্বল ত্বক পেতে বেশি করে মাছ খাওয়া উচিত।