পায়ের যত্নে ঘরোয়া ফুট স্ক্রাব ও মাস্ক

পা নরম কোমল করতে স্ক্রাবঃ
যা যা লাগবে-
-ব্রাউন সুগার ২ টেবিল চামচ
-লেবুর রস ১ টেবিল চামচ
-মধু ১ টেবিল চামচ
-অলিভ অয়েল ১ টেবিল চামচ

রেসিপি-
একটি বাটিতে সব উপাদান একসাথে নিয়ে ভালোভাবে মেশাতে থাকুন যতক্ষণ না এটি নরম পেস্ট আকার ধারণ করে। এবার আপনার পা দুটি একটি বড় গামলায় গরম পানি নিয়ে সেই পানিতে ১০ থেকে ২০ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। এতে করে আপনার পায়ের আলগা ময়লা স্তর নরম হয়ে যাবে, বাটি থেকে পেস্ট নিয়ে আপনার পায়ে লাগান এবং আলতো হাতে ঘষতে থাকুন। একই উপায়ে অপর পায়েও এই স্ক্রাব লাগান। কিছু সময় এভাবে পায়ে এই স্ক্রাব ম্যাসাজ করে পা ধুয়ে ফেলুন।
এটি আপনার পায়ের ডেডসেল ও শক্ত ভাব দূর করে পা নারিশ আর সফট করে।

কলা ফুট মাস্কঃ
যা যা লাগবে-
-পাকা কলা
-হালকা গরম পানি(প্রয়োজন মতো)

রেসিপি-
পাকা কলা চটকে আপনার পায়ের গোড়ালিতে লাগান। এটি লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন এবং এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে আপনার পা ধুয়ে ফেলুন।
এই মাস্কের বিশেষত্ব হচ্ছে যাদের পায়ের গোড়ালি ফাটা বা খসখসে তারা এই ফুট মাস্ক ব্যবহার করার ফলে পা ফাটা থেকে মুক্তি পাবেন ও পায়ের গোড়ালি নরম কোমল আর সুন্দর হয়ে উঠবে। কারণ কলা আপনার পায়ের জন্য ভালো ফুট ময়েশ্চারাইজারের কাজ করে।

ফুট ময়েশ্চারাইজার-
যা যা লাগবে-
-পেট্রোলিয়াম জেলি ১ টেবিল চামচ
-লেবুর রস ২ থেকে ৩ ফোঁটা
-গরম পানি
-পায়ের কটন মোজা

রেসিপি-
পেট্রোলিয়াম জেলি ও লেবুস রস দিয়েই আপনি ঘরে বসে আপনার ফুট ময়েশ্চারাইজার বানিয়ে ফেলতে পারেন। এই দুই উপাদান একসাথে নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। তবে পায়ে এটি লাগানোর আগে আপনার পা হালকা গরম পানিতে ১০ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে আপনার পায়ে এই ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে আলতো ম্যাসাজ করে পায়ে মোজা দিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে উঠেই পাবেন সুন্দর কোমল এক জোড়া নজরকাড়া আকর্ষণীয় পা।

ফুট মশ্চারাইজার ক্রিম-
-অলিভ অয়েল ১ টেবিল চামচ
-ল্যাভেন্ডার অয়েল ২ থেকে ৩ ফোঁটা

রেসিপি-
অলিভ অয়েল ও ল্যাভেন্ডার অয়েল একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এরপর এই মিশ্রণ যখন আপনার প্রয়োজন বা ইচ্ছে হয় ব্যবহার করতে পারেন।
শুধু মনে রাখবেন যখনই এই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করবেন ক্রিমটা ভালো ভাবে ঝাঁকিয়ে নেবেন। এটি ব্যবহারে আপনার পায়ের সৌন্দর্য কয়েক গুণ বেড়ে যাবে।

পায়ের যত্নে কিছু হ্যান্ডি টিপসঃ
-পর্যাপ্ত পানি পান করুন সাথে তাজা সবজি ও ফলমূল খান।
-পায়ের নিয়মিত যত্ন করুন, পায়ের নখ বেশি বড় না করাই ভালো।
-শুধু মুখের ত্বকে নয় পায়েও ময়েশ্চারাইজার লাগান।
-পায়ে সব সময় হিলজুতো পড়া থেকে বিরত থাকুন। আবার একেবারে খুব পাতলা সোলের জুতাও পরবেন না।
-গরমকালে বেশি পায়ে ঘাম হয় তাই বাইরে থেকে এসে অবশ্যই পা ধুয়ে ফেলবেন।

ত্বকের বলিরেখা দূর করতে ঘরোয়া ক্রিম

যা যা লাগবে:
১/৪ কাপ বিশুদ্ধ বাদাম তেল
২ টেবিল চামচ নারকেল তেল
২ টেবিল চামচ বিশুদ্ধ মোম
১/২ চা চামচ ভিটামিন ই অয়েল
১ টেবিল চামচ শিয়া বাটার
কয়েক ফোঁটা এসেন্সিয়াল অয়েল (ইচ্ছা)

যেভাবে তৈরি করবেন:
১। একটি পাত্রে সবগুলো উপাদান মিশিয়ে নিন।
২। এবার পাত্রটি ৪ থেকে ৫ ইঞ্চি পর্যন্ত পানি দিয়ে ভরে ফেলুন।
৩। এখন পাত্রটি চুলায় জ্বাল হতে দিন যতক্ষণ পর্যন্ত না সবগুলো উপাদান গলে না যায়, ততক্ষণ জ্বাল দিন।
৪। মাঝে মাঝে এটি নাড়ুন।
৫। সবগুলো উপাদান ভালমত মিশে গেলে এটি চুলা থেকে নামিয়ে ফেলুন।
৬। ক্রিমটি রুম তাপমাত্রায় ঠান্ডা হওয়ার জন্য রাখুন।

যেভাবে ব্যবহার করবেন:
দিনে দুইবার সকাল এবং রাতে ব্যবহার করুন। ব্যবহারের আগে মুখে ধুয়ে নিবেন। ক্রিমটি ঠান্ডা স্থানে সংরক্ষণ করুন।
বাদাম তেল, নারকেল তেল, শিয়া বাটার প্রতিটি উপাদান ত্বকের জন্য উপকারী। বাদাম তেল ত্বক নরম কোমল করে তোলে। নারকেল তেলের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকে বয়সের ছাপ পরা রোধ করে। মোম এবং শিয়া বাটার উভয়ই অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান আছে। যা ত্বকের বলিরেখা পরা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে থাকে।

হাতের সৌন্দর্য বাড়াতে ও সুন্দর নখ পেতে যা করবেন

১/ ধরণ সম্পর্কে জানলে ঠিকমতো নখের যত্ন নেওয়া সম্ভব। এতে করে ক্ষতির সম্ভাবনা কমে যায়। ভঙ্গুর, শুষ্ক, নরম ও সাধারণ নখের জন্য আলাদা ধরণের যত্নের প্রয়োজন রয়েছে।শুষ্ক নখের জন্য দিনে অন্তত ১ বার অলিভ অয়েল ম্যাসাজ করুন। ভঙ্গুর নখে ময়েশ্চারাইজারের অভাব থাকায় দরকার বিশেষ যত্নের। তাই এই ধরনের নখের যত্নে ময়েশ্চারাইজার লোশন ব্যবহার করুন।নরম নখে ক্যালসিয়ামের অভাব এবং ময়েশ্চারাইজার বেশি থাকায় অনেকে নখ রাখতে পারেন না। তাই নরম নখের অধিকারীরা পানি থেকে একটু দুরে থাকবেন। নখে খুব বেশি পানি লাগাবেন না।

২/ যত্রতত্র নখের ব্যবহার ত্যাগ করতে হবে। টিনের কৌটা খোলা, কৌটার গায়ে লেভেল উঠানো, যে কোন স্থানে নখ দিয়ে খোঁচা মারা ইত্যাদি ত্যাগ করতে হবে।

৩/ সাধারণত কিডনি বা থাইরয়েডের সমস্যা, পুষ্টির অভাব, আয়রন কিংবা অন্যান্য খনিজ পদার্থের অভাবে নখের ভঙ্গুরতা বৃদ্ধি পায়। সে বিষয়ে সঠিক চিকিৎসা সেবা নিতে হবে।

৪/ নখ ভালো রাখতে নখে পানির ব্যবহার কমিয়ে দিন।  বাসার দৈনন্দিন কাজে পানির ব্যবহার থেকে দূরে থাকুন। প্রয়োজনে গ্লাবস ব্যবহার করুন।

৫/নখের আদ্রতা বজায় রাখতে ভালো ব্র্যান্ডের কিউটিকল ওয়েল ব্যবহার করতে হবে। রাতে শোবার আগে নখে অলিভ অয়েল লাগালে নখ শক্ত আর উজ্জ্বল হয়।

৬/ গোসলের পর নখে ভ্যাসলিন লাগালে ভেজা নখের সুরক্ষা হবে।

৭/ অতিরিক্ত নেইল পলিস বা রিমুভার ব্যবহার ত্যাগ করতে হবে। এতে নখের ভঙ্গুরতা বৃদ্ধি পায়।

৮/নখের শেপের ক্ষেত্রে চারকোনা শেপ পরিহার করাই ভালো। এতে নখ তাড়াতাড়ি ভাঙ্গে যায়।

৯/ নখ কাটার পর ফাইল করার সময় অনেক সতর্ক থাকবেন। কারণ নখ ফাইলের সামান্য ভুলের কারণে নখ ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এতে করে নখের অনেক ক্ষতিও হয়। সবসময় একই দিকে নখ ফাইল করার চেষ্টা করুন।

 ১০/ অনেকেরই নখ কামড়ানোর মতো বাজে অভ্যাস রয়েছে। এ কাজটি নখের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর। নখ কামড়ালে এর শেপ এবড়োথেবড়ো হয়ে যায়। তখন হাত দেখতে অনেক বিশ্রী লাগে। তাই নখ কামড়ানোর মতো বাজে অভ্যাসটি দূর করুন।

১১/ নিউ ইয়র্ক মেডিক্যাল কলেজের চর্ম বিশেষজ্ঞ ডেন্ডি এঙ্গেলম্যান ওমেনসহেলথম্যাগ ডটকমের এক প্রতিবেদনে নখের শোভা বাড়াতে বেশ কিছু খাবারের নাম দিয়েছেন। এই খাবারগুলো নখ সুস্থ রাখে।এগুল হল-
  • ডিম
  • ব্রকলি
  • সামন মাছ
  • নারিকেল তেল
  • মুরগির মাংস
  • বেশি করে ভিটামিন এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন দুগ্ধজাত খাদ্য, ফল-মূল, শুষ্ক ফল এবং সবুজ শাক-সবজি খেলে শরীরের সাথে সাথে নখও কোমল, মসৃণ এবং উজ্জ্বল থাকবে।

ফেসপ্যাক লাগানোর আগে করণীয় কাজ

১। গোসলের আগে ফেসপ্যাক ব্যবহার
বেশিরভাগ সময় আমরা ফেসপ্যাক গোসলের আগে ব্যবহার করে থাকি। এতে ফেসপ্যাকের কার্যকারিতা কিছুটা কমে যায়। ফেসপ্যাক গোসলের পর লাগালে ভাল ফল পাওয়া সম্ভব। প্রথমে কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখটি ধুয়ে ফেলুন। এতে করে ত্বকের ছিদ্রগুলো খুলে যাবে আর ফেসপ্যাকটি ত্বকের ভিতরে প্রবেশ করতে পারবে। এছাড়া একটি তোয়ালে গরম পানিতে ভিজিয়ে নিয়ে মুখের উপর দিয়ে দিন। এভাবে কয়েক বার করে ৫ মিনিট করুন। এটিও আপনার ত্বকের ছিদ্রগুলো খুলে ফেলে। লক্ষ্য রাখবেন তোয়ালে যেন বেশি গরম না হয়ে যায়।

২। ম্যাসাজ করে ফেসপ্যাক লাগান
ত্বকেও ফেসপ্যাক ম্যাসাজ করে লাগান। আঙুল দিয়ে আস্তে আস্তে ম্যাসাজ করে ফেসপ্যাক লাগান। এতে করে ফেসপ্যাকটি ত্বকের ভিতরে ভালভাবে প্রবেশ করবে। ১০ মিনিট ম্যাসাজ করে তারপর শুকানোর জন্য অপেক্ষা করুন।

৩। ফেসপ্যাক মুখে খুব বেশি শুকাতে দিবেন না
এই কাজটি কম বেশি সবাই করে থাকেন। ফেসপ্যাক খুব শুকানোর না পর্যন্ত পরিষ্কার করেন না। কিন্তু এই কাজটি করা যাবে না। খুব বেশি শুকিয়ে গেলে ফেসপ্যাক আপনার ত্বককে রুক্ষ করে তুলবে। আর এর জন্য ত্বকে বলিরেখাও দেখা দিতে পারে। ফেসপ্যাক খুব বেশি শুকানোর আগে ধুয়ে ফেলুন।

৪। টোনার ব্যবহার করুন
ফেসপ্যাক ধুয়ে ফেলার পর টোনার ব্যবহার করুন। টোনার হিসেবে গোলাপ জল ব্যবহার করতে পারেন। এটি ত্বক উজ্জ্বল করার পাশাপাশি ত্বক ময়েশ্চারাইজ করবে। এছাড়া গ্রিণ টি, মধু, গ্লিসারিন ব্যবহার করতে পারেন।

টিপস:
১। চেষ্টা করবেন সাথে সাথে ফেসপ্যাক তৈরি করে নিতে। বাসি ফেসপ্যাক ব্যবহার করবেন না। এতে ত্বকের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
২। তরল ফেসপ্যাক ব্রাশ দিয়ে লাগান।
৩। হাত দিয়ে ফেসপ্যাক লাগানোর ক্ষেত্রে হাত ভালো করে পরিস্কার করে নিবেন। অনেক সময় হাতের ময়লা ত্বকে প্রবেশ করে ফেসপ্যাকের মাধ্যমে।
৪। সরাসরি পানি দিয়ে মুখ না ধুয়ে একটি তুলা বা তোয়েলা পানিতে ভিজিয়ে ত্বক থেকে ফেসপ্যাক তুলুন। এতে সময় কিছুটা বেশি লাগলেও ত্বকের জন্য অনেক উপকারী হবে।
৫। ফেসপ্যাক ভাল হয় রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ব্যবহার করলে। এতে ত্বক সারারাত বিশ্রামে থাকে এবং ফেসপ্যাক বেশি কার্যকর হয়।

ওজন কমাতে মধু ও লেবুর ব্যবহার

যা লক্ষ্য রাখবেন
—আগে পানি হালকা গরম করে তারপর লেবু ও মধু মেশাবেন। মধু
কখনোই গরম করতে যাবেন না।
—যদি ঠাণ্ডা পানিতে এটি পান করেন, তবে বিপরীত ফল হবে, মানে
আপনার ওজন বাড়বে।

লেবু-মধু পানীয়ের উপকারিতা
— এই পানীয় শরীর থেকে টক্সিন বের করে। শরীরের ভেতরের
নালীগুলোর সব ময়লা বের করে দেয়।
— মেটাবলিজম/হজম শক্তি বাড়ায়, ফলে ওজন কমে। ঠাণ্ডা লাগলে এই
পানীয় কফ বের করতে সাহায্য করে এবং ঠাণ্ডা লাগলে গলাব্যথা
করলেও এটি উপকারী ।
— এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
— শরীরে শক্তি বাড়ায়, অলসতা কমায়।
— কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

মধুর উপকারিতা
মধুতে গ্লুকোজ ও ফ্রুকটোজ আলাদাভাবে থাকে, কিন্তু চিনিতে তা একসঙ্গে থাকে। ফ্রুকটোজ তাড়াতাড়ি গ্লুকোজের মতো শরীরে ক্যালরি হিসেবে জমা হয় না। তাই চিনির মতো মধু সহজে ক্যালরি জমা করে না। ফলে অল্প মধু খেলেও ওজন বাড়ার সম্ভাবনা কম।
মধু শরীরকে রিলাক্স করে, মনকে প্রফুল্ল রাখতে সাহায্য করে এবং সহজে ঘুম আনতে সাহায্য করে।
মধু একটি প্রাকৃতিক এন্টি বায়োটিক, যা শরীরের সব ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে ইনফেকশন দূর করে। ফলে শরীরের কাজ করার প্রণালী উন্নত হয় এবং হেলদি থাকে।
মধু হজমে সহায়ক। তাই বেশি খাবার খাওয়ার পরে অল্প মধু খেতে পারেন।

—মধু ফ্যাট কমায়, ফলে ওজন কমে।
—মধু প্রাকৃতিকভাবেই মিষ্টি। তাই মধু সহজে হজম হয়।
—চোখের জন্য ভালো।
—গলার স্বর সুন্দর করে।
—শরীরের ক্ষত দ্রুত সারায়।
—আলসার সারাতে সাহায্য করে।
—নালীগুলো পরিষ্কার করে।
—ঠাণ্ডা লাগলে জ্বর, গলাব্যথায় ভালো ওষুধ হিসেবে কাজ করে।
—মধু এন্টি অক্সিডেন্ট, যা ত্বকের রং ও ত্বক সুন্দর করে। ত্বকের ভাঁজ
পড়া ও বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করে।
—বুদ্ধিবৃত্তি বাড়ায়।
—শরীরের সামগ্রিক শক্তি বাড়ায় ও তারুণ্য বাড়ায়।

লেবুর উপকারিতা
লেবুতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা এন্টিসেপটিক ও ঠাণ্ডা লাগা প্রতিরোধ করে
—লেবুর এই উপাদানগুলো টনসিল প্রতিরোধ করে
—এছাড়া লেবুর ভিটামিন সি ক্যান্সারের সেল গঠন প্রতিরোধ করে।
—লেবু বুক জ্বালা প্রতিরোধ করতে ও আলসার সারাতে সাহায্য করে।
—লেবু আর্থাইটিসের রোগীদের জন্য ভালো ।
—লেবু শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াগুলোকে ধ্বংস করে।
—লেবু এন্টিঅক্সিডেন্ট। তাই ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি ত্বক
পরিষ্কার রাখে, অপহব দূর করে। ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করে।
কালোদাগ ও ত্বকের ভাঁজ পড়া কমায়।
—লেবু ওজন কমাতে সাহায্য করে।
—লেবু হজমে সহায়ক ও হজমের সমস্যা দূর করে।
—কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
—শরীরের ভেতরের টক্সিন দূর করে, অন্ত্রনালী, লিভার ও পুরো শরীরকে
পরিষ্কার রাখে।
—পেট ফোলাজনিত সমস্যা কমায়।
—রক্ত পরিশোধন করে।
—ঠাণ্ডা লাগলে জ্বর, গলাব্যথায় ভালো ওষুধ হিসেবে কাজ করে।
—শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি হলে ভালো কাজ করে।
—শ্বাসনালীর ও গলার ইনফেকশন সারাতে সাহায্য করে।

কখন খাবেন
সাধারণত সকালে উঠেই প্রথম পানীয় হিসেবে খালি পেটে এটি খাওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পরে সকালের নাস্তা খেতে পারেন।

সাবধানতা
যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে তারা অবশ্যই এটি খালি পেটে খাবেন না। কারণ লেবু এসিডিক। তাই ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে এটি খাবেন।
তাছাড়া লেবুর এসিড দাঁতের এনামেলের জন্য ক্ষতিকর, তাই এই পানীয় খাবার সঙ্গে সঙ্গে কুলি করবেন, অথবা পানি খাবেন।
একটা কথা মনে রাখবেন, ওজন কমানোর জন্য এই পানীয় শুধুই সহায়কমাত্র। সম্পূর্ণ ওজন কমানোর প্রক্রিয়াতে অবশ্যই থাকতে হবে স্বাস্থ্যকর/ব্যালেন্সড ডায়েট, নিয়মিত শরীর চর্চা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা।

সুন্দর চুলের জন্য মুলতানি মাটির ৪ হেয়ার প্যাক

শুষ্ক চুলের জন্য
৪ চা চামচ মুলতানি মাটি, ১/২ কাপ টক দই দিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে নিন। এই প্যাকটি চুলে ভাল করে লাগান। ১/২ ঘণ্টার পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। এটি চুল পড়া রোধ করার সাথে সাথে প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসাবে কাজ করে থাকে। এই প্যাকটির সাথে লেবুর রস যুক্ত করতে পারেন। লেবুর রস আপনার চুলের খুশকি দূর করে থাকে। ২ টেবিল চামচ মধু যোগ করে নিতে পারেন চুলকে ঝরঝরে সিল্কি করার জন্য।

তৈলাক্ত চুলের জন্য
 একটি বাটিতে ৩/৪ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি, ১/২ টেবিলচামচ রিঠা পাউডার মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে রাখুন। প্যাকটি মিশিয়ে ১ /২ ঘন্টা রেখে দিন। তারপর চুলের গোড়াসহ পুরো চুলে ভালভাবে লাগান। ১০/১৫ মিনিট পর তা ভাল করে শ্যাম্পু করে ফেলুন। এই প্যাকটি আপনার চুলকে সিল্কি এবং মজবুত করবে।
 
রুক্ষ্ম চুলের জন্য
রুক্ষ্ম চুল সিল্কি করার জন্য মুলতানি মাটি খুব ভাল কাজ করে। শ্যাম্পু করার আগের রাতে চুলে অলিভ অয়েল দিয়ে রাখুন। সকালে গরম পানিতে ভেজানো টাওয়েল দিয়ে চুল পেঁচিয়ে রাখুন ১ ঘণ্টা। এরপর মুলতানি মাটি, টক দই দিয়ে তৈরি প্যাক চুলে লাগান। প্যাকটি শুকিয়ে গেলে শ্যাম্পু দিয়ে ভাল করে চুল ধুয়ে ফেলুন। ভাল ফল পেতে এই প্যাকটি প্রতি সপ্তাহে একবার ব্যবহার করুন।

চুল মজবুত করতে
১ কাপ মুলতানি মাটি, ৫ চা চামচ চালের গুঁড়া, ১ টি ডিমের সাদা অংশ, অল্প কিছু পানি দিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে নিন। এরপর প্যকটি চুলের গোড়াসহ সম্পূণ চুলে ভাল করে লাগান। প্যাকটি শুকিয়ে গেলে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। এটি আপনার চুলের গোড়া মজবুত করে থাকে।
মুলতানি মাটির প্যাক ব্যবহারে আগে চুল খুব ভাল ভাবে আঁচড়ে নিতে হবে। ভাল ফল পেতে চাইলে আগের রাতে চুলে তেলদিয়ে রাখা ভাল।

দাঁতের হলদেটে ভাব দূর করে যে খাবারগুলো

১. ফল
ফল বিশেষ করে আপেল এবং স্ট্রবেরিতে রয়েছে ম্যালিক অ্যাসিড যা দাঁত সাদা করার একটি চমত্‍কার প্রাকৃতিক উপাদান। নিয়মিত ফল খেলে দাঁতে সহজে দাগ পড়ে না বা হলদেটে হয় না।

২. সবজি
গাজর, সবুজ শাক এবং ব্রকোলির মতো সবজি দাঁত থেকে দাগ দূর করতে সাহায্য করে। সালাদে গাজর খান নিয়মিত। এতে যেমন দাঁত ভালো থাকবে, তেমনি গাজর থেকে পাবেন প্রচুর পরিমাণে ক্যারোটিন তথা ভিটামিন এ, যা আপনার চোখ, ত্বক ও চুল রাখবে সুস্থ।

৩. শুকনো ফল
ড্রাই ফ্রুট বা শুকনো ফল যেমন কিশমিশ দাঁত সাদা রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি চিনি ছাড়া চুয়িংগাম দাঁতের দাগ দূর করার একটি চমত্‍কার উপায়।

৪. দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার
দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবারে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম যা দাঁতের জন্য খুবই জরুরি। এছাড়া দুগ্ধজাত খাবার, যেমন দই এবং পনির দাঁতের এনামেল বজায় রাখতে সাহায্য করে।

মেকাপের খুঁটিনাটি/ মেকওভারের খুঁটিনাটি-

মেকওভারের খুঁটিনাটি-

মেকওভার বা এই রূপবদল আপনি যেকোন সময়ে করতে পারেন। আপনার ইচ্ছা অথবা কোন উৎসবের প্রয়োজনে নিজেকে সাজাতে পারেন সম্পূর্ণ নতুন কোন ভঙ্গিমায়। নিজের চিরচেনা ধারাটা ভেঙ্গে বেরিয়ে এসে নিজেকেই নতুন করে দেখার বিষয়টা সত্যিই মজাদার হবে।

মেকওভার এমন একটা বিষয় যা আপনি একদিনের জন্যেও ধারণ করতে পারেন, আবার চাইলে বেশ অনেকদিনের জন্যেও সেটা তুলে আনতে পারেন নিজের মধ্যে। সেটাও পুরোপুরি আপনার ইচ্ছা বা দরকার মতন হতে পারবে।

ধরে নিন, আপনার খুব বিশেষ একটি উপলক্ষ আছে সামনেই। অথবা কোন উৎসবের দিন ঘনিয়ে আসছে। সেইদিনে নিজেকে নতুন রূপে নতুন সাজে দেখবেন বলে ভাবছেন। তবে এবার প্রস্তুতি নেয়া শুরু করে দিন রূপবদলের জন্য!

চিরচেনা ছবি পাল্টে দেয়ার মানে কেবল এই নয় যে ভারী সাজপোষাকের আড়ালে আপনার এতোদিনের নিজের প্রতি অযত্নের ছাপ ঢেকে দিলেন। যদি অযত্ন করেই থাকেন এতোদিন, তবে এবার খানিক যত্ন নিন নিজের, সেটাও কিন্তু এক অর্থে মেকওভার হবে! খেয়াল রাখুন, সবাই আপনাকে অনেকগুলো দিন ধরে যা দেখেছে, যেমনটা তাদের কাছে আপনার চিত্র তৈরি হয়ে গেছে, সেটাকেই বদলে দিতে চলেছেন আপনি।

নিজের ছোটখাটো সব বিষয়েই বদল আনুন, যতোটা সম্ভব আপনার পক্ষে। মানুষের চেহারার ধরন অনেক বেশি করে তার কেশবিন্যাসের সাথে সম্পর্কযুক্ত। যদি নিজের মেকওভারটা বেশ কয়েকদিন ধরে রাখবেন বলেই ভেবে থাকেন তবে পাল্টে ফেলুন আপনার চুলের বিন্যাস। একেবারে ভিন্ন কিছু বেছে নিন নতুন হেয়ার স্টাইলে, তবে অবশ্যই যেন তা আপনাকে মানিয়ে যায়।

এতোদিনের সাজগোজেও বৈচিত্র আনতে হবে এইবার। চড়া সাজে স্বস্তি পাওয়া মানুষেরা সাজের বহরে একটু রাশ টানুন। হালকা, প্রাকৃতিক ধাঁচের মেকআপে মনযোগী হতে পারেন। মনে রাখুন, এই বদলটাই কিন্তু আপনার উদ্দেশ্য ছিলো। যারা নিত্যদিনের আয়োজনে কখনোই ঠোঁটে রঙের কাঁঠি ছোঁয়ানো পছন্দ করেন না, তারা এবার মাঝে মাঝে লিপস্টিক ব্যবহারের অভ্যাস করে নিতে পারেন। বা গাঢ় কাজল যাদের সবসময়ের অনিবার্য সাজের অংশ হয়ে থেকেছে তারা কাজলের কারবার তুলে দিন কিছু সময়ের জন্য।

গয়নার ব্যাপারেও সেই এক কথা চলবে। যেমনটা আপনার ধরন ছিলো আগে, বদলাতে হবে সেটাই। নতুন ধরনের জিনিস বেছে নিন। যে গয়নাটি কখনো পরা হয়নি, সেটি এবার পরেই দেখুন না কেমন লাগে নিজেকে।

পোশাকের ক্ষেত্রে একটু বেশিই সতর্কতা প্রয়োজন হয়। কারণ এই জিনিষটা স্পর্শকাতর হয় বেশি। আপনার রুচি বা ব্যক্তিত্বের পরিচয় বহনকারী হিসেবে অন্য যেকোন জিনিস থেকে পোশাক অনেক এগিয়ে। এই জায়গাতে পরিবর্তন আনুন রয়েসয়ে, অনেক ভেবেচিন্তে তবেই ভিন্ন পথে হাঁটুন। শাড়ি থেকে সালোয়ার-কামিজ বা সালোয়ার-কামিজ থেকে জিন্স-কুর্তায় নিজেকে গুছিয়ে নেয়াটা হয়তো অতো কঠিন নয়, তা আপনি সহজেই সামলে নিতে পারবেন। কিন্তু খুব বেশি ভিন্নতা আনতে যেয়ে এমন কিছু করে বসবেন না যাতে আপনারই কখনো অস্বস্তি হয়, বা সবার সামনে আপনার ব্যক্তিত্ব ম্লান হয়ে যায়। আপনিই ভালো বুঝবেন কোন কোন পোশাকে আপনার রুচি, ব্যক্তিত্ব এবং সৌন্দর্য ফুটতে পারে, নতুন পোশাকটাও বেছে নিন তার মধ্যে থেকেই।

মেকআপ এবং মেকওভারের পার্থক্য তো জানা হলো। এবার তবে চাইলেই করে নিন নিজের রূপবদল। চলতি ধারায় মন হারিয়ে নিজেকেই হারিয়ে ফেলবেন না যেনো, নিজেকে তেমনটাই সাজান যেমন আপনাকে মানিয়ে যাবে। তাহলে বহুদিনের পুরনো হোক বা আনকোরা নতুন, সব রূপসজ্জায় আপনি অসাধারণ হবেন, বিশ্বাস রাখুন!

ত্বকের যত্নে কমলালেবু

পদ্ধতিঃ১
১।কমলালেবুর খোসা ভালমত বেটে নিন।

২।এর সাথে পরিমাণমতো ভেসন ও গোলাপজল ভালো করে মিশিয়ে নিন।মিশ্রণ টি ঘন হতে হবে।

৩।পুরা মুখ ও গলা তে এই মিশ্রণটি লাগান। শুকালে হাল্কা করে সার্কুলার মুভমেন্টে ঘসে নিন।এরপর নরমাল পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।

এই প্যাকটি সপ্তাহে তিন দিন ব্যবহার করুন ।

পদ্ধতিঃ২
১।কমলালেবুর খোসা শুকিয়ে নিন। এরপর শুকনো খোসাগুলো গুড়ো করে নিন।

২।এর সাথে সমপরিমান গোলাপজল ও গ্লিসারিন মিক্স করে পেস্ট তৈরি করুন।মুখে লাগান।শুকালে ধুয়ে নিন।

এই প্যাকটি সপ্তাহে তিন বা চার দিন ব্যবহার করুন ।

ত্বকে জমে থাকে সব ময়লা ,ধুলাবালি দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল, মসৃণ ও কোমল করতে এই প্যাক দুটি খুব উপকারি।

রূপচর্চায় আলুর অসাধারণ ১৭টি ব্যবহার

সৌন্দর্যবর্ধনে আলুর ১৭টি দারুণ ব্যবহারের কথা।

১. চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল দূর করতে হলে আলু কেটে সেখানে লাগিয়ে রাখুন।

২. চোখের ফোলা ভাব দূর করতে হলে আলু চাকতি করে কেটে চোখের ওপর দিয়ে রাখুন। বেশ আরামও পাবেন চোখে।

৩. লেবু রস ও আলু ছেঁচে তার রস মিশিয়ে মুখের লাগান। কালো দাগ black spot দূর হয়ে যাবে।

৪. আলুর রস পুরো মুখে লাগান। ব্রন pimple নিরাময়ে ভালো কাজ দেবে।

৫. মাঝারি সাইজের আস্ত একটি আলু ছেঁচে তাতে একটি লেবুর রস Lemon juice মিশিয়ে মুখে লাগান। ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বকের ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলো সুস্থতা ফিরে পাবে।

৬. একটি আলু ও একটি শসা Cucumber একসঙ্গে ব্লেন্ড করে নিন। এতে এক টেবিল চামচ বেকিং সোডা ও এক টেবিল চামচ পানি মেশান। এটি একটি দারুণ ক্লিনজার হিসেবে কাজ করবে।

৭. একটি আলু ছেঁচে তার সঙ্গে গোলাপজল মিশিয়ে নিন। এক টেবিল চামচ লেবুর রস মেশান। তৈলাক্ত ত্বকে ১৫ মিনিট ব্যবহার করলে তেলতেলে ভাব দূর হবে।

৮. একটি আলু ছেঁচে তাতে এক টেবিল চামচ দই মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এটি ত্বকের বলিরেখা Skin balirekha দূর করবে।

৯. ত্বকের ওপরে হালকা জখম হলে তাতে আলু পাতলা করে কেটে লাগিয়ে রাখুন। প্রদাহ কমে যাবে। তবে বেশি ক্ষততে লাগাবেন না।

১০. একটি ডিমের সাদা অংশ এবং আলু ছেঁচে তার রস নিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। একটি ব্রাশ দিয়ে ত্বকে লাগান। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এটি মাস্কের কাজ করে।

১১. আলু potato ছেঁচে তার রসে একটি টিস্যু বা পেপার টাওয়েল ভিজিয়ে নিয়ে ত্বকে ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। এটি একটি উপকারী আলুর ফেস মাস্ক।

১২. আলুর রসের সঙ্গে দুই টেবিল চামচ অলিভ ওয়েল এবং এক টেবিল চামচ মধু honey মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি ১৫ মিনিট ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। ময়েশ্চারের অভাব দূর হবে।

১৩. অতিবেগুনী রশ্মিতে ত্বক পুড়ে গেলে আলুর স্লাইস দারুণ কাজে দেয়।

১৪. হালকা চুলকানি, লালচে ভাব হওয়া এবং পোকা-মাকড়ের কামড়ে আলু কেটে লাগালে যন্ত্রণা প্রশমিত হবে।

১৫. রুক্ষ ও শুষ্ক চুলে dry hair আলু ছেঁচে তার রস লাগালে তা চুলের ময়েশ্চারের কাজ করে।

১৬. একটি আলু ছেঁচে তার সঙ্গে গোলাপজল মিশিয়ে নিন। শুষ্ক ত্বকে ১৫ মিনিট ব্যবহার করলে তেলতেলে ভাব চলে আসবে।

১৭. কয়েকটি আলু সেদ্ধ করুন। খোসা ছাড়িয়ে এক ঘণ্টা ঠাণ্ডা হতে দিন। এবার শুষ্ক চুলে এগুলো ঘষতে থাকুন। ধূসর চুলগুলো চকচকে হয়ে উঠবে।

প্রাকৃতিক উপায়ে ব্রণের গর্ত নির্মূল করুন

০১. ভিটামিন ই তেলঃ
ব্রনের গর্তের দাগ সারানোর জন্য সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর সমাধান হচ্ছে ভিটামিন ই তেল। এটি ব্রণের গর্তে যাদুর মত কাজ করে। প্রতিদিন অল্প পরিমাণে ভিটামিন ই তেলের ব্যবহারে আপনার মুখমন্ডল হয়ে উঠবে দাগহীন,উজ্জ্বল। এটি ব্রণের কালো দাগ সারাতেও সাহায্য করে। ভিটামিন ই তেল বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। আর না পেলে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করুন। প্রথমে সমস্ত মুখ মন্ডল তেল মুক্ত ফেস ওয়াস দিয়ে পরিষ্কার করে নিন । আরপর একটা পরিষ্কার পিন বা সূঁচ এর সাহায্যে ক্যাপসুলটি ফুটো করে তেল নিঃসরন করুন।  তারপর পরিষ্কার হাত দিয়ে মুখে লাগিয়ে নিন। খুব বেশি তৈলাক্ত ত্বক হলে লাগানোর আধ ঘণ্টা পর টিস্যু পেপার দিয়ে অতিরিক্ত তেল চেপে চেপে তুলে নিন। নয়ত সারা রাত লাগিয়ে রাখতে পারেন। সমস্যা খুব বেশি না হলে সপ্তাহে ২-৩ বার এভাবে করুন।

০২. লেবুঃ
লেবু সাইট্রিক এসিদের খুব ভাল উৎস। সাইট্রাস এসিড স্কার সারাতে অনবদ্য। কয়েক গ্লাস লেবুর শরবত পান করলে তার সাইট্রিক উপাদান আপনার দেহের ভেতর থেকে মরা কোষ সারিয়ে ত্বকের রঙ হালকা করতে সাহায্য করে। একটি মাঝারি আকারের লেবুর রস সমপরিমাণ পানির সাথে মিশিয়ে মুখে ঘষুনএতে গর্তের দাগ হালকা হবে। সময়ের সাথে সাথে আপনি পাবেন দাগ মুক্ত ত্বক।

০৩. অ্যালোভেরা জেলঃ
অ্যালোভেরা জেল প্রকৃতির আশীর্বাদ স্বরূপ। এই একটা উপাদান ত্বকের নানা রকম সমস্যা থেকে মু্ক্তি দেয়। টাটকা অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করুন । এখন বিভিন্ন সুপার শপ গুলোতে অ্যালোভেরা পাওয়া যায়। সেখান থেকে কাঁচা অ্যালোভেরা কিনে জেল বের করে নিতে হবে। বাইরে থেকে কিনতে না চাইলে নিজের টবেও লাগাতে পারেন  অ্যালোভেরা। প্রথমেই একটি আস্ত অ্যালোভেরা নিয়ে সেটিকে ছুঁরির সাহায্যে যে কোন এক দিক থেকে কাটুন। কাটলেই দেখবেন ভেতরে স্বচছ্ব  জ়েলীর মত উপাদান, এটি ব্যবহার করুন। দিনে যতবার ইচ্ছা ব্যবহার করতে পারেন। এটি আপনাকে দেবে বিরক্তিকর ব্রণের গর্তের দাগ থেকে মুক্তি।

০৪. টমেটোঃ
টমেটোতে আছে ভিটামিন এ; যা সেবামের অতিরিক্ত ক্রীয়া বন্ধ করতে সক্রিয় ভূ্মিকা রাখে এবং ব্রণ ও ব্রণের দাগ দুটোই সারিয়ে তোলে। তাছাড়া এতে আছে প্রচুর পরিমাণে এন্টি-অক্সিডেন্ট, যা ত্বকের ক্ষয়-ক্ষতি সারিয়ে তুলতেও সাহায্য করে। মাঝারি আকারের টাটকা  টমেটো নিন। একে সমান ২ ভাগে ভাগ করুন। এবার দুই গালে প্রথমে ঘড়ির কাঁটার দিকে এবং তারপর ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ম্যাসাজ করুন। এতে যেমন গর্তের দাগ হালকা হবে, তদুপুরি রোদে পোড়া ভাব-ও কমবে। তাছাড়া এটি অনেক ভালো মেক-আপ রিমুভারের কাজ-ও করে থাকে ।

০৫. অলিভ ওয়েলঃ
অলিভ ওয়েল একটি জাদুকরী উপাদান। এটি শুধু খাদ্যদ্রব্যই সুস্বাদু করে না, এটি ত্বক পরিচর্যায় ও কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এক্সট্রা ভারজিন অলিভ ওয়েল দ্রুত ব্রনের গর্ত সারাতে সাহায্য করে। অলিভ ওয়েলের ময়েশ্চারাইজিং গুণাগুণের কারণে এটি দ্রুত ত্বকের সাথে মিশে যায় এবং গর্ত সারাতে সাহায্য করে। অল্প পরিমাণে অলিভ ওয়েল নিয়ে মুখ মন্ডলে মালিশ করুন এবং ভালো ফল পেতে ঘুমুতে যাওয়ার আগে ব্যবহার করুন ।

০৬. মধুঃ
মধু একটি পরিচিত প্রাকৃতিক প্রসাধনী। প্রাচীন কাল থেকেই রূপচর্চার জন্য মধুর ব্যবহার প্রচলিত। মধুর মিষ্টতা খাবার হিসাবেও খুব ভালো। ফ্যাট কম থাকায় এটি আপনাকে ফিট থাকতে যেমন সাহায্য করে তেমনি নিয়মিত ব্যবহারে সারিয়ে তোলে ব্রণের গর্তের দাগ।

০৭. বরফ কুচিঃ
বরফ কুচির ব্যবহারে ব্রণের গর্ত হালকা হওয়াটা অনেকটা পরীক্ষীত। অনেকেই আছে ঘরে বসে স্কার সারানোর জন্য বরফ কুচি ব্যবহার করে থাকেন। পাতলা কাপড় বা তুলোতে একটা বরফের টু্করো নিয়ে গর্তের জায়গায় ১৫-২০ মিনিট ঘষে লাগান। এতে ত্বকে আরামদায়ক অনুভুতির পাশাপাশি সারিয়ে দেবে গর্তের দাগ।

০৮. ফেস প্যাকঃ
ব্রণের গর্ত সারাতে আপনার ফেস প্যাকে মেশান বেসন, টকদই ও শশার রস। এটি আপনার ত্বককে রাখবে দাগহীন, উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত।
ব্রণ ও ব্রণের গর্ত সারাতে সবার আগে খেয়াল রাখতে হবে খাওয়া দাওয়া এবং জীবন যাত্রা যেন সুস্থ ও পরিকল্পিত হয়। সঠিক ঘুম, খাওয়া  ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাই পারে ব্রণ মুক্ত রাখতে। এতে ত্বকের অন্য্যন্য সমস্যা থেকেও পরিত্রাণ মেলে।

চুল পড়া নিয়ন্ত্রনে আনতে ৫ টি খাবার

১. বাদাম এবং বীজ

পেস্তা বাদাম, ফ্লাক্স সীড (শ্বেত বীজ), মেথি বীজ, আখরোট, তিল প্রভৃতিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা অ্যাসিড। যাতে রয়েছে এমন স্থিতিস্থাপক উপাদান যা চুলের ভেঙ্গে যাওয়া প্রতিরোধ করে।
২০১৫ সালে জার্নাল অফ কসমেটিক ডারমাটোলজিতে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যাদেরকে নিয়মিতভাবে ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ানো হয়েছে তাদের চুলপড়া ৯০% কমেছে। এছাড়া ৯০% রোগীরই মাথায় ফের শক্ত চুল গজিয়েছে। মেথি বীজ খুশকি দূর করতে এবং স্বাস্থ্যকর চুল গজানোতে সহায়ক।

২. ডাল

নানা ধরনের ডালবীজে থাকা ফলিক অ্যাসিড রক্তে লাল কোষ বৃদ্ধিতে সহায়ক। আর রক্তের লাল কোষ আমাদের মাথার ত্বক সজীব রাখে এবং চুলের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ করে।

৩.স্পিনাক

এই সবুজ এবং পাতাবহুল সবজিটি চুলের জন্য খুবই ভালো। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি এবং আয়রন। চুল পড়ার অন্যতম একটি কারণ আয়রণের ঘাটতি। স্পিনাকে সেবাম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালিসিয়াম এবং পটাশিয়ামও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। যা চুলকে উজ্বল এবং শক্ত রাখতে সহায়ক।

৪. ডিম

ডিমে রয়েছে প্রচুর বায়োটিন এবং ভিটামিন ডি। এছাড়াও রয়েছে প্রচুর পরিমাণ জিঙ্ক। চুলপড়া সংশ্লিষ্ট বেশিরভাগ গবেষণায়ই দেখা গেছে চুল পড়ার অন্যতম কারণগুলোর একটি জিঙ্কের ঘাটতি।

৫. চর্বিবহুল মাছ

স্যামন, টুনা, ম্যাকারেল জাতীয় মাছে থাকে প্রচুর পরিমাণ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। মাথার ত্বকের কোনো ধরনের প্রদাহ হলে তা প্রতিরোধ করে চুল পড়া কমায় এই পুষ্টি উপাদান। আর তাছাড়া মাছে রয়েছে ভিটামিন বি-৬ এবং প্রোটিন ও ম্যাগনেশিয়াম। এই পুষ্টি উপাদানগুলোও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
পেঁয়াজের রস মাথায় নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে। মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং জীবাণুমুক্ত রাখতে সাহায্য করে।

ব্যবহার পদ্ধতি

১টি বড় পেঁয়াজ ভালো করে পিষে ছাকনি দিয়ে ছেকে রস বের করে নিতে হবে। তারপর এই রস পুরো মাথার ত্বক ও চুলে লাগিয়ে একঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে।

পেঁয়াজের গন্ধ বেশ তীব্র, যদি সহ্য না হয় তবে পেঁয়াজের রসের সঙ্গে গোলাপ জল মেশানো যেতে পারে। একঘণ্টা পর মাথা শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
চুল পড়ার পরিমাণের উপর নির্ভর করে প্যাকটি সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করা যাবে।

মেহেদী, ডিমের সাদা অংশ ও টকদই :
মেহেদীর নির্যাস চুলের জন্য অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর, ডিম মাথার ত্বকে সঠিক পুষ্টি যোগাতে সহায়তা করে এবং চুলের ফলিকল মজবুত করে। টকদই চুল ও মাথার ত্বক ময়েসচারাইজ করে চুল পড়া Hair fall বন্ধে সহায়তা করে।
– মেহেদী পাতা বাটা বা গুঁড়ো চুলের ঘনত্ব ও লম্বা অনুযায়ী নিন, এতে মেশাম ১ টি ডিমের সাদা অংশ এবং ২-৩ টেবিল চামচ টকদই।
– যদি চুল অনেক শুষ্ক হয় তাহলে ভিটামিন ই ক্যাপস্যুল দিয়ে ভালো করে হেয়ার প্যাক তৈরি করে নিন।
– এই প্যাকটি চুলের গোঁড়া থেকে আগা পর্যন্ত ভালো করে লাগিয়ে নিন এবং প্রায় ২ ঘণ্টা এভাবেই রেখে দিন।
– এরপর সাধারণ ভাবে চুল ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। যদি প্রথম দিন চুল পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে ১ দিন এভাবেই রেখে তার পরের দিন শ্যাম্পু করতে পারেন তাহলে সব চাইতে ভালো ফলাফল পাবেন।
– এই পদ্ধতিটি সপ্তাহে মাত্র ১ বার ব্যবহার করলেই চুল পড়া অনেকাংশে কমে যাবে।

ত্বককে উজ্জ্বল করুন ত্বকের অবাঞ্ছিত লোম দূর করে

যা যা লাগবেঃ
  • – ১ টেবিল চামচ দুধের সর
  • – ২ টেবিল চামচ বেসন
  • – ২ চিমচি হলুদগুঁড়ো
  • – ৩ টেবিল চামচ গোলাপজল

পদ্ধতিঃ

– একটি বাটিতে সবকটি উপকরণ একসাথে মিশিয়ে মসৃণ ঘন পেস্টের মতো তৈরি করে নিন।
– এরপর এই পেস্টটি হাতে ও মুখের ত্বকে ভালো করে লাগিয়ে নিন।
– ২ মিনিট রাখুন। কিছুটা শুকিয়ে এলে গোল গোল করে ঘুরিয়ে ত্বকে ম্যাসাজ করতে থাকুন মিশ্রণটি।
– ম্যাসাজ করতে করতে ১০-১২ মিনিট পর মিশ্রণটি আপনাআপনি উঠে চলে আসবে।
– একই ভাবে ঘুরিয়ে ত্বক ম্যাসাজের মাধ্যমে হাত ও মুখের ত্বক থেকে মাস্কটি তুলে নিন।
– ত্বক থেকে মাস্কটি তুলে নিয়ে ২ ঘণ্টা পর মুখ পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।
– ভালো ফলাফলের জন্য ২৪ ঘণ্টা কোনো ধরণের সাবান বা কসমেটিকস ব্যবহার করবেন না।

ঘরেই করুন হুবহু পার্লারের মত নিখুঁত মেকআপ

১। ত্বক পরিষ্কার করা

প্রথমে মেকআপের জন্য ত্বককে তৈরি করুন। ভাল মানের ফেইস ওয়াস বা ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুয়েঁ ফেলুন। এতে আপনার মখের ময়লা সব চলে যাবে এবং মেকাআপ ভালভাবে মিশেয়ে যাবে আপনার ত্বকের সাথে।

২। ময়েশ্চারাজিং

হালকা কোন ময়েশ্চারাজিং ক্রিম বা লোশন দিয়ে কপাল, নাক, মুখ, চোখের চারপাশে ম্যসেজ করুন। ১৫/২০ মিনিট অপেক্ষা করুন যাতে লোশন বা ক্রিম ত্বকের সাথে মিশে যায়। ময়েশ্চারাজিং মেকআপের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

৩। ফাউন্ডেশন

ত্বক পরিষ্কারের পর শুরু হবে মেকআপ পর্ব। পারফেক্ট মেকআপ শুরু হয় ভালো বেস দিয়ে। বেসের প্রথম শর্ত হল নিজের ত্বক অনুযায়ে ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা। ফাউন্ডেশন নির্বাচন করতে হবে নিজের গায়ের শেড থেকে এক অথবা দুই শেড হালকা। হালকা রং ত্বককে উজ্জ্বল দেখাবে। শেডিং এর জন্য গাঢ় রং দরকার।আপনার ত্বকের শেড অনুযায়ে ওয়েল ফ্রী ফাউন্ডেশন লাগিয়ে নিন। তাহলে মেকআপ ভালো ভাবে বসবে। মুখ তৈলাক্ত হলে পাউডার ফাউন্ডেশন লাগান।

৪। কনসিলার

কনসিলার আপনার মুখের দাগ, চোখের নিচের কালি ঢেকে দেয়। নিজের স্কিনটোনের সাথে মিলিয়ে কনসিলার কিনতে হলে আপনার ফাউন্ডেশন থেকে অর্ধেক শেড হালকা থেকে শুরু করুন। ত্বকের ব্লেমিস বা কালো দাগ black spot দূর করতে আপনার ফাউন্ডেশনের চেয়ে এক শেড হালকা তবে ব্ল্যাক আন্ডারটোনের কনসিলার ব্যবহার করুন। চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল থাকলে সবুজ বা হলুদ রঙের কনসিলার বেছে নিলে ভালো কাজ করবে।তবে আপনি যদি ব্রণের দাগ,চোখের নিচের কালো দাগ ফাউন্ডেশন দিয়ে ঢেকে দিতে পারনে তবে কনসিলার ব্যবহার না করলে ও হবে।

৫। ফেইস পাউডার

বড় মেকআপ ব্রাশ দিয়ে সম্পূণ মুখে ফেইস পাউডার face powder ব্রাশ করুন। পাউডার পাফ অথবা ফেইস পাউডারের সাথে দেওয়া স্পঞ্জ দিয়ে হাল্কা করে বেইজের উপর বুলিয়ে বেইজ সেট করে নিন।

৬। চোখের মেকআপ

বেইজের পর আসে চোখ সাজানোর পালা। চোখের সাজে eye shaj শুরুতে চোখের ওপরের পুরো জায়গায় আই প্রাইমার দিন। এরপর আইশ্যাডো দিতে হবে। ড্রেসের সাথে মিলিয়ে দুই বা তিন শেডের আইশ্যাডো দিতে পারেন। বাড়তি সৌন্দর্য যোগ করতে ব্যবহার করতে পারেন বাদামি আইশ্যাডো।

৭। ফলস ল্যাশেস

চোখ দুটোকে চটজলদি বড় আর মায়াবি করে ফেলতে কৃত্রিম পাপড়ি জুড়ি নেই। বাজারে নানা দৈর্ঘ্য ও ডিজাইনের কৃত্রিম পাপড়ি পাওয়া যায়।পছন্দ অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারেন যে কোন প্রকারের আই ল্যাশেস।

৮। আইলাইনার

এরপর আইলাইনার চোখের ওপরে বা নিচে দিতে হবে। লিকুইয়েড,জেল,পেন্সিল যেকোন প্রকারে আইলাইনার ব্যবহার করতে পারেন। চাইলে আইলাইনারের বিকল্প হিসাবে কাজল ও ব্যবহার করতে পারেন। আইলাইনার চিকন করে আই ল্যাশসের উপর দিতে হবে। যদি আপনি মোটা করে আইলাইনার দিতে চান তবে প্রথম আইলাইনার শুকানোর পর আরেকবার দিতে পারেন।

৯। মাশকারা

আইলাইনারে পর মাশকারা দেওয়ার পালা।চোখ আকর্ষণীয় করার জন্য ঘন করে মাশকারা দিতে হবে। একবার মাশকারা দিয়ে কিছুক্ষণ রেখে আবার মাশকারা দিন।মাশকারা দেওয়ার সময় চোখের ওপরের পাতা ওপরের দিকে উঠিয়ে দিতে হবে। পাতাগুলো যেন একটার সঙ্গে আরেকটা লেগে না যায়। আইব্রো পেনসিল দিয়ে ভ্রু এঁকে নিয়ে এরপর শুকনো মাশকারা ব্রাশ দিয়ে আঁচড়ে নেবেন।

১০। ভ্রু-র সাজ

ভ্রু-র সাজ়ে আইব্রো পেনসিল দিয়ে ভ্রু এঁকে নিয়ে এরপর শুকনো মাশকারা ব্রাশ দিয়ে আঁচড়ে নেবেন। ভ্রু কে ন্যাচারাল লুক দিতে চাইলে ভ্রু-র রঙ এর থেকে হালকা রঙ-এর আইশ্যাডো বেছে নিয়ে তা হালকা করে ভ্রু এর উপর বুলিয়ে নিন। এরপর সেই রঙ এর কাজল দিয়ে হালকা করে ভ্রু একেঁ নিন। এরপর আইব্রো ব্রাশ দিয়ে ভ্রু এর শেপ ঠিক করে নিন।

১১। লিপষ্টিক

লিপষ্টিক দেওয়ার আগে ঠোঁট ভাল করে পরিষ্কার করে নিন।এরপর হালকা করে লিপ বাম বা ভ্যাসলিন লাগান। ৫০ সেকেন্ড অপেক্ষা করুন।ভ্যাসলিন বা লিপ বাম শুকিয়ে গেলে লিপিষ্টিক দিন। দিনে ঠোঁটের সাজ়ে ম্যাট লিপষ্টিক দিলে ভালো। রাতে ভারী লিপগ্লস ব্যবহার করতে পারেন। লিপষ্টিক দীর্ঘক্ষণ ঠোঁটে রাখার জন্য প্রথমে লিপষ্টিক থেকে এক শেড গাঢ় লিপলাইনার দিয়ে ঠোঁট আঁকতে হবে। এতে লিপষ্টিক ছড়িয়ে পড়বে না। এবার টিস্যু দিয়ে চেপে নিতে হবে। হাতের কাছে পাউডার থাকলে পাউডার দিয়ে চাপ দিয়ে আবার লিপষ্টিকে লাগাতে হবে।

১২। ব্লাশন

পুরো সাজ শেষ হয়ে এলে ব্লাশন ব্যবহার করতে হবে। ব্লাশনের রং হিসাবে আপনি গোলাপি বা পিচ রং ব্যবহার করতে পারেন।উজ্জ্বল রং এর অধিকারীরা হালকা শেডের ব্লাশন আর শ্যামলা বা তার থেকে গাঢ় রঙের ত্বকের জন্য গাঢ় শেডের ব্লাশন ব্যবহার করতে পারেন।

 

গোলাপের পাপড়ির ময়েশ্চারাইজিং স্ক্রাব তৈরির উপায়

যা যা লাগবে
– ২ টেবিল চামচ নারিকেল তেল
– আধা টেবিল চামচ মধু
– ১ টেবিল চামচ গোলাপজল
– আড়াই টেবিল চামচ চিনি
– ছোট এক জার শুকনো গোলাপের পাপড়ি
– ১/২ ফোঁটা রোজ এসেনশিয়াল অয়েল
প্রণালী
১) একটা ছোট বোলে নারিকেল তেল নিন। গরম পানির ওপর বোলটি রেখে ধীরে ধীরে গলিয়ে নিন তেলটাকে। গলে গেলে এতে দিয়ে দিন গোলাপজল এবং মধু। মেশাতে থাকুন যতক্ষণ না পুরো মিশ্রণের রঙ এক হয়ে যায়।
২) মিশ্রণ একটু ঠাণ্ডা হয়ে এলে একটু একটু করে চিনি দিন এবং মেশাতে থাকুন। এতে একটা খসখসে, নরম মিশ্রণ তৈরি হবে। এ সময়ে এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে দিতে পারেন।
৩) একটা শুকনো গোলাপ নিয়ে গরম পানিতে কয়েক সেকেন্ড রেখে নরম করে নিন। এরপর এটাকে ছোট্ট ছোট্ট টুকরো করে মিশিয়ে দিন নারিকেল তেলের মিশ্রণে। এগুলো স্ক্রাবের শক্তি বাড়ায়।
এই রেসিপিতে আড়াই আউন্স স্ক্রাব তৈরি হবে। দুই সপ্তাহ পর্যন্ত এটা ভালো থাকবে। ইচ্ছে হলে এতে এক টেবিল চামচ আমন্ড অয়েলও মিশিয়ে নিতে পারেন মধুর পরিবর্তে।
আরও একটি উপায়ে গোলাপের পাপড়ি ব্যবহার করতে পারেন। আপনি নিজে গোলাপ কিনে নিতে পারেন বা টবে থাকা গোলাপ নিয়ে শুকিয়ে নিতে পারেন। এই শুকনো গোলাপের পাপড়ি গুঁড়ো করেও মিশিয়ে নিতে পারেন ২ কাপ চিনি এবং ২/৩ কাপ নারিকেল তেলের সাথে। এই মিশ্রণটি আগের স্ক্রাবের চাইতে একটু বেশি গুঁড়ো গুঁড়ো হবে।
এই দুই ধরণের যে কোনো একটি স্ক্রাব তৈরি করে নিন। এবার গোলাপের মিষ্টি সুগন্ধ ঘুরে ফিরবে আপনার আশেপাশে। সেই সাথে আপনার ত্বকের ফুটিয়ে তুলবে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল আভা।

নখ পরিচর্যার ৮টি সহজ টিপস্‌

১/নখ সবসময় পরিষ্কার ও শুকনো রাখবেন। নখ ভেজা থাকলে নখের ভেতর ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাশ জন্মাতে পারে। এ থেকে ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা কয়েক গুণ বেড়ে যায়।

২/বাড়িতেই নিয়মিত মেনিকিউর করে নিতে পারেন। মেনিকিউর ক্লিপার বা কাটার দিয়ে নিয়মিত নখ কেটে নেইল ফাইলার দিয়ে শেপ করে নিন। নখ কাটার আগে ঈষদুষ্ণ পানিতে নখ কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন। ভেজা নখ নরম থাকে, ফলে কাটতেও সুবিধা হয় এবং নখের কোনো ক্ষতিও হয় না।

৩/অনেক সময় বিভিন্ন কারণে নখ ভেঙে যায়। কোনো কারণে নখ ভেঙে গেলে কখনই টেনে ছিঁড়বেন না। টেনে ছিঁড়লে ব্যথা তো লাগবেই, সেই সঙ্গে নখের শেপও নষ্ট হয়ে যাবে। ভাঙা নখ সাবধানে নেইল কাটার দিয়ে কেটে ফেলতে হবে।

৪/সবসময় নেইলপলিশ ব্যবহার না করাই ভালো। এতে নখের স্বভাবিক রং নষ্ট হয়ে যায়। দু-সপ্তাহ অন্তর নেইল পলিশ ফেলে কয়েকদিন নখ এমনই রেখে দিন। এতে নখে আলো-হাওয়া লাগে, যা নখ ভালো রাখতে সাহায্য করে।

৫/দাঁত দিয়ে নখ কাটা অথবা নখের চারপাশের চামড়া কাটার বদ অভ্যাস যত তাড়াতাড়ি ছাড়তে পারবেন ততই ভালো।

৬/প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পেট্রোলিয়াম জেলি অথবা ময়েশ্চারাইজার দিয়ে নখ ম্যাসাজ করা ভালো।

৭/নেইল পলিশ রিমুভার যতটা সম্ভব কম ব্যবহার করুন। বেশি রিমুভার ব্যবহার করলে নখের ন্যাচারাল ময়েশ্চার নষ্ট হয়ে যায় এবং নখ শুষ্ক হয়ে যায়। সপ্তাহে একবারের বেশি রিমুভার ব্যবহার না করাই ভালো।

৮/সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজিং হ্যান্ড ক্রিম অথবা লোশন লাগিয়ে নেবেন। সাবান হাতের ত্বকের পাশাপাশি নখের ময়েশ্চারও নষ্ট করে দেয়।

৪টি ফলের ফেসপ্যাক

১। স্ট্রবেরি ফেসপ্যাক
১/২ কাপ পাকা স্ট্রবেরি এবং ১/৪ কাপ কর্ণ ফ্লাওয়ার মিশিয়ে নিন। এটি ত্বকে ভাল করে লাগিয়ে নিন। ৩০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে ত্বকে নিয়ে আসবে তারুণ্যদীপ্ত উজ্জ্বলতা।

২। আভাকাডো ফেসপ্যাক
৩ টেবিল চামচ ফ্রেশ ক্রিম, ১/৪ আভাকাডো এবং ১ টেবিলচামচ মধু মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। প্যাকটি যেন ক্রিমী হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন। এটি ত্বকে লাগিয়ে ১ ঘন্টা রেখে দিন। তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি ত্বক ময়েশ্চারাইজ করে বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে। Dr. Ordon বলেন রোগীরা এই ফেসপ্যাক পছন্দ করে কারণ এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে তারুণ্যদীপ্ত করে তোলে।

৩। পিচ ফেসপ্যাক
১টি পিচ ফল, ১ টেবিল চামচ মধু এবং ১ চা চামচ ওটমিল মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন। এটি ত্বকে ভাল করে লাগিয়ে নিন এবং ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের নমনীয়তা বৃদ্ধি করে ত্বক টাইট করে থাকে। পিচ ফলে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং আলফা হাইড্রোক্সি অ্যাসিড আছে যা ত্বকের মৃত কোষ দূর করে বলিরেখা রোধ করে থাকে।

৪। কলার ফেসপ্যাক
১টি পাকা কলা, ২ টেবিল চামচ মধু এবং ২ টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে মুখে ভাল করে লাগিয়ে নিন। ১৫ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি দ্রুত ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে থাকে। কলার অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকের বিষাক্ত পদার্থ দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে থাকে।

নিয়মিত এই প্যাকগুলো ব্যবহার করার ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে ত্বকের কালো দাগ দূর করে ত্বক নরম কোমল করে থাকে।

হলুদ দুধ পানের স্বাস্থ্য উপকারিতা

ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কাজ করে
হলুদের একটি সক্রিয় উপাদান টিউমার সৃষ্টিকারী রেডিয়েশনের বিরুদ্ধে কাজ করে। এটি প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। হলুদ ক্যান্সার কোষকে নষ্ট করে দেয়ার ক্ষমতা রাখে যেমন টি-সেল লিউকেমিয়া, কোলন ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সারের কোষ।

অনিদ্রা দূর করতে
যাদের অনিদ্রার বা ঘুমের সমস্যা রয়েছে তারা কুসুম গরম গোল্ডেন মিল্ক অর্থাৎ হলুদ দুধ রাতে ঘুমাতে যাবার আগে খেলে ভালো উপকার পাবেন।

আর্থ্রাইটিসের জন্য উপকারী
প্রদাহবিরোধী গুনাগুনের জন্য এটি অস্টিওআর্থ্রাইটিস এবং রিউমাটোয়েড আর্থ্রাইটিসের জন্য উপকারী। হলুদে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উপস্থিতির কারনে হাড়ের প্রদাহ ও ব্যাথা দূর করতে পারে। এছাড়া এটি ফ্রী রেডিকেলকে ধ্বংস করে যা শরীরের কোষকে নষ্ট করে। হলুদ পেস্ট মালিশ করেও অনেক ধরনের ব্যাথা উপশম হয়।

প্রাকৃতিক অ্যাস্পিরিন
এটি মাথা ব্যাথা, ফুলে যাওয়া ক্ষত ও ব্যাথা উপশম করতে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

ওজন কমাতে এবং নিয়ন্ত্রণে রাখতে
১ চা চামচ হলুদ পেস্ট প্রতি বেলার খাবারে রাখলে ওজন কমাতে এবং স্থূলতা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। হলুদ খাবারের ফ্যাটের বাইল সল্টের ভাঙ্গনের গতি বাড়াতে সাহায্য করে। তাই যদি ওজন কমাতে চান বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান তাহলে গোল্ডেন মিল্ক বা হলদে দুধ খান।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে
ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় কার্যকরভাবে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে হলুদ ঔষধের মত কাজ করে। এটি টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের ইনসুলিন প্রতিবন্ধকতা কমাতে সাহায্য করে।

কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়
কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকলে তা বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি করে। হলুদের এবং হলুদের তৈরি দুধ খেলে তা কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক রেখে হৃদরোগ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

প্রতিরোধক ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
হলুদের প্রদাহ বিরোধী, ভাইরাস বিরোধী, ব্যাকটেরিয়া বিরোধী, ফাঙ্গাল বিরোধী বৈশিষ্ট্য প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।কারন প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হলে ঠাণ্ডা কাশি থেকে শুরু করে বেশির ভাগ রোগ থেকে মুক্ত থাকা যায়। এজন্য হলদে দুধ খুবই উপকারী।

ত্বক উজ্জ্বল ও সমস্যা মুক্ত রাখতে
বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সমস্যাতেও হলুদ বেশ উপকারী। এছাড়া এটি মুখের মাস্ক হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক হয় উজ্জ্বল এবং তারুণ্যদীপ্ত।

 কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে
হলদে দুধ যেমন ডায়রিয়া প্রতিরোধ করতে পারে ঠিক তেমনি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। তবে এই ক্ষেত্রেও লো ফ্যাট দুধ ব্যবহার করুন।

আলঝেইমার রোগ প্রতিরোধে
হলুদ মস্তিস্কের বিভিন্ন প্লাক দূর করতে সাহায্য করে যার ফলে বিভিন্ন মানসিক রোগ হয় যেমন আলঝেইমার প্রতিরোধ করে। হলুদ মস্তিস্কে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়িয়ে মস্তিস্কের কাজকে উন্নত করতে সাহায্য করে এবং আলঝেইমার রোগের গতিকে ধীর করে এবং প্রতিকার করার চেষ্টা করে।

যকৃতের রোগ প্রতিরোধ করে
হলুদ গুরুত্বপূর্ণ এনজাইমের উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে যা যকৃতকে রক্ত বিশুদ্ধ করতে সাহায্য করে। হলুদ দেহের দূষণ দূর করে দেহের সমস্ত বিষাক্ততা দূর করতে সাহায্য করে। এটি রক্ত প্রবাহকে বাড়িয়ে যকৃতের কার্যক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে।

কিভাবে বানাবেন গোল্ডেন মিল্ক বা হলদে দুধ
যে গোল্ডেন মিল্ক বা হলদে দুধের এত গুন সেটি কিভাবে তৈরি করতে হবে চলুন তা জেনে নেই। বিভিন্ন ভাবেই হলদে দুধ বানায়। দুধের সাথে সামান্য হলুদ আর গোলমরিচ গুঁড়ো মিশিয়ে ফুটিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যায় গোল্ডেন মিল্ক। এখানে মূল রেসিপি তুলে ধরছি।

প্রথম ধাপ
হলুদের প্রাকৃতিক পেস্ট তৈরি
ভালো মানের হলুদের গুঁড়ো- ১/৪ কাপ
গোলমরিচ গুঁড়ো- আধা চা চামচ
বিশুদ্ধ পানি- আধা কাপ
একটি পাত্রে সব উপকরন একসাথে মিশিয়ে মধ্যম আঁচে চুলায় দিয়ে ক্রমাগত নাড়তে হবে যতক্ষণ না একটি ঘন পেস্ট তৈরি হয়। ৭ মিনিটের মত রাখতে হবে। যদি এর মাঝে খুব বেশি শুকিয়ে যায় তাহলে সামান্য একটু যোগ করুন। তারপর সেটি চুলা থেকে নামিয়ে ঠাণ্ডা করে একটি এয়ার টাইট পাত্রে নিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। এই পেস্টটি ২ সপ্তাহের মত রাখা যাবে। বিভিন্ন ধরনের ব্যাথার জন্য আধা চা চামচ প্রতিদিন এই পেস্টটি খেলে উপকার পাবেন। আর খুব বেশি ব্যাথা যাদের থাকে তারা প্রতিদিন ২ বার করে আধা থেকে ১ চামচ করে এই পেস্ট খেলে ৩/৪ দিনের মাঝেই বেশ ভালো একটি ফলাফল পাবেন।
দ্বিতীয় ধাপ

গোল্ডেন মিল্ক বা হলদে দুধ তৈরি
কাঠ বাদামের দুধ- ১ কাপ (এর পরিবর্তে নারকেলের দুধ, সয়ামিল্ক,গরুর দুধ বা যেকোনো দুধ দিতে পারেন)
রান্নার নারকেল তেল- ১ চা চামচ (এর পরিবর্তে কাঠ বাদামের বা তিলের তেল ব্যবহার করতে পারেন)
তৈরি করা হলুদের পেস্ট- ১/৪ চা চামচ বা একটু বেশি
মধু- স্বাদ অনুযায়ী
মধু ছাড়া সব উপকরন একসাথে মিশিয়ে একটি পাত্রে নিয়ে মধ্যম আঁচে চুলায় দিয়ে ক্রমাগত নাড়তে হবে এবং ভালো ভাবে গরম হলে নামিয়ে কিছুটা ঠাণ্ডা হতে দিন। কুসুম গরম অবস্থায় মধু মিশিয়ে পান করুন।

গোল্ডেন মিল্ক পানের নিয়ম
গোল্ডেন মিল্ক খেতে হবে খালি পেটে। সকালে ঘুম থেকে উঠে এবং রাতে ঘুমাতে খাওয়ার সময়। এভাবে নিয়মিত ৪০ দিন করে বছরে দুইবার খেলে শরীর থাকবে রোগমুক্ত এবং ত্বক সুন্দর ও উজ্জ্বল হবে।

এছাড়া মাস্ক হিসেবে বা মুখ ধোয়ার জন্য
১/৪ কাপ ফুল ক্রিম দুধ নিয়ে তাতে আধা চা চামচ হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। তারপর একটি পরিষ্কার কাপড় নিয়ে মিশ্রণে ডুবিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।

সতর্কতা
হলুদের মূত্রবর্ধক বৈশিষ্ট্যের জন্য যাদের গলব্লাডারের সমস্যা রয়েছে তারা খাবেন না এবং ডায়াবেটিস এর রোগীরা হলুদ খেতে গেলে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ নিয়ে খাবেন কারন হলুদ ঔষধের সাথে মিশে অনেক সময় হাইপো গ্লাইসেমিয়া হতে পারে। এছাড়া অনেকের হলুদের অ্যালার্জি থাকতে পারে, তাই যাদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে তারা খাবেন না। ডায়রিয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই নন ফ্যাট মিল্ক ব্যবহার করতে হবে।

ঘরোয়া পদ্ধতিতে মাথার খুসকি দূর করার উপায়

১/লবণ-লবণ কিন্তু খুশকির যম। মাথায় শ্যাম্পু করার সময় কিছুটা লবণ মাথায় ছিটিয়ে নিয়ে আলতো হাতে ঘষুন। উপকার পাবেন নিশ্চয়ই।

২/রসুন-উপরেই বলেছি খুশকি মূলত ফাঙ্গাসের সংক্রমণ। ফাঙ্গাস দূর করতে রসুন বাটা ব্যাবহার করতে পারেন। তবে রসুনের গন্ধ আপনার কাছে ভালো নাও কাগতে পারে। সে ক্ষেত্রে বাটা রসুনের সঙ্গে মধু মিশিয়ে ক্ষানিক খন রেখে দিন।

৩/মেথি-মেথি সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে বেটে নিন। মাথায় মেখে রাখুন আধঘণ্টা। তারপর শ্যাম্পু যোগে মাথা ধুয়ে নিন ভালো করে।

৪/বিট-গোটা বিট সেদ্ধ করে সেই পানি মাথায় ঢালুন ও ম্যাসেজ করুন।

৫/ডিমের সাদা অংশ-ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে অর্ধেক পাতি লেবুর রস, নিম পাতা ও আদার রস মিশিয়ে চুলের গোঁড়ায় মাখুন। আধ ঘণ্টা পরে ধুয়ে ফেলুন।

৬/পেঁয়াজের রস-পেঁয়াজের রস খুশকি বিনাশী। পেয়াজ মিহি করে বেটে নিয়ে রস ছেকে নিন। মাথায় মেখে আধঘণ্টা ধৈর্য ধরে বসে থাকুন। সপ্তাহে ২ বার করে চালিয়ে যান। ফল পাবেন দ্রুতই।

৭/অ্যালোভেরা-তাজা অ্যালোভেরার কস মাথার ত্বকে লাগান। ১৫ মিনিট পরে শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। মাসে একবার করে করুন।

৮/আপেল সিডার ভিনিগার-সপ্তাহে একবার আপেল সিডার ভিনিগার দিয়ে মাথার চুল ধুয়ে নিন।

সুন্দর ত্বক পেতে প্রতিদিনের রূপচর্চায় ব্যবহার করুন প্যাকগুলি

১। পাকা কলা

কলা প্রায় সকলের বাসায় থাকে। এই কলা দিয়ে করে ফেলতে পারেন আজকের রূপচর্চাটি। একটি পাকা কলার সাথে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। এই প্যাকটি ত্বকে লাগিয়ে নিন। ভিটামিন এ, ভিটামিন ই এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ কলা ত্বকের কালো দাগ দূর করে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে দেয়।

২। শসা

এক টেবিল চামচ শসার রস, এক চা চামচ লেবুর রস, এক চা চামচ হলুদের গুঁড়ো, এক চাচামচ গ্লিসারিন( শুষ্ক ত্বকের জন্য) মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে ত্বকে লাগিয়ে নিন। ১৫ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। তৈলাক্র ত্বকের জন্য কার্যকরী একটি প্যাক।

৩। মধু এবং লেবুর রস

মধু এবং লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে লোমকূপের ছিদ্রগুলো ছোট করে দেয়। যারা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে চান, এটি ব্যবহার করতে পারেন।

৪। বেসন

এক টেবিল চামচ বেসন, এক টেবিল চামচ লেবুর রস, এক চাচামচ হলুদ গুঁড়ো এবং গোলাপ জল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে ম্যাসাজ করে লাগান। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে ত্বকের কালো দাগ দূর করে থাকে এই প্যাকটি।

৫। স্ট্রবেরি

ত্বকের বলিরেখা রিংকেল দূর করতে স্ট্রবেরি প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। স্ট্রবেরি ম্যাশ করে সরাসরি ত্বকে লাগিয়ে নিতে পারেন। এছাড়া স্ট্রবেরির সাথে গোলাপজল মিশিয়ে ত্বকে লাগাতে পারেন। প্রথমে এটি ত্বকে কিছুটা চুলকানি সৃষ্টি করতে পারে। কিছুক্ষণ পর তা চলে যায়। ভাল ফল পেতে সপ্তাহে দুইবার এটি ব্যবহার করতে পারেন।

ফ্রেঞ্চ ম্যানিকিউর যেভাবে করবেন

ফ্রেঞ্চ ম্যানিকিউর কি ও কিভাবে করবেন?
প্রথমে রিমুভার দিয়ে নখের পুরোনো নেইল পলিশ তুলে ফেলুন। এবার কিউটিক্যাল অয়েল লাগিয়ে নিন নখের চামড়া বা কিউটিক্যালের উপর। কিছুক্ষণ এভাবে রেখে দিন, যাতে চামড়া কিছুটা নরম হয়। এবার হালকা হাতে নখের ওপর তেলটা একটু ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করে নিন। তারপর একটি কিউটিক্যাল পুশার দিয়ে আস্তে আস্তে কিউটিক্যাল পিছনের দিকে পুশ করুন। কিউটিক্যাল পুশারের অপর প্রান্ত দিয়ে নখে জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করে ফেলুন।

এবার নেইল কাটার এবং ফাইলার দিয়ে নখকে দিন আপনার পছন্দ অনুযায়ী আকার।
এবার চলে আসি মূল প্রসঙ্গে।
প্রথমেই আপনার কয়েক ধরনের নেইলপলিশ দরকার। কয়েক ধরনের বলতে তিন রঙের ওয়াটার কালার, পিঙ্ক বা বেইজ এবং ঝকঝকে উজ্জ্বল সাদা রঙ। এক নজরে দেখে নিন সেই রঙ গুলো।

স্বচ্ছ নেইল পলিশ লাগিয়ে নিন প্রথমে নখে। তাতে নখ ভালো থাকবে এবং যেকোনো রঙের নেইল পলিশ ব্যবহার করা হলে কেমিক্যাল থেকে সৃষ্ট হলুদ ছাপ নখে পড়া থেকে বিরত রাখবে। ক্লিয়ার কালারের নেইল পলিশটি শুকিয়ে গেলে এর উপর হালকা গোলাপি বা বেইজ রঙের নেইলপলিশ লাগিয়ে নিন। শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর আরেক কোট নেইলপলিশ লাগান।

এরপর নেইল পলিশ শুকিয়ে যাওয়ার পর নখের সামনের দিকে অর্থাৎ আপনার নখের ওপর যেটুকু অংশ আপনি সাদা রাখতে চান,সেটি বাদে বাকি অংশে নেইল গাইড লাগিয়ে নিন ঠিক ছবিটির মত করে। এবার বাড়তি নখের উপর উজ্জ্বল সাদা রঙের নেইল পলিশ লাগিয়ে দিন। যেকোনো দোকানে আপনি এই স্টিকারগুলো কিনতে পারেন। এ ছাড়া স্টিকার ব্যবহার না করে সাবধানেও নেইল পলিশ দিয়ে নখের ওপরের অংশটি সাদা করে নিতে পারেন।

কয়েক মিনিট অপেক্ষা করুন এবার নেইল গাইডটি তুলে ফেলুন। ভালো করে নেইলপলিশ শুকালে এবার পুরো নখে স্বচ্ছ কালারের নেইল পলিশ লাগিয়ে নিন। এভাবেই হয়ে গেল আপনার ফ্রেঞ্চ ম্যানিকিউর।
ফ্রেঞ্চ ম্যানিকিউরের পরিচ্ছন্নতা, হালকা ভাব এবং একই সঙ্গে ফ্যাশনেবল ভাবের জন্য খুবই জনপ্রিয়। তবে বর্তমানে ফ্রেঞ্চ ম্যানিকিউরের ধরনেও এসেছে বৈচিত্র্য। আজকাল ফ্রেঞ্চ ম্যানিকিউরের সাদা রঙের বদলেও এসেছে বিভিন্ন রঙের ব্যবহার। লাল, কালো বা ছাই রং অথবা আপনার পছন্দ অনুযায়ী নির্বাচন করতে পারেন যেকোনো রং।  ফ্রেঞ্চ ম্যানিকিউর অনেক দিন ধরে রাখতে কয়েক দিন পর পর ওপরের নেইল পলিশের কোটটি লাগিয়ে নিন।

পেয়ারা ও পেয়ারা পাতার স্বাস্থ্য উপকারিতা

১)মুখ গহ্বরের স্বাস্থ্য পরিচর্যায়–
দাঁতে প্লাক জমা মুখের ভেতরের একটি বড় সমস্যা। পেয়ারা পাতা এন্টিপ্লাক বিশিষ্টের জন্য খুব কার্যকর। ভেষজবিদরা মুখ গহ্বরের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার জন্য কচি পেয়ারা পাতার পেস্ট ব্যবহার করার পরামর্শ দেন। এই পাতার প্রদাহনাশক, বেদনাশক এবং জীবানুনাশক গুনাগুনের জন্য এটা মাড়ির প্রদাহ, মাড়ির ফোলা, মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে, দাঁতের ব্যাথা, মুখের ঘা সারাতে বেশ কার্যকর। পেয়ারা গাছের ডাল দাঁতের মাজন হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিদিন ১/২ টি পেয়ারা পাতা মুখে নিয়ে চিবালে ভালো ফল পাবেন। পেয়ারা পাতা দিয়ে তৈরি করতে পারেন মাউথওয়াশ, ৫/৬টি পেয়ারা পাতা পানিতে ফুটিয়ে নিয়ে ঠাণ্ডা করে সেই পানি দিয়ে দিনে ১/২ বার কুলি করতে পারেন।

২)হৃদ স্বাস্থ্যের উন্নতিকরনে-
১৯৯৩ সালে “Journal of Human Hypertension” এ প্রকাশিত হয় যে নিয়মিত পেয়ারা খেলে রক্ত চাপ ও রক্তের লিপিড কমে কারন পেয়ারাতে উচ্চ পটাশিয়াম, ভিটামিন সি এবং দ্রবনীয় আঁশ থাকে। পটাশিয়াম নিয়মিত হৃদস্পন্দনের এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। নিয়মিত ভাবে লাইকোপিন সমৃদ্ধ গোলাপি পেয়ারা খেলে কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকি কমায়। পেয়ারা পাতা ভালো করে শুকিয়ে চা বানিয়ে খেলে সম্পূর্ণ কোলেস্টেরল,খারাপ কোলেস্টেরল(LDL)এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমায়।

৩)ডায়রিয়ার চিকিৎসায়-
পেয়ারা পাতার চা ব্যাকটেরিয়ার কারনে সংঘটিত ডায়রিয়া প্রতিরোধ করে। কারণ এটার রস “Stephylococcus Aureus” নামক ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিতে বাধা দেয়। তাই ডায়রিয়া হলে দিনে কয়েকবার এই চা খেলে পায়খানার পরিমাণ, পানির মতো ভাব, পেট ব্যাথা কমিয়ে দ্রুত সুস্থ করে তুলবে। পেয়ারার এন্টি ব্যাকটেরিয়াল গুনাগুনের জন্য হজম ক্রিয়া ভালো হয়, এটা ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণুর বৃদ্ধিতে বাধা দেয় এবং এর আঁশ হজম ও নিঃসরণকে উন্নত করে।

৪)ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে-
অনেকবছর ধরে ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় চীনা ঔষধে পেয়ারা ব্যবহৃত হয়ে আসছে।১৯৮৩ সালে “The American journal of Chinese medicine”এ প্রকাশিত হয় যে পেয়ারার রসের হাইপোগ্লাইসেমিক গুনের প্রভাব ডায়াবেটিস মেলাইটাসের চিকিৎসায় খুবই কার্যকর। উচ্চআঁশ ও নিম্নগ্লাইসেমিক ইনডেক্সের পেয়ারা রক্তের সুগারের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া যারা ডায়াবেটিসের উচ্চমাত্রার ঝুঁকিতে রয়েছে পেয়ারা পাতার চা ও খেতে পারেন। কচি পেয়ারা পাতা শুকিয়ে মিহি গুঁড়ো করে ১ কাপ গরম পানিতে ১ চা চামচ দিয়ে ৫ মিনিট ঢেকে রেখে তারপর ছেঁকে নিয়ে পান করতে পারেন প্রতিদিন।

৫)দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে-
উচ্চ মাত্রার ভিটামিন সি সমৃদ্ধ পেয়ারা দেহকে ঠাণ্ডা, সর্দি, কাশিসহ অসংখ্য রোগ সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই প্রতিদিন ১টি পেয়ারা বা এর তৈরি সালাদ, স্মোদি বা পেয়ারা পাতার চা বানিয়ে খেতে পারেন।

৬)ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়-
পেয়ারাতে থাকা বেশ কিছু যৌগিক পদার্থ যেমন লাইকোপিন, ভিটামিন সি এবং বেশ কিছু পলিফেনল থাকাতে এর রয়েছে ক্যান্সার ও টিউমার বিরোধী গুনাগুন। এগুলো শক্তিশালী এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে যা মুক্ত র‍্যাডিকেলকে নিরপেক্ষ করে দেহকে রক্ষা করে। ২০১০ সালে প্রকাশিত “Nutrition & Cancer” জার্নালে গবেষক বলেন যে পেয়ারার রস প্রোস্টেট টিউমারের আকার ছোট করে এবং প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।এছাড়া নিয়মিতভাবে পেয়ারা খেলে বিভিন্ন ক্যান্সার ধরনের যেমন স্তন, মুখের, ত্বকের, পাকস্থলীর, অন্ত্রের এবং ফুসফুসের ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।

৭)দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে-
পেয়ারাতে থাকা উচ্চ মাত্রার ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে, কর্নিয়াকে সুস্থ, স্বচ্ছ রাখতে ও চোখের কোষকে সুরক্ষিত রাখতে এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এছাড়া এর ভিটামিন সি কৌশিক নালীকে উন্নত করে রেটিনাল কোষের সঠিক কার্যক্রমে সাহায্য করে। তাই খাবারের মাঝে কাঁচা পেয়ারা বা এর জুস রাখলে তা দৃষ্টিশক্তির জন্য ভালো।

৮)জ্ঞানশক্তিকে উদ্দীপিত করতে-
পেয়ারার দ্বারা মস্তিস্কের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে সুস্থ রাখা সম্ভব। এই সেরা খাবারটি জ্ঞানশক্তিকে উদ্দীপিত করার সাথে সাথে মনোযোগকে তীক্ষ্ণ করে। শক্তিশালী এন্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি থাকার কারনে এই ফলটি মানসিক ও মস্তিস্কের কার্যক্রমকে উন্নত করে। এছাড়া এতে থাকা ভিটামিন বি৩ ও বি৬ মস্তিস্কের রক্ত চলাচলকে উন্নত করতে সাহায্য করে।পেয়ারাতে থাকা পটাশিয়াম মস্তিস্কের তড়িৎ পরিবহনে সাহায্য করে যা চিন্তাশক্তি ও স্মরণশক্তিকে বাড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এই ফলটি রাখতে ভুলবেন না।

৯)সুস্থ ত্বকের জন্য-
বিশেষ করে গোলাপি পেয়ারাতে রয়েছে শক্তিশালী এন্টিঅক্সিডেন্ট যা কোষকে নষ্ট করার জন্য দায়ী ফ্রী র‍্যাডিকেলকে নিরপেক্ষ করে। ফ্রী র‍্যাডিকেলের জন্য সাধারণত ত্বকে বয়সের চিহ্ন যেমন শুষ্ক, রুক্ষ, ভাঁজ ও অনুজ্জ্বলতার ছাপ পড়ে। ত্বকের নমনীয়তা ও ইলাস্ট্রিসিটি রক্ষা করে পেয়ারাতে থাকা ভিটামিন সি। এছাড়া পেয়ারা ও এর পাতার সংকোচন বৈশিষ্টের কারনে এটা আমাদের ত্বককে উন্নত করতে, সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মির থেকে এবং ত্বকের সমস্যা যেমন ব্রণ ও ফুসকুড়ি থেকে রক্ষা করে। তাই সুন্দর ত্বক পেতে পেয়ারা খেতে পারেন অথবা কচি পাতা বা পেয়ারা পেস্ট করে মুখে মাখতে পারেন।

১০)থাইরয়েডের সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে-
থাইরয়েড জন্য উপকারী কপারের খুব ভালো উৎস হচ্ছে পেয়ারা। এটি আমাদের দেহের খুব গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থি যা দেহের হরমোন ও অর্গান সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রণ করে।আর কপার দেহের হরমোন উৎপাদন ও শোষণকে নিয়ন্ত্রণে সাহায্য এবং এর পটাশিয়াম ও শক্তিশালী প্রদাহনিরামক গুনাগুন থাইরয়েডের কাজকে উন্নত করতে সহায়তা করে।।তাই থাইরয়েড সংক্রান্ত সমস্যা দূর করার জন্য পেয়ারা ও পেয়ারা পাতাকে খাদ্য তালিকার গুরুত্বপূর্ণ অংশ করে নিতে হবে।এছাড়াও পেয়ারা দেহের শক্তি বৃদ্ধি ও ওজন কমানোর কাজকে সহজ করে দেয়।

শত কাজের ফাঁকে নিজের একটু যত্ন

১/সকালে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় বেসিক একটা মেকআপ সবাই করে থাকে। সেই বেজ মেকআপ ঠিক রাখতে হলে বার      বার মুখে হাত দেয়া যাবে না।

২/ঠিক তেমনি ভাবে বারবার চুলে হাত দেয়া উচিত নয়। এতে করে চুলের বাউন্সি ভাব নষ্ট হয়ে যায়।

৩/দিনের বেশির ভাগ সময় যেহেতু এসির মধ্যে কাজ করতে হয় সেহেতু তৈলাক্ত ত্বক আরও বেশি তৈলাক্ত হয়ে পড়ে। একারনে     হাতের কাছে সব সময় টিস্যু রাখতে হবে। তবে ওয়েট টিস্যু কখনই নয়।

৪/আবার অন্যদিকে শুষ্ক ত্বক আরও বেশি ড্রাই বা শুষ্ক হয়ে যায়। তাই মাঝে মধ্যেই টোনার স্প্রে করা উচিত।

৫/কাজের ফাকে মাঝে মধ্যেই ঠোটে মশ্চারাইজ গ্লস ব্যাবহার করা উচিত। এতে ঠোট ফাটবে না।

৬/দুপুর বেলা কিংবা বাইওে থেকে আসার পর ফেশ ওয়াশ দিয়ে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। এরপর মশ্চারাইজিং ক্রিম এবং সানস্ক্রিন ব্যাবহার করতে হবে। ইনহাউসে সানস্ক্রিনের প্রয়োজন রয়েছে।

৭/হাত ধোয়ার পর হ্যান্ড লোশন লাগিয়ে নিতে হবে। তা না হলে ত্বক রুক্ষ হয়ে যাবে।

৮/অফিসে থাকা অবস্থায় দেড় থেকে দু লিটার পানি পান করা উচিত। এতে করে স্ক্রিন ভালো থাকবে।

৯/কাজ গুলো হাটতে চলতেই করা যায়। খুব বেশি টেনস নেয়ার প্রয়োজন নেই। সারাদিন সতেজ থাকাই কাম্য।

চুল দ্রুত লম্বা করতে যা করবেন

  • তেল ম্যাসাজ করুনঃ
    চুলের বৃদ্ধিতে সব চাইতে কার্যকরী উপায় হচ্ছে তেলের ম্যাসাজ। নারিকেল তেল,অলিভ অয়েল চুলের জন্য অনেক ভালো। এই দুইটি তেল একসাথে মিশিয়ে কিংবা আলাদা একটি তেল চুলে ভালোভাবে ম্যাসাজ করে নিন। সারারাত রেখে সকালে শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন।
  • ডিমের হেয়ার মাস্কঃ
    ১ টি ডিম, পরিমাণ মতো অলিভ অয়েল এবং মধু মিশিয়ে চুলে লাগান। একটি শাওয়ার ক্যাপ কিংবা কাপড় দিয়ে চুল ঢেকে রাখুন ৩০ মিনিট। এরপর মৃদু শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২/৩ দিন এই মাস্ক ব্যবহার করুন।
  • দুধ বা টক দইঃ
দুধ বা দই চুলকে নরম আর মসৃণ করে চুলের রুক্ষতা দূর করে। ফলে চুল পুষ্টি পাবে এবং চুল ফাটবে না। নারিকেল             তেল, আমণ্ড অয়েল (কাঠবাদামের তেল), আধা কাপ দুধ বা টক দই মিশিয়ে নিন। এরপর এই মিশ্রণটি ভালোভাবে             চুলে লাগিয়ে ৩০-৪০ মিনিট রেখে দিন এবং শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত ২ দিন এই মিশ্রণটি মাথার               ত্বকে এবং চুলে ভালো করে লাগিয়ে ১ থেকে ২ ঘণ্টা রাখুন। দ্রুত ভালো ফল পাবেন।
  • লেবুর রসঃ
    চুলের সৌন্দর্য চর্চায় লেবুর রসের ব্যবহার নানাভাবে হয়। লেবুর রসের সাথে সমপরিমাণ পানি মেশান। এবার চুলে ভালো করে লাগান। ২০-৩০ মিনিট রেখে চুল ধুয়ে ফেলুন।
  • চায়ের লিকারঃ
চুল বৃদ্ধি করতে চায়ের লিকারের তুলনা হয় না। কারণ এটি চুলের কন্ডিশনার হিসেবে খুব ভালো। একটি পাত্রে                   চায়ের লিকার নিয়ে তাতে চুল ডুবিয়ে রাখুন ১০ মিনিট অথবা গোসল শেষে লিকারটি দিয়ে আস্তে আস্তে চুল ধুয়ে                 ফেলুন। এভাবে ২/৩ দিন চায়ের লিকার ব্যবহার করুন আপনার চুলে।
  • ভিটামিন-ই ক্যাপস্যুলঃ
চুলের বিশেষ যত্নের জন্য চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী অলিভ অয়েল নিয়ে এতে ১ টি ভিটামিন ই ক্যাপস্যুল ভেঙ্গে নিন।                  এরপর একে হালকা গরম করে মাথার ত্বকে ভালোভাবে লাগান। ৩০ মিনিট রেখে চুল ধুয়ে ফেলুন। সবচেয়ে ভালো                ফলাফলের জন্য পুরোরাত এই মিশ্রণটি মাথায় লাগিয়ে রেখে সকালে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২/৩ দিন ব্যবহার                    করুন।
এভাবে আপনি ঘরে বসে সহজে আপনার চুল সুন্দর করতে পারবেন এবং চুল দ্রুত বড় হবে।
সতর্কতাঃ
  • চুল মোছার জন্য নরম তোয়ালে ব্যবহার করতে হবে। চুল বেশি ঘষে ঘষে মোছা যাবেনা। এতে চুল ফেটে যায় বেশি। ভেজা চুল আস্তে আস্তে মুছতে হবে।
  • ভেজা চুল আঁচড়ানো যাবে না।
  • চুল শুকাতে, চুল ভালোভাবে নরম তোয়ালে দিয়ে মুছে, ফ্যানের বাতাসে বা আলো বাতাসপূর্ণ জায়গায় শুকাতে হবে। কোনক্রমেই হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করা যাবে না।
  • ইলেক্ট্রিক সকল যন্ত্র ব্যবহার পরিহার করতে হবে।
  • চুলের রুক্ষতা কমাতে এবং আগা ফেটে যাওয়ার প্রবণতা রোধ করতে, প্রতিদিন শ্যাম্পু করা বাদ দিতে হবে। কারণ চুল ধোয়ার ফলে, মাথার ত্বকের তেলও ধুয়ে যায়। তাই সপ্তাহে দুই থেকে তিনবারের বেশি শ্যাম্পু করা উচিত নয়। শ্যাম্পুর রাসায়নিক উপাদানও চুলের ক্ষতির কারণ হতে পারে।

গরমে চেহারা সুন্দর রাখতে করণীয়

উজ্জলতা বৃদ্ধিতে পেঁপের ব্যবহার

রোদের তীব্রতায় ত্বক পুড়ে কালো হয়ে যায় এবং ঘামের ওপর ধুলোবালি জমে ত্বক কালো দেখায়।ত্বকের হারানো উজ্জলতা ফিরিয়ে আনতে ব্যবহার করুন পেঁপে। পাকা পেঁপে স্লাইস করে কেটে নিন। এরপর এই পেঁপে মুখ, হাত, পা, গলা এবং ঘাড়ের ত্বকে ভালো করে ঘষে নিন। শুকিয়ে উঠলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে মাত্র ২ দিন ব্যবহারে বাড়বে ত্বকের উজ্জলতা।

ত্বককে সুস্থ রাখতে ফেইস মাস্ক

২ টেবিল চামচ টকদই এবং ১ টেবিল চামচ তাজা লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে মুখ, গলা এবং ঘাড়ের ত্বকের উপর লাগান। ২০-৩০ মিনিট রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বকের গরমকাল জনিত যে কোনো সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

ত্বককে ময়েসচারাইজ করতে প্রাকৃতিক ময়েসচারাইজার

গরমকালে আবহাওয়ায় অনেক তাপ থাকে বলে ত্বকের উপরিভাগের আদ্রর্তা একেবারেই চলে যায়। এতে দেখতে বিশ্রী লাগে। এই সমস্যা দূর করতে ত্বক পরিষ্কার করে নিয়ে, ২ টেবিল চামচ মধু এবং ১ টেবিল চামচ তাজা লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে ত্বকে লাগান। ২০ মিনিট পড়ে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বকের আদ্রর্তা বজায় থাকবে এবং চেহারা থাকবে সুন্দর।

ত্বকের যত্নে চন্দন

# বলি রেখা দূর করে
চন্দন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান সমূহের সমন্বয়ে গঠিত যা আপনার মুখের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। এর বিরোধী প্রদাহজনক এজেন্ট আছে, যা বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে। চন্দন একটি চমৎকার anti-aging উৎস হিসেবে পরিচিত।

# রোদে পোড়া দাগ দূর করে
রোদে পোড়া ভাব দূর করতে চন্দন বেশ উপকারী। শসার রস, চন্দনের গুঁড়ো, দই ও গোলাপ জল একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে রোদে পোড়া ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। ২০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ত্বক ধুয়ে ফেলুন। এই ফেস প্যাক রোদে পোড়া ভাব কমাবে এবং রোদের পোড়ার কারণে ত্বক জ্বলা কমাবে।

# ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে চন্দনের জুড়ি নেই। মসৃণ ও উজ্জ্বল ত্বকের জন্য হলুদ বাটা ও চন্দনের গুঁড়ো মিশিয়ে লাগান। ২০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের রঙ উজ্জ্বল হবে।

# ডার্ক সার্কেল দূর করে
আপনার যদি ডার্ক সার্কেল থাকে তাহলে অল্প পরিমাণ চন্দনের গুড়ার সঙ্গে গোলাপ জল মিশিয়ে চোখের চারপাশে লাগান। সারারাত রেখে সকালে ধুয়ে ফেলুন। এক সপ্তাহের মধ্যে চোখের চারপাশের কালো দাগ দূর হোয়ে যাবে।

# মুখের দাগ দূর করে
ডিমের কুসুম, মধু ও চন্দন গুঁড়া একসঙ্গে মিক্সড করে লাগালে মুখের দাগ দূর হয়। প্রতিদিন দুই চা চামচ চন্দনের গুঁড়ো ও গোলাপ জল মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন। এবার এই প্যাক মুখে লাগিয়ে নিয়ে ১৫ মিনিট রাখুন। এভাবে প্রতিদিন রাখলে মুখের দাগ দূর হবে ও ত্বক উজ্জ্বল হবে।

# উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায়
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে ১চা চামচ সাদা চন্দন কাঠের পেস্ট নিয়ে, আধা কাপ দুধের সাথে ভালভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। আবার এই চন্দনযুক্ত দুধ খালিপেটে পান করুন। এরপর ৭-৮টি তুলসী পাতা চিবিয়ে নিন। কিছু সময়ের মধ্যেই রক্তচাপ কমে আসবে। ব্রঙ্কাইটিস রোগের ক্ষেত্রেও এই পদ্ধতিটি অবলম্বন করলে উপকার পায়া যাবে

ত্বকের যত্নে টকদইের ফেস প্যাক

১। স্কিন হোয়াইটেনিং ইয়োগারট ফেস প্যাক-
এই ফেস প্যাক রেগুলার ব্যবহার করলে ত্বক খুব দ্রুত উজ্জ্বল হবে। সাথে সাথে ত্বকের ব্রণ সহ অন্যান্য দাগ ছোপ হালকা হয়ে যাবে। সব ধরনের ত্বকের অধিকারীরাই এই প্যাকটা ব্যবহার করতে পারবে।
কী কী লাগবে-
  • ১ টেবিলচামচ তাজা টকদই
  • ১ চাচামচ লেবুর রস
  • আধা চা চামচ মধু
কী করবেন-
সব উপকরণ একসাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট সমান ভাবে মুখ ঘাড় আর গলায় লাগিয়ে রাখুন। ১৫ মিনিট পর উষ্ম পানিতে ধুয়ে ফেলুন।
২। ইয়োগারট ডি- ট্যানিং ফেস প্যাক-
এই প্যাকটাও সবাই ব্যবহার করতে পারবেন। সমস্যা বেশি হলে ( ত্বক খুব বেশি রোদে পুড়ে গেলে ) প্রত্যেকদিন ব্যবহার করলে খুব দ্রুত ফল পাবেন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এটা খুবই উপকারী, আর যারা প্রথম প্যাকটা ব্যবহার করতে পারবেননা ত্বকের সেন্সিটিভিটির জন্য তারাও এটা ব্যবহার করতে পারেন।
কী কী লাগবে-
  • টমেটো অর্ধেক করে কাটা
  • ১ টেবিল চামচ টক দই
  • এক চিমটি চিনি
কী করবেন-
কাটা টমেটোর টুকরার উপর চিনির গুঁড়া ছড়িয়ে নিন। এবার এটার উপরে টক দই নিন। এবার এই টমেটোর টুকরা রোদে পোড়া ত্বকে হালকা করে ম্যাসাজ করুন। এতে ত্বকের ডেডসেলস উঠে আসবে। চিনির দানা গলে গেলে ফেস প্যাক মুখে আরও ১০ মিনিট রেখে পানিতে ধুয়ে ফেলুন।
৩। মিণ্ট ইয়োগারট ফেস প্যাক-
এই প্যাক তৈলাক্ত ত্বকের জন্য খুবই রিফ্রেসিং আর উপকারী হবে। ত্বকে হালকা হোয়াইটহেড যাদের আছে তারা এই প্যাক ব্যবহারে ভালো ফল পাবেন। এছাড়া গরমের এই সময়ে পুদিনা পাতার ঠাণ্ডা ভাবে সবাই অনেক রিলাক্সড হয়ে যাবেন।
কী কী লাগবে-
  • আধা চা চামচ পুদিনা পাতা বাটা
( আমি একদম মিহি পেস্ট করি না। একটু দানা দানা থাকলে ফেস প্যাক ধোয়ার সময় স্কিনটা একটু স্ক্রাব করা হয়)
  • এক টেবিল চামচ টকদই
  • ত্বক খুব অয়েলি হলে ১ চা চামচ মুলতানি মাটি মেশাতে পারেন
কী করবেন-
সব উপকরণ একসাথে মিশিয়ে হালকা সবুজ রঙের পেস্ট তৈরি করুন। ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রাখুন। এরপর ঠাণ্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন ত্বকের ছোট ছোট ব্রণ আর হোয়াইটহেড আর দেখাই যাচ্ছে না।
৪। স্কিন হোয়াইটেনিং প্যাক (২)
এবারের প্যাক টাও সব ধরনের ত্বকের অধিকারীরা ব্যবহার করতে পারবেন কিন্তু তৈলাক্ত ত্বকের জন্য একটু বেশি ভালো হবে। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক হবে উজ্জ্বল আর পিগমেনটেশন দূর হবে।
কী কী লাগবে-
  • এক চা চামচ কমলার রস
  • ১ টেবিল চামচ টকদই
কী করবেন-
কমলার রস আর টকদই মিশিয়ে ত্বকে হালকা ম্যাসাজ করে লাগান। ১০-১৫ মিনিট রাখুন এরপর ঠাণ্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন। ভালো ফল পেতে প্রতিদিন রাতে ব্যবহার করুন।
৫। স্যাফরন ইয়োগারট ফেস প্যাক-
ত্বকের রঙ উজ্জ্বল করতে আর সোনালি আভা দিতে এই ফেসপ্যাকটির কোন জুরি নেই। কিন্তু এটা শেষে রাখলাম আমাদের দেশে জাফরান(স্যাফরন) খুবি দুর্লভ হবার কারণে। কিন্তু যারা আসল জাফরান সংগ্রহ করতে পারবেন তাদের গ্যারানটি দিয়ে বলতে পারব রেগুলার এই ফেস প্যাক বাবহারে আপনি অবশ্যই পাবেন উজ্জ্বল মসৃণ ত্বক। সব ধরনের ত্বকে ব্যবহার করা যাবে এই প্যাক।
কী কী লাগবে-
  • জাফরানের ৪-৫ টা কেশর
  • ১ টেবিল চামচ টক দই
  • ১ চা চামচ বেসন
কী করবেন-
টক দইয়ের মধ্যে জাফরানের কেশর মিশিয়ে সারারাত ফ্রিজে রেখে দিন। পরদিন দেখবেন জাফরান রঙ ছেড়ে দইয়ে খুব সুন্দর একটা হলদে টোন নিয়ে এসেছে। এই দইয়ের মধ্যে বেসন মিশান। এবার এই পেস্ট ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। যখন প্যাক শুকিয়ে আসবে তখন ঠাণ্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন। জাফরান যতদিন ত্বকে ব্যবহার করবেন ততদিন ভালো ফলাফলের জন্য অতিরিক্ত রোদে যাবেন না বা গেলেও ছাতা ব্যবহার করবেন। এতে অল্প সময়ে খুব ভালো ফল পাবেন।

দিনের শেষে কিভাবে নিজের যত্ন নিবেন

ত্বক পরিষ্কার

কিশোরী বয়সে মেকআপ করা উচিত নয়। তবে কেউ করে থাকলে, মেকআপ না তুলে কোনোভাবেই ঘুমাতে যাওয়া যাবে না। এটি সব বয়সীর জন্য বাধ্যতামূলক হলেও কিশোরী বয়সে বাড়তি খেয়াল রাখতে হবে। এই বয়সের ত্বক বেশি সংবেদনশীল থাকে। মেকআপ দেওয়া না থাকলেও শোবার আগে মুখ পরিষ্কার করে ধুতে হবে। ফেসওয়াশ বা ক্লিঞ্জিং মিল্ক দিয়ে ভালো করে মুখের ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। প্রতিদিনই করতে হবে। এতে করে মুখের ত্বকে বাইরের ধুলোবালি ও ময়লা থেকে আসা ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাক বাসা বাঁধতে পারবে না। ত্বক থেকে নিঃসৃত অতিরিক্ত তেলও জমবে না। লোমকূপগুলোর মুখ পরিষ্কার থাকায় ত্বক উজ্জ্বল থাকবে।

ফেসওয়াশ বা ক্লিঞ্জিং মিল্কের পরিবর্তে চালের গুঁড়ো, বেসন ও শসার রস দিয়ে ঘরে তৈরি ক্লিঞ্জিংও ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে উপকার বেশি হবে।
সেই সঙ্গে সপ্তাহে এক দিন অথবা দুদিন ত্বকে টোনিং করতে হবে। কাঁচা দুধ অথবা ডাবের পানি দিয়ে টোনিং করা যায়।

মুখের ত্বক নিয়মিত পরিষ্কার করুন, মিষ্টি খাবার অল্প খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুনময়েশ্চারাইজার
সুস্থ ও সুন্দর ত্বকের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো পানি। সাধারণত ত্বকের ভেতরের অংশ থেকে পানি ওপরের স্তরে এসে ত্বকের লাবণ্য ধরে রাখে। ত্বকে পানির অভাব হলেই ত্বক হয়ে পড়ে শুষ্ক ও খসখসে। ময়েশ্চারাইজার ত্বকের নিচের স্তর থেকে পানিকে ওপরের স্তরে আনার কাজ করে থাকে। প্রতি রাতেই ত্বক পরিষ্কার করার পরে মুখে ময়েশ্চারাইজার লোশন লাগাতে হবে। মুখের ত্বকের জন্য ক্রিম ব্যবহারের সময় খেয়াল রাখুন—

* ময়েশ্চারাইজার যেন অবশ্যই মুখের ত্বকের মানানসই হয়।
* ময়েশ্চারাইজারের ধরনটি হতে হবে হালকা, অর্থাৎ ঘন বা কোনো প্রকার তেলযুক্ত হওয়া চলবে না।

হাত-পায়ের যত্ন

শুধু মুখের ত্বকের প্রতি যত্নবান হলেই চলবে না। সেই সঙ্গে যত্ন নিতে হবে হাত ও পায়ের। শোবার আগে অবশ্যই পুরো হাত-পা পরিষ্কার করে ধুতে হবে। সারা দিনের বিভিন্ন কাজে হাত-পায়ে অনেক ধুলোবালি ও ময়লা জমে থাকে। সেগুলো পরিষ্কার করতে হবে। এরপর হাত-পায়ে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে। তবে এই ময়েশ্চারাইজার অপেক্ষাকৃত ঘন প্রকৃতির হবে। হাতের কুনুই, পায়ের গোড়ালিতে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগালে ত্বক নরম হয়। এ ছাড়া কেউ চাইলে হাতের জন্য আলাদা হ্যান্ড ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।

ঠোঁট

ঠোঁটের যত্নটা একটু আলাদা। কেননা, এর ত্বক সবচেয়ে কোমল। প্রতিদিন রাতে যাদের ঠোঁট ফাটে, তারা তো অবশ্যই, যাদের ফাটে না, তাদেরও উচিত আঙুল দিয়ে আলতো ঘষে ঠোঁট পরিষ্কার করে এতে লিপ বাম লাগিয়ে ঘুমানো।

চোখ

চোখের চারপাশের ত্বক মুখের ত্বকের তুলনায় পাতলা হয়। সে কারণে সম্ভব হলে ভিটামিন এ, সি, ই অথবা কে যুক্ত আই ক্রিম ঘুমানোর আগে ব্যবহার করা। এটি চোখের নিচের কালো দাগ দূর করে।

দাঁত

নিয়মিত রাতে ঘুমানোর আগে দাঁত ব্রাশ করা উচিত। এতে দাঁতের ফাঁকে খাবারের কণা জমে থাকতে পারে না।
এ তো গেল ত্বকের বাহ্যিক পরিচর্যার কথা। রাতের বেলা ত্বকের পরিচর্যার পাশাপাশি খাবার গ্রহণের পরিমাণ ও সময়ের দিকেও রাখতে হবে। পরিপূর্ণ পরিচর্যা তখনই হবে যখন ত্বকের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ দুটোই সমান গুরুত্ব পাবে। গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সাজেদা আক্তার জানালেন, কিশোরী বয়সটাতে মেয়েদের খাবারে প্রোটিন ও আয়রন থাকতে হবে। এক গ্লাস দুধ ও একটি ডিম তো আবশ্যক। সেই সঙ্গে সপ্তাহে অন্তত একদিন হলেও গরুর/খাসির কলিজা খেতে হবে লেবু দিয়ে। এ ছাড়া যে কাজগুলো করা উচিত:
* রাত আটটার মধ্যে রাতের খাবারের পর্ব চুকিয়ে ফেলতে হবে।
* রাত আটটার পর থেকে ভারী খাবার খাওয়া যাবে না। পানিও পরিমাণে কম খেতে হবে।
* ১২টায় ঘুমালে, রাত ১০টা সাড়ে ১০টার দিকে হালকা খাবার খেতে হবে। মিষ্টি জাতীয় যেমন: পুডিং, পায়েস, দুধ বা মিষ্টি দধি অল্প পরিমাণে খাবেন।
* রাতের খাবারের পর থেকে আধা গ্লাস-এক গ্লাসের বেশি পানি পান না করাই উত্তম।
* আট ঘণ্টা ঘুম এই বয়সে আবশ্যক।
* হাসিখুশি থাকা এই বয়সটাতে সবচেয়ে জরুরি। মানসিকভাবে যেমন প্রয়োজন, তেমনি হাসিখুশি থাকাটা শরীরের জন্যও উপকারী। কিশোরী বয়সে হাসিখুশি একটা মুখ। প্রাণবন্ত ও লাবণ্যময়ী হতে আর কী লাগে!
সুস্থ থাকতে পরিমিত ঘুম জরুরিআরও টিপস
শোবার আগে বালিশের কভার পাল্টিয়ে বা বালিশের ওপর একটা ধোয়া কাপড় বিছিয়ে নিতে পারেন। বালিশের কভারে জমে থাকা ধুলোবালি ত্বকের ক্ষতি করতে পারবে না।

চুলের যত্ন

প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে চুল ভালো করে আঁচড়িয়ে বেঁধে ঘুমালে চুল দ্রুত বাড়ে। সুন্দরও থাকে। চুলে বেণি করেই ঘুমোতে হবে তা নয়, উঁচু করে জাপানিজ পনিটেইল অর্থাৎ ঝুঁটি করেও শোয়া যায়। চুল যদি কেউ একেবারেই বাঁধতে না চায়, তাহলে একটি কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে ঘুমোতে পারে। এটি চুলকে আগা ফাটা থেকে রক্ষা করবে। সেই সঙ্গে সকালে চুলে এনে দেবে একটা ওয়েভি ভাব। এতে চুল ঘন দেখাবে।

পানি চিকিৎসা

মুখে সজোরে, শব্দ করে একনাগাড়ে ২৫ বার পানির ঝাপ্টা দেওয়া। দিনে যতবার খুশি ততবার। প্রতিদিন করতে পারেন। চেহারার সতেজ ভাব ধরে রাখবে আজীবন।

বয়স ধরে রাখার কিছু গোপন কৌশল

একটু সচেতন হলেই চেহারার লাবণ্য ও সৌন্দর্য ধরে রাখা যায় দীর্ঘদিন-

১. দীর্ঘদিন তারুণ্য ধরে রাখার জন্য প্রয়োজন শৃঙ্খলা। সুশৃঙ্খল জীবনযাত্রা, স্বাস্থ্যকর খাবার, হাঁটাচলা, ব্যায়াম, ইতিবাচক চিন্তা করা, মনকে প্রফুল্ল রাখা এসব কিছুই চেহারায় তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে।

২. বয়সের সাথে ত্বক পাতলা এবং শুষ্ক হয়। তাই ভিটামিন এ, সি এবং ই সমৃদ্ধ খাবার নিয়মিত খেতে হবে।

৪. সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে নিজেকে দূরে রাখা প্রয়োজন। এতে যে ত্বক সহজে বুড়িয়ে যায় তা নয়, এর ফলে ত্বকে ক্যানসারও হতে পারে। তাই যতটা সম্ভব দূষণ থেকে নিজেকে দূরে রাখা এবং বাইরে থেকে ফিরে গোসল বা ভালো করে হাত-মুখ ধোয়া উচিত।

৫. সুস্থ আর সুন্দর থাকতে খাওয়া-দাওয়ার ভূমিকা অনেক। মানুষের শরীরে প্রোটিন, ভিটামিন, শর্করা, মিনারেল- এগুলোর দরকার। সব কিছুই খাওয়া উচিত, তবে একটা পরিমিতিবোধ থাকতে হবে। প্রচুর শাক-সবজি, ফল-মূল খাবার তালিকায় থাকা প্রয়োজন।

৬. শুধু সুন্দর মুখ আর টানটান ত্বকই তারুণ্যের চাবিকাঠি নয়। শরীরটাও থাকতে হবে টানটান; আর সেজন্য চাই নিয়মিত কিছুক্ষণ শরীরচর্চা বা ব্যায়াম এবং মুক্ত বাতাস সেবন।

৭. সৌন্দর্য চর্চা বা তারুণ্য ধরে রাখতে গ্রিন-টি বা সবুজ চায়ের জুড়ি নেই। এতে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। নিয়মিত গ্রিন-টি পান শরীরে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

৮. অপ্রয়োজনীয় চাপ এড়িয়ে চলুন। অ্যালকোহল, ধূমপান পুরোপুরি ছেড়ে দিন আর দিনে অন্তত একবার প্রাণ খুলে হাসুন। ভালো বই পড়ুন, গান শুনুন। প্রকৃতির সাথে সম্পর্ক রাখুন, হিংসা, বিদ্বেষ ভুলে গিয়ে পারলে অন্যের উপকার করার চেষ্টা করুন।

ত্বক ও চুলের যত্নে মেথির উপকারিতা

১। খুশকি দূর করে

চুলের একটি সাধারণ সমস্যা হচ্ছে খুশকি যা মাথার তালুর মরা চামড়ার কারণে হয়। আপনি যদি অ্যান্টি-ডেন্ড্রাফ শ্যাম্পু ব্যবহার করে ক্লান্ত হয়ে থাকেন তাহলে প্রাকৃতিক শক্তি ব্যবহার করার এখনই সময়। আর সেই প্রাকৃতিক শক্তি হচ্ছে মেথি। মেথি বীজ সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন নরম হওয়ার জন্য। সকালে নরম মেথি বীজ পিষে পেস্ট করে নিন। ভালো ফল পেতে মেথির পেস্টের সাথে টকদই মিশিয়ে নিতে পারেন। এই মিশ্রণটি চুলের গোড়ায় ভালো করে ম্যাসাজ করে লাগান। ৩০ মিনিট পরে চুল ধুয়ে ফেলুন এবং খুশকিকে বিদায় বলুন।

২। ব্রণ নিয়ন্ত্রণ করে

মেথি বীজ ব্রণের বিস্তারকে প্রতিরোধ করে এবং ব্ল্যাকহেডস দূর করতেও সাহায্য করে। ত্বকের এপিডারমিস স্তরে জড়ো হওয়া বিষাক্ত উপাদানকে বাহির করে দেয়। এছাড়াও ব্রণের দাগকে হালকা করতে এবং পোড়াদাগ দূর করতেও সাহায্য করে মেথি বীজ। মেথি বীজের পেস্টের সাথে মধু যোগ করে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট মুখের ব্রণের উপর লাগিয়ে সারারাত রাখুন এবং সকালে কুসুম গরম পানি দেয়ে ধুয়ে ফেলুন। কয়েকদিনের মধ্যেই পার্থক্য দেখতে পাবেন।

৩। ওজন কমতে কার্যকরী

মেথি বীজে ফাইবার থাকে যা পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। খালি পেটে মেথি বীজ চিবালে ক্ষুধা কমে। এছাড়াও ২ গ্লাস পানিতে ১ টেবিল চামচ মেথি বীজ ভিজিয়ে রাখুন সারারাত। এই মেথি ভেজানো পানি পান করলে শরীরে পানি জমা বা পেট ফাঁপার সমস্যা দূর করে।

৪। দীপ্তিময় ত্বক পেতে সাহায্য করে

মেথি বীজ শরীরের ফ্রি র‍্যাডিকেল ধ্বংস করতে সাহায্য করে যা রিঙ্কেল, ফাইন লাইন এবং ডার্ক স্পটের মত ফেসিয়াল প্রবলেমের জন্য দায়ী। মেথি বীজ স্কিনটোন হালকা হতে সাহায্য করে। মেথির পেস্ট, মেথি ভেজানো পানি, বেসন এবং দই এর ফেসপ্যাক ত্বকের মরা চামড়া ও ডার্ক সার্কেল দূর করতে সাহায্য করে।

৫। পরিপাকে সাহায্য করে

বুক জ্বালাপোড়া করা ও পরিপাকের সমস্যা সমাধানে কার্যকরী প্রতিকার হচ্ছে মেথি বীজ খাওয়া। মেথির পেস্টের সাথে আদা কুঁচি মিশিয়ে খাওয়ার পূর্বে ১ টেবিল চামচ করে খান।

৬। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে

মেথি বীজ রক্তের চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। মেথির এমাইনো এসিড অগ্নাশয়ের ইনসুলিন নিঃসরণকে উৎসাহিত করে যা ব্লাড সুগার লেভেল কমতে সাহায্য করে। মেথি বীজ খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ উন্নতি ঘটায় বলে গবেষণায় জানা যায়।
এছাড়াও জাদুকরী গুণের অধিকারী মেথি বীজ খেলে কিডনি পাথর প্রস্রাবের মাধ্যমে বাহির হয়ে যায়, জ্বর কমতে সাহায্য করে মেথি বীজ এবং মেয়েলি সমস্যা সমাধানেও সাহায্য করে মেথি বীজ।

শরীর ভালো রাখতে প্রতিদিন দই খান

আসুন আজ জেনে নিন দইয়ের ১০ টি গুণাবলীঃ

১/ দইয়ের মধ্যে আছে ল্যাকটিক অ্যাসিড যা কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে।

২/ উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা মেটাতে পারে দই।

৩/ দই দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ফলে খুব সহজেই জ্বর কিংবা ঠান্ডা লেগে যাওয়ার সমস্যা কমে যায়।

৪/ দই শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে। ফলে প্রচন্ড গরমের সময়ে দই খেলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।

৫/ ওজন জনিত সমস্যায় ভুগলে অবশ্যই দই খান- উপকার পাবেন।

৬/ দই এ আছে প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি। ফলে নিয়মিত দই খেলে দাঁত ও হাড় মজবুত থাকে।

৭/ টক দই রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়।

৮/ দই রক্ত থেকে বিষাক্ত উপাদান কমিয়ে দিয়ে রক্তকে বিশুদ্ধ করে তোলে।

৯/ দই হজমে সহায়ক তাই রোজ পরিমিত পরিমান দই খেলে হজম ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমে যায়।

১০/ সম্প্রতি গবেষনা থেকে জানা গেছে প্রতিদিন পরিমিত দই খেলে ক্যান্সারের মত মারনরোগ আটকানো যায়।

যেভাবে দূর করবেন পায়ের কালো দাগ

  • সঠিক মাপের জুতা পরুন

পায়ের দাগের অন্যতম একটি কারণ হলো আকারে ছোট কিংবা শক্ত জুতা পরার কারণে। তাই পায়ের জন্য সঠিক মাপের জুতা বেছে নিন। সেই সঙ্গে জুতার ভেতরে ফোম দেয়া, কাপড়ের কিংবা নরম চামড়ার জুতা পরুন। এতে পায়ে দাগ পড়বে না।
  • সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন

জুতার বদলে স্যান্ডেল পরলে সরাসরি রোদ লাগে পায়ে। ফলে পায়ে রোদে পোড়া ছোপ ছোপ দাগ পড়ে যায়। আর এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পায়েও ব্যবহার করতে হবে সানস্ক্রিন। এতে সূর্যের ক্ষতিকর প্রভাবমুক্ত থাকবে আপনার সুন্দর পায়ের পাতাগুলো।
  • পা ঢেকে রাখুন

দাগমুক্ত সুন্দর পায়ের জন্য পা ঢাকা জুতা পরুন কিংবা সবসময়ে মোজা পরুন। এতে পায়ে পোড়া দাগ পরবে না কিংবা ধুলা ময়লা লেগে পায়ে ছোপ ছোপ দাগ পরবে না।
এবার আসা যাক, ঘরোয়া উপায়ে  কি করে পায়ের ফুল কেয়ার নেয়া যায় –
  • স্ক্র্যাবিং

পায়ের দাগ দূর করার জন্য স্ক্র্যাবিং এর জুড়ি নেই। স্ক্র্যাবিং পায়ের ত্বকের ডেড সেল দূর করে এবং জমে থাকা ধুলা ময়লা পরিষ্কার করে। ফলে পায়ের ছোপ ছোপ দাগ দূর হয় এবং রুক্ষতা কমে যায়। স্ক্র্যাবিং এর জন্য বেকিং পাউডার, ওটমিল, চিনি কিংবা লবন ব্যবহার করতে পারেন।
  • লেবুর রস কিংবা টমেটোর রস

লেবুর রস এবং টমেটোর রস হলো প্রাকৃতিক ব্লিচিং উপাদান। তাই পায়ের ত্বকের পোড়া দাগ দূর করতে এবং পায়ের রং উজ্জ্বল করে তুলতে এই উপাদান দুটির জুড়ি নেই। লেবুর রসে সামান্য পানি মিশিয়ে কিংবা সসার রস মিশিয়ে পায়ে লাগিয়ে ১ ঘন্টা পরে ধুয়ে ফেলুন। কিংবা টমেটোর রস লাগিয়ে রেখে ১ ঘন্টা অপেক্ষা করে হালকা ঘষে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে তিনবার ব্যবহার করলে পায়ের ত্বক উজ্জ্বল হবে ধীরে ধীরে।
  • অ্যালোভেরা জেল

অ্যালোভেরা ত্বকের যেকোনো দাগ দূর করে। আর তাই পায়ের দাগ দূর করতে এবং পায়ের ময়েশ্চারাইজিং এর জন্য ব্যবহার করতে পারেন অ্যালোভেরা জেল। প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অ্যালোভেরা জেল পায়ের ত্বকে লাগিয়ে মোজা পড়ে ঘুমিয়ে যান। সকালে ঘুম থেকে উঠে পা ধুয়ে ফেলুন। কিছুদিন ব্যবহার করলেই পার্থক্য বুঝতে পারবেন আপনি।
  • আলুর রস

আলুও ত্বকের দাগ দূর করে সহজেই। আলু ব্লেন্ড করে রস ছেকে পায়ে লাগিয়ে রাখুন ১ ঘন্টা। এরপর পা ধুয়ে ফেলুন। সহজেই কাজটি করতে চাইলে আলু স্লাইস করে কেটে ঘষে ঘষে পায়ের ত্বকে লাগিয়ে নিন। এরপর ১ ঘন্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন ঠান্ডা পানি দিয়ে। সপ্তাহে তিন থেকে চারবার ব্যবহার করুন।