ব্রণের সমস্যা নিয়েও মেকআপ করার গুরুত্বপূর্ণ টিপস

১) অনেকের ত্বকে খুব সহজেই ব্রণ ওঠে। তারা সাধারণ মেকআপ ব্যবহার না করে নন-কমোডোজেনিক বা নন-অ্যাকনিজেনিক পণ্যগুলো ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো ত্বকের পোর বা রোমকূপ বন্ধ করে না ফলে ব্রণের ভয় কমে যায়।

২) পাউডার ধরণের মেকআপ কম ব্যবহার করুন। তার বদলে বেছে নিন ওয়াটার বেসড লিকুইড মেকআপ। যেমন লিকুইড ফাউন্ডেশন এবং ব্লাশ।

৩) ভারী ধরণের ফাউন্ডেশন ব্যবহার করবেন না। এর বদলে ব্যবহার করুন একেবারেই হালকা ফাউন্ডেশন। টিন্টেড ময়েশ্চারাইজারগুলো এক্ষেত্রে বেশি ভালো কাজ করে।

৪) ওয়াক্স আছে এমন পণ্য, অথবা স্টিক, প্যানকেক, পাউডার ধরণের ফাউন্ডেশনগুলো ব্যবহার না করাই ভালো কারণ এগুলো ব্রণের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।

৫) নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন আপনার মেকআপ ব্রাশ এবং স্পঞ্জ। কিছুদিন পরপর এগুলো পরিবর্তন করাতাও ভালো। কারণ পরিষ্কার না করলে আপনার ত্বকের ব্যাকটেরিয়া এবং অতিরিক্ত মেকআপ এগুলোতে লেগে থাকে। ফলে ত্বকে মারাত্মক ব্রণের উপদ্রব হতে পারে।

৬) আলতো হাতে মেকআপ দিন। বেশি দ্রুত বা ঘষাঘষি করে মেকআপ দিতে গেলে ত্বকের আরও বেশি ক্ষতি হবে। ত্বকে যতো কম হাত দেওয়া যায় তত ভালো।

৭) ত্বক কখনো বেশি শুষ্ক হতে দেবেন না। ত্বক শুকনো রাখলে তা অতিরিক্ত তেল উৎপাদন করবে এবং আরও বেশি বাড়বে ব্রণ। সারাদিন যেন ত্বক আর্দ্র থাকে তার জন্য হালকা একটি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন দিনে শুরুতেই।

৮) মেকআপ শুরুর আগে অয়েল ফ্রি প্রাইমার ব্যবহার করতে পারেন। এতে তা ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল শুষে নেবে আর সারাদিন মেকআপ ধরে রাখবে।

৯) ব্রণ ঢাকতে ব্যবহার করতে পারেন ম্যাট মেকআপ। গ্লসি মেকআপ ব্যবহার করলে ব্রণ আরও বেশি প্রকট হয়ে ফুটে ওঠে। ম্যাট মেকআপ এগুলোকে ঢেকে দেয় সহজেই।

১০) সম্ভব হলে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি মেকআপ ব্যবহার করুন। এগুলো ত্বককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।

১১) কিছু কিছু ফাউন্ডেশন ব্রণের প্রকোপ কমাতে সাহায্য করে। এগুলোতে থাকে স্যালিসাইলিক এসিড। সম্ভব হলে এগুলো ব্যবহার করুন।

১২) মেকআপে ডাইমেথিকোন থাকলে তা ব্যবহার করা ভালো এমন ত্বকের মানুষের। কারণ তা ব্রণ ঢাকতে সাহায্য করে।

ব্ল্যাকহেডস দূর করার ঘরোয়া উপায়

উপকরণ

১টা ডিমের সাদা অংশ
১/২ লেবুর রস
১ চা চামচ মধু

পদ্ধতি

প্রথমে মুখে গরম পানির ভাপ নিন। শুকনো টাওয়েল দিয়ে আলতো করে মুখ মুছে নিন।
 ডিমের সাদা অংশ, লেবুর রস ও মধু একটি বাটিতে ভালো করে মিশিয়ে নিন। 
আঙ্গুল দিয়ে পুরো মুখে ম্যাসাজ করে লাগিয়ে নিন ফেস প্যাকটি। 
১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন শুকানোর জন্য। 
শুকিয়ে গেলে নরম একটি বেবি টুথ ব্রাশ দিয়ে ঘষে ঘষে তুলে ফেলুন। 
বিশেষ করে আক্রান্ত স্থান গুলো।
 এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। 
এতে রোমকূপ গুলো বন্ধ হয়ে যাবে। 
আলতো করে মুখ মুছে ১ ফোটা অলিভওয়েল লাগিয়ে নিন পুরো মুখে। 
সপ্তাহে দুবার করে এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে ব্ল্যাকহেডসের যন্ত্রণা থেকে ত্বক থাকবে মুক্ত, বারবার ফিরেও আসবে না।

প্রাকৃতিক উপায়ে কার্যকরী রূপচর্চা

১. আটা

ক. রান্না ঘরের আটা আপনার ত্বক পরিচর্যায় অনেক সহায়ক হতে পারে। যেধরনেরই ত্বক হোক না কেন, আটা সব ত্বকের জন্যেই ভালো কাজ করে। ১ টেবিলচামচ পরিষ্কার আটা নিয়ে তার সাথে গরুর কাঁচা দুধ, একটু কাঁচা হলুদ বাটা মিশিয়েমুখে মেখে ১০/১৫ মিনিট রেখে মুখ ধুয়ে ফেলবেন।
খ. আটা পানিতে ফুটিয়ে পেস্টের মতো করে মুখমন্ডলে লাগালে মুখের ছিটছিট তিলে দাগ অনেক হালকা হয়ে যায়।
গ. বেসনের মতো আটা হাতে নিয়ে পানি দিয়ে পেস্ট করে মুখে লাগিয়েসাবানের মতো মুখ পরিষ্কার করা যায়।
ঘ.দুধের সরের সাথে আটা ও কাঁচা হলুদ মিশিয়ে মুখে মেখে ১৫ মিনিট রেখেধুয়ে ফেলবেন।

২. হলুদ

হলুদের গুণের কথা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। রূপচর্চায় হলুদের ভূমিকাঅনেক। অতীতে নানী-দাদীরাও হলুদ ব্যবহার করতেন। নানান রোগের জন্যে কাঁচাহলুদের রসও খেতেন। ঘরোয়া চিকিৎসাতেও হলুদের অবদান অনেক।
অনেক ফেসপ্যাক কাঁচা হলুদ দিয়ে তৈরি করা হয়। অনেকের গায়ের রং ফ্যাকাসেসাদা। তারা যদি একটু কাঁচা হলুদ বেটে তার সাথে অলিভ অয়েল মিশিয়ে গায়ে, হাতে এবং পায়ে মেখে প্রতিদিন গোসল করেন, তাহলে দেখবেন ফ্যাকাসে ভাবনেই। সুন্দর সোনা বর্ণের আভা চলে আসছে দেহে। কাঁচা হলুদের সাথে দুধের সরওমিশিয়ে নিতে পারেন।
হলুদ লোমনাশক, নিয়মিত মাখলে শরীরের লোম বাড়ে না। এতে ওয়াক্সিং-এর কাজহয় ভালো। আগেকার দিনে মা-দাদীরা কাঁচা হলুদ বাটার সাথে নিম পাতা বেটে বড়িবানিয়ে রোদে শুকিয়ে রাখতেন। তারপর প্রতিদিন বাসি পেটে খেতেন। এতে পেটেরদোষ হতো না, লিভার ভালো থাকতো। এতে মুখে লিভার স্পট পড়ে না। অনেকমেয়েলি অসুখেও ফল পাওয়া যায়। কাঁচা হলুদ আখের গুড়ের সাথে খালি পেটেখেলে রক্ত পরিশোধিত হয় বলে স্বাস্থ্য রক্ষা ও রূপচর্চায় হলুদের দান অতুলনীয়।

৩. ডাব

ক.ডাবের পানিতে ১৯টি খনিজ উপাদান রয়েছে। প্রতিদিন অন্ততপক্ষে দুটোডাব খেলে ত্বকের কমনীয়তা বাড়ে।
খ.বসন্ত হলে কচি ডাবের পানি দিয়ে মুখ ধুলে দাগ চলে যায়।
গ. মুখে ব্রণের দাগ হলে ডাবের পানি দিয়ে ধুলে দাগ চলে যায়।
ঘ.একটু তুলো ডাবের পানিতে ভিজিয়ে মুখে লাগিয়ে শুকোতে দিন। তারপরহাত দিয়ে আস্তে আস্তে মুখ ঘষে দেবেন। এতে মুখে সুন্দর উজ্জ্বল একটা ভাব চলেআসবে। মুখের ত্বক কোমল ও মসৃণ হবে।
নানী-দাদীরা সেকালে নারকেল দিয়ে চুল ধুতেন। এতে চুলের উজ্জ্বলতা যেমনবাড়তো তেমনি চুলও পড়তো না। অনেক সময় ঝুনো নারকেল নষ্ট হয়ে যায়। এইনষ্ট নারকেল না ফেলে শিলে পিষে মাথায় ঘষে দিয়ে ঘণ্টা খানেক পরে মাথা ধুলে চুলশুকোনোর পর দেখবেন চুল তেল দেয়ার মতো হয়েছে। চুলের পরিচর্যায় নারকেলবেশ উপকারী।
ঙ.একটা নারকেলের অর্ধেক নিয়ে কুড়িয়ে আধা কাপ অথবা এক কাপ গরমপানির সাথে ভালো করে চটকে দুধ বের করে নিয়ে পরিষ্কার দুধের সাথে একটাকাগজী লেবুর রস মিশিয়ে মাথায় বিলি কেটে চামড়ায় ভালো ভাবে ম্যাসাজ করে২০-৩০ মিনিট রেখে হালকা গরম পানিতে চুল ধুয়ে নিন। এ পদ্ধতি সপ্তাহে একদিনকরলে চুল ওঠা বন্ধ হবে। তারপরেও চুল উঠলে ভিটামিন ও আয়রন খেতে হবে।ক্যালসিয়ামের অভাবেও চুল ওঠে। সেজন্যে ডাক্তারের পরামর্শে ক্যালসিয়াম খেতেপারেন।

৪. গোলাপ জল

গোলাপ জল চেনে না এমন লোক বোধ হয় খুঁজে পাওয়া যাবে না। বিয়ে বাড়ি বলুন, মিলাদ মাহফিল বলুন, রূপচর্চা বলুন- গোলাপ জলের চাহিদা আছেই। রান্না-বান্নায়গোলাপ জল তো চাই-ই চাই। গোলাপ ফুলের নির্যাস থেকেই এ পানি বানানো হয়।পানি সুগন্ধি করতে গোলাপ জলের দরকার হয়। গ্লিসারিনের সাথে সমপরিমাণগোলাপ জল মিশিয়ে ঠোঁটে মাখলে ঠোঁট ফাটে না এবং ঠোঁটের রং-ও সুন্দর হয়।গোলাপ জল দিয়ে স্কিন-ফ্রেশনার টনিক আপনি নিজেই বানাতে পারেন। আধা কাপগোলাপ জল, একটা লেবুর রস, ক-ফোঁটা মধু একত্রে মিশিয়ে নিলে স্কিন-ফ্রেশনারটনিক হয়ে গেল।
এ টনিক দিনে দুবার তুলোয় করে মুখে লাগাতে পারেন। যাদেরমুখের চামড়া খসখসে তারা রাতে মুখ ভালো ভাবে ধুয়ে সমপরিমাণ গোলাপ জলেরসাথে গ্লিসারিন মুখে, হাতে এবং পায়ে মেখে নিতে পারেন। ভোরে কুসুম গরম পানিদিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলবেন। এতে মুখের খসখসে ভাব থাকবে না এবং ত্বক কোমলহবে।

৫. মধু

মধুর গুণের কথা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। মধু এবং দুধকে বলা হয়বেহেশতের নিয়ামত। মধু ত্বকের জন্যে খুবই উপকারী। বহু ফেসপ্যাক মধু দিয়েতৈরি হয়। কয়েক ফোঁটা মধু ও কাঁচা দুধ একত্রে মুখে মাখলে মুখের রং উজ্জ্বল, কোমল ও মসৃণ হয়।
মধু ও বেসন একত্রে মিশিয়ে ফেসপ্যাক বানিয়ে মুখে মেখে ১৫/২০ মিনিট রেখেহালকা গরম পানি ও পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুলে মুখের ত্বক খুব সুন্দর ও মসৃণ হয়।
কয়েক ফোঁটা মধু + কয়েক ফোঁটা লেবুর রস + ১ চা চামচ গাজরের রস + ১ চাচামচ ছোলার ডালের বেসন একত্রে পেস্টের মতো করে মুখে মেখে ২০/৩০ মিনিটরেখে স্বাভাবিক পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন মুখ মসৃণ ও কোমল হয়ে উঠবে।এ প্যাকটি শুষ্ক ও স্বাভাবিক ত্বকের জন্যে উপকারী।
মধু খেলেও নানা রোগের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়। মধু কফনাশক। প্রতিদিন১ চামচ মধু খেলে ঠান্ডা লাগতে পারে না। আয়ুর্বেদী বহু চিকিৎসায় মধু ব্যবহৃত হয়।বাসক পাতার রসের সাথে কয়েক ফোঁটা মধু নিয়মিত খেলে ঘুম ভালো হয়।

৬. খাবার সোডা

খাবার সোডা রুটি, বিস্কুট, চটপটি ইত্যাদি বহুবিধ রান্নায় ব্যবহার হয়ে থাকে। কিন্তুরূপচর্চা বা কোনো কিছু পরিষ্কার করার কাজেও যে সেটি ব্যবহার হয় তা হয়তোঅনেকেই জানেন না। রূপোর গয়না একটু খাবার সোডা দিয়ে ব্রাশ করে ধুলেদেখবেন ঝকঝকে হয়ে উঠছে। অনেকের মুখের দাঁত দেখতে হলদেটে ভাব। তারাযদি একটু খাবার সোডা দাঁত মাজার ব্রাশের ওপর নিয়ে মেজে নেন, তাহলে দেখবেনদাঁতগুলো মুক্তোর মতো ঝকঝকে হয়ে উঠেছে। তবে, এ পদ্ধতিটি আপনি রোজকরতে যাবেন না। এতে মাঢ়ির ক্ষতি হবে।

৭. আলু

শুধু রান্না-বান্না, খাবার-দাবারে যে আলুর ব্যবহার হয় তা নয়। রূপচর্চায় আলুরঅবদান একেবারে কম নয়। অনেকে গায়ের রং ফর্সা করার জন্যে নানান জিনিসব্যবহার করে থাকেন। তারা হয়তো অনেকেই জানেন না আলু ব্যবহার করেওশরীরের রং উজ্জ্বল করা যায়। গোল আলু খোসাসহ গোল গোল করে কেটে নিয়েকিছুক্ষণ ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে রেখে তারপর পানি থেকে তুলে হাতে পায়ে মুখেগলায় ঘষে ঘষে মেখে নিয়ে কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন। এভাবে নিয়মিত করলেদেখবেন গায়ের রং উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।

৮. ডিম

সৌন্দর্য চর্চায় ডিম এক অতুলনীয় ভূমিকা পালন করে। ডিম দিয়ে মাথা ধোয়া,ডিমের তৈরি প্যাক বিভিন্নভাবে ত্বকের জন্যে ব্যবহার হয়ে থাকে। ডিমের প্যাকেমুখের লাবণ্য ফিরে আসে। ডিমের কুসুমের প্যাক শুকনো ত্বকের পক্ষে খুবই ভালো।শুকনো ত্বকের জন্যে ডিমের কয়েকটি প্যাক :
ক.ডিমের হলুদ অংশ + আধা চা চামচ অলিভ অয়েল + কয়েক ফোঁটা লেবুররস। এ প্যাকটি মুখ ধুয়ে, পরিষ্কার মুখে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পরে প্রথমেহালকা কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুয়ে ও পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিলে ত্বকেরজন্যে খুবই ভালো ফল হবে।
খ.ডিমের কুসুম ও তার সাথে অ্যালমন্ড অয়েল অথবা অলিভ অয়েল আধাচা চামচ মিশিয়ে মুখে মেখে ১৫ মিনিট রেখে প্রথমে হালকা কুসুম গরম পানি, পরেঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। সাধারণত সপ্তাহে ২/৩ দিনের বেশি লাগানোরদরকার নেই। এতে আপনার ত্বক সতেজ হয়ে উঠবে।

৯. ময়দা

প্রত্যেক বাড়িতেই রান্না ঘরে ময়দা পাওয়া যায়। আর এ ময়দা রূপ চর্চার কাজেব্যবহার করে আপনি হতে পারেন রূপবতী নারী। সাবানের পরিবর্তে ময়দা পানিতেগুলিয়ে হাতে, পায়ে ও মুখে মেখে গোসল করতে পারেন। আবার ময়দা + কাঁচা হলুদবাটা + দুধের সর মিশিয়ে হাতে, পায়ে, মুখে আস্তে আস্তে মেখে প্রথমে হালকা কুসুমগরম পানিতে, পরে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে নিলে দেখবেন গায়ের রং কিছু দিনের মধ্যেউজ্জ্বল হয়ে উঠছে।

১০. পেঁয়াজ

রূপচর্চায় পেঁয়াজের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। বহু রোগ সারাতেও পেঁয়াজের জুড়িনেই। কাঁচা পেঁয়াজে ভিটামিন-বি ও ভিটামিন-সি রয়েছে। কাঁচা পেঁয়াজের রস ওআদার রস সমপরিমাণে নিয়ে সামান্য গরম করে ১ বা ২ চা চামচ খেলে নতুন সর্দিরউপশম হয়। যদি কারো নাক থেকে অনবরত পাতলা পানির মতো শ্লেষ্মা পড়েতাহলে কাঁচা পেঁয়াজ ও আদা সামান্য তেলে ভেজে নিয়ে খেলে শ্লেষ্মা ঘন হয়।মাথার খুশকিতে কাঁচা পেঁয়াজের রস ওষধি হিসেবে কাজ করে। তাছাড়া কাঁচাপেঁয়াজের সাথে সামান্য কয়েকটি সর্ষে বেটে মাথায় বিলি কেটে দিলে নতুন চুলগজায়।

১১. শসা

শসার গুণের কথা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। শসা যেমন রান্না-বান্নায়, খাওয়া-দাওয়ায় ব্যবহৃত হয় তেমনি ব্যবহৃত হয় রূপচর্চায়।
ক.মুখে কোনো কালো দাগ পড়লে কচি শসার রস মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিটরেখে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে নেবেন। এভাবে কিছুদিন নিয়মিত লাগালে দাগ উঠে যায়।
খ.শসার রসের সাথে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মুখে মেখে শুকিয়ে গেলে ঠান্ডাপানিতে ধুয়ে নিলে মুখের রং উজ্জ্বল ও কোমল হয়। তবে নিয়মিত কিছুদিন করতেহবে।
গঅনেক সময় দেখা যায় চোখের নিচে অনেকেরই কালো দাগ পড়ে। শসাররস নিয়মিত মাখলে এ দাগ দূর হবে।
ঘ.মনে রাখবেন যদি কেউ ফর্সা হতে চান তবে নিয়মিত শসার রসের সাথেকয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে মুখে, হাতে ও গায়ে নিয়মিত মাখলে গায়ের রংফর্সা হয় অথবা শসা পাতলা পাতলা করে কেটে মুখে ঘসে নিতে পারেন। পরেশুকোলে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে নেবেন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্যে শসা খুবই উপকারী।তবে কাঁচা ব্রণের ওপর লেবুর রস লাগালে দাগ হয়। তার জন্যে শুধু শসার রসইভালো।
ঙ.মুখকে রোদ থেকে বাঁচাতে, মুখের দাগ তুলতে ও ময়লা থেকে যদি রেহাইপেতে চান তবে শসার সাহায্যে একটি ফেসপ্যাক বানিয়ে ২৫/৩০ মিনিট রেখেপ্রথমে গরম পানি, পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিয়ে আপনি নিশ্চিন্তে বাইরে বেড়িয়েআসতে পারেন। এতে ত্বক সারাদিনের জন্যে যেমন চকচকে, মসৃণ ও কোমলথাকবে তেমনি বাইরের নানান জীবাণু থেকে ত্বক রেহাই পাবে।
এবার জেনে নিন কীভাবে প্যাকটি তৈরি করবেন। একটি কচি শসা পাতলা করেকেটে থেঁতো করে তার সাথে একটি ডিমের কাঁচা কুসুম, এক টেবিল চামচ গুঁড়ো দুধমিশিয়ে মিক্সার মেশিন অথবা ব্লেন্ডারে মিশিয়ে নিয়ে মুখে, গলায় ও হাতে মেখেনেবেন। ব্লেন্ডার না থাকলে হাতেই ভালো করে মিশিয়ে নেবেন।

১২. গাজর

রূপচর্চায় গাজরের এক বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। গাজরে প্রচুর ভিটামিন-এ এবংক্যারোটিন রয়েছে। প্রতিদিন একটি করে কাঁচা গাজর খেলে আপনার শরীরেভিটামিন-এ-এর অভাব হবে না। এতে চোখ, ত্বক- উভয়ের জন্যেই উপকার।আমাদের দেশে শীতকালে প্রচুর গাজর পাওয়া যায় এবং দামও খুব কম থাকে। তাইসস্তায় আপনি প্রচুর ভিটামিন গ্রহণ করতে পারেন। গাজর খেলে দাঁতও চকচকেহয়। গায়ের রং ফর্সা হয়। পায়খানা পরিষ্কার হয়। চুল পড়ে না।
চুলের উজ্জ্বলতাবাড়ে। মনে রাখবেন, ভিটামিন-এ ত্বকের সৌন্দর্যের জন্যে খুবই দরকার আর তাআপনি গাজর থেকে অল্পতেই পেতে পারেন। অর্থাৎ গাজর খেলে আপনার ত্বক চোখদাঁত ঠোঁট চুল- সব কটি অঙ্গেরই উপকার হচ্ছে। আবার গাজর দিয়ে সুন্দরফেসপ্যাকও তৈরি করে নিতে পারেন। এ প্যাক মিশ্র ত্বকের পক্ষে খুবই উপকারী।কীভাবে প্যাক তৈরি করবেন জেনে নিন :
১ টেবিল চামচ অথবা আপনার পরিমাণ মতো ছোলার ডালের বেসন + গাজরের রস+ অলিভ অয়েল কয়েক ফোঁটা নিয়ে পেস্টের মতো বানিয়ে মুখে মেখে ১৫/২০মিনিট রেখে প্রথমে হালকা গরম পানিতে, পরে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলবেন। গাজরদিয়ে আপনি আরও একটি ফেসপ্যাক তৈরি করে নিতে পারেন। এ প্যাক স্বাভাবিকও শুষ্ক- উভয় ত্বকের জন্যেই উপকারী।
১টি (মিহি কোড়ানো) গাজর + ২ চা চামচ গরুর দুধ + ১ চা চামচ বেসন মিশিয়েমুখে মেখে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। কাঁচা গাজর নিয়মিত খেলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।

১৩. টমেটো

শীতকালে আমাদের দেশে প্রচুর টমেটো পাওয়া যায়। এ সময় দামও কম থাকে।টমেটোতে প্রচুর ভিটামিন-সি থাকে। তাই কাঁচা টমেটো খাওয়া খুবই উপকারী।টমেটোতে ভিটামিন-বিও রয়েছে। ভিটামিন-বি, ভিটামিন-সি এগুলো ত্বকের জন্যেবেশ উপকারী। টমেটো খেয়ে এবং ফেসপ্যাক তৈরি করে আপনি রূপচর্চা করতেপারেন অনায়াসে।

ফেসপ্যাক তৈরির পদ্ধতি

মাঝারি ধরনের গোটা তিনেক টমেটোর রসের সঙ্গে ২ চা চামচ গ্লিসারিন, ৩ চামচলেবুর রস, ৪ চামচ অলিভ অয়েল নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে মুখে, গলায় ও হাতে ভালো করে মেখে নিয়ে ১৫/২০ মিনিট রেখে ঠান্ডা পানিতে ধুয়েফেলুন। দেখবেন মুখটি কেমন সুন্দর মনে হচ্ছে।

১৪. বাঁধাকপি

বাঁধাকপিতে রয়েছে ভিটামিন-বি, ভিটামিন-এ ও ভিটামিন-সি। এছাড়া বাঁধাকপিতেভিটামিন-কে-ও রয়েছে। ভিটামিন-কে রক্ত জমাট বাঁধতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।দেহের হাড় গঠন ও পুষ্টিতে ভিটামিন-কে বিশেষ প্রয়োজন। বাঁধাকপিতে সালফাররয়েছে প্রচুর। সালফার আমাদের চুল ও দেহের স্বাভাবিক স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য রক্ষাকরে।
বাঁধাকপির সাহায্যে আমরা মুখের ত্বককে অনায়াসে কোমল করে তুলতে পারি।প্রথমে বাঁধাকপির পরিষ্কার দু-তিনটি পাতা নিয়ে রস বের করুন। এবার এর সঙ্গে ১চামচের চার ভাগের ১ ভাগ ইস্ট মেশান এবং এর সাথে ১ চামচ মধু মিশিয়ে ঘনপেস্টের মতো তৈরি করে নিয়ে সমস্ত মুখে মেখে ১৫ মিনিট রেখে প্রথমে হালকাগরম পানি, পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এছাড়া বাঁধাকপির সাহায্যে সুন্দরস্কিন-ফ্রেশনার টনিক বানাতে পারেন নিজ হাতেই।
প্রথমে বাঁধাকপির কয়েকটিটাটকা পাতা পরিষ্কার করে ধুয়ে নিয়ে কুচিয়ে ১ কাপ পানিতে কুচানো কপি ফুটিয়েভালো করে সেদ্ধ করে সেই পানি ভালো ভাবে ছাঁকনিতে ছেঁকে নিন। তৈরি হয়ে গেলআপনার স্কিন-ফ্রেশনার। মুখ ভালো ভাবে বেসন অথবা সাবান দিয়ে পরিষ্কার করেধুয়ে একটু তুলো ঐ পানিতে ভিজিয়ে সারা মুখে, হাতে ও পায়ে লাগিয়ে নিন এবংশুকোতে দিন। মুখ মুছে ফেলবেন না। এতে এর গুণ নষ্ট হয়ে যাবে। পানি গরমঅবস্থায় দেবেন না। ঠান্ডা করে দেবেন। যেদিন বানাবেন সে দিন ব্যবহার করবেন।বাসি করবেন না।

১৫. লেটুস পাতা

বাঁধাকপির মতো লেটুস পাতায়ও রয়েছে ভিটামিন-সি। এছাড়াও আছে ম্যাঙ্গানিজ।লেটুস হজমকারক। তাই লেটুস পাতা খাওয়া খুবই ভালো। আমরা সালাদে লেটুসব্যবহার করে থাকি। লেটুস দিয়ে আবার স্কিন-ফ্রেশনার টনিকও তৈরি করা যায়।শীতকালে ঘরে বসেই আপনি স্কিন-ফ্রেশনার টনিক বানাতে পারেন। বাঁধাকপিরমতোই লেটুস কুচিয়ে পানিতে ফুটিয়ে ভালো ভাবে সেদ্ধ করে ছেঁকে নিয়ে ঠান্ডা হলেতুলোয় করে মুখে, হাতে ও পায়ে মেখে নিতে পারেন।

১৬. মটর দানা

মটরেও রয়েছে নানান ভিটামিন। মটর খেতে আমরা সবাই ভালবাসি। মটর দিয়েওসুন্দর ফেসপ্যাক তৈরি করা যায়। তৈলাক্ত ত্বকের জন্যে মটরের সাহায্যে আপনিসুন্দর ফেসপ্যাক বানাতে পারেন। মটর প্রসেস করে রেখে বহু দিন ব্যবহার করতেপারবেন।

প্রস্ত্তত প্রণালী

এক কাপ মটর নিয়ে গরুর দুধে সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন। পরেরদিন দুধ থেকে তুলে নিয়ে শুকিয়ে নেবেন এবং এই শুকনো মটর গ্রাইন্ডারে গুঁড়োকরে অথবা শিলপাটায় গুঁড়ো করে রেখে দিতে পারেন। যখন প্রয়োজন হবে কিছুটানিয়ে পানি মিশিয়ে পেস্টের মতো করে মুখে লাগাতে পারবেন। ১৫ মিনিটের মতোমুখে রেখে ধুয়ে ফেলবেন। এ প্যাকটি ব্রণের জন্যে খুবই উপকারী।

১৭. পুদিনা পাতা

পুদিনা পাতার চাটনি অত্যন্ত মজাদার। আর এই পুদিনা পাতা রূপ চর্চারও অনবদ্যউপকরণ। তৈলাক্ত মুখে সারা সময়ই একটা-দুটো ব্রণ লেগে থাকে। আর তা সারাতেপুদিনা পাতার জুড়ি নেই। শীতের সময় এর ফলন হয় বেশি এবং সারা বছরওবাজারে কম-বেশি পাওয়া যায়।

এবার জেনে নিন রূপচর্চায় এর ব্যবহার-

প্রথমে পুদিনা গাছ থেকে শুধু পাতা নিন। ভালো ভাবে ধুয়ে মিহি করে বেটে পেস্টেরমতো বানিয়ে রাতে মুখে ভালো ভাবে লাগিয়ে রেখে দিন। পরের দিন ভোরে মুখ ধুয়েফেলুন। এভাবে মাস খানেক লাগানোর পর দেখবেন আপনার মুখে আর আগের ব্রণনেই। দাগও নেই।
মনে রাখবেন, যেকোনো রূপচর্চাই ধৈর্য ধরে বহুদিন না করলে আপনি তার সঠিকফল ভোগ করতে পারবেন না।

মসুরির ডাল দিয়ে অসাধারণ রূপচর্চা


১। মুখের কালচে ভাব দূর করতেঃ
মসুরির ডালকে রাতে দুধের মধ্যে ভিজিয়ে রাখুন। সকাল বেলায় ডালটা পিষে মুখে লাগান। রোজ যদি মুখে এই প্যাকটা লাগান আপনার চেহারায় কালো ভাবটা দূর হয়ে যাবে। তবে মনে রাখবেন, ডালটা রোজ তাজা তাজা পিষতে হবে আর কাঁচা দুধ ব্যবহার করবেন।

২। ত্বক সতেজ করতেঃ
মসুরির ডাল পিষে তার মধ্যে মধু এবং দই মিশিয়ে মুখে লাগান। ২০ মিনিট পর হালকা ম্যাসাজ করে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার ত্বক সতেজ হবে৷

৩। মুখে বা পিঠের দাগ দূর করতেঃ
যদি মুখে বা পিঠে দাগ হয়, তাহলে মসুরির ডালের সাথে পোলাও চাল মিশিয়ে পেস্ট করুন। এর সাথে চন্দন পাউডার,মুলতানী মাটি, কমলা লেবুর শুকনো গুঁড়ো মিশিয়ে পেস্ট তৈরী করুন। ৪ চামচ শশার রসও দিন। মুখে এবং শরীরের নানা স্থানে ঐ পেস্টটা লাগান। শুকিয়ে যাওয়ার পরে ধুয়ে ফেলুন।

৪। হাতের কনুইর রুক্ষভাব কমাতে এবং কালো দাগ দূর করতেঃ
দুধে মসুর ডাল ভিজিয়ে বাটুন। মসুর ডাল বাটা, হলুদ বাটা, পালংশাক বাটা, টমেটোর রস, সূর্যমুখীর তেল একসঙ্গে মিশিয়ে কনুইয়ে লাগান। কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন।

৫। রোদেপোড়া দাগ দূর করতেঃ
রোদেপোড়া দাগ কমাতে মসুর ডালবাটা, কাঁচা হলুদবাটা ও মধু একসাথে মিশিয়ে ত্বকে লাগান।

৬। বলিরেখা দূর করতেঃ
বলিরেখা দূর করতে কাঁচা হলুদের সাথে মসুর ডাল বাটা দুধের সর মিশিয়ে মুখে মাখুন ফেস প্যাক হিসাবে। নিয়মিত লাগালে অবশ্যই দারুন উপকার পাবেন।

চোখের নিচের কাল দাগ দূর করার উপায়

১) ২ টি চা চামচ ফ্রিজে রাখুন এবং চামচ ২ টি ঠাণ্ডা হবার জন্য অপেক্ষা করুন। চামচ ঠাণ্ডা হলে, বালিশে শুয়ে চোখের উপর চামচ দুইটি রাখুন। এটির দুটি সুফল আছে। এটি চোখের ক্লান্তি দূর করে এবং চোখের কালি দূর করতে সাহায্য করে।

২) ২ টি কটন বল শসার রসে ডুবিয়ে চোখের উপর পনের মিনিট রাখুন।

৩) ঠাণ্ডা টি ব্যাগ চোখের উপর রাখলে ভাল ফল পাবেন। গ্রিন টি-এর ব্যাগ রাখলে কাজ দ্রুত হবে।

৪) খোসা সহ আলু বেটে বা গ্রেট করে চোখের উপর রাখুন।

৫) কাজু বাদাম বেটে দুধের সাথে গুলিয়ে, পেস্ট করে চোখের চারপাশে লাগাতে পারেন।

৬) চোখের চারপাশে বাদাম তেল দিয়ে ম্যাসাজ করলেও দ্রুত উপকার পাবেন।

গলায় ছোপ ছোপ দাগ থেকে মুক্তির উপায়

তৈরীর উপায়:
১ চা  চামচ ঔষধমিশ্রিত উপতান (ঔষধের দোকানে পাওয়া যায় )
১ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো
অল্প পরিমান গোঁটা করে ভাঙা এলাচি
১ টেবিল চামচ এলাচি গুঁড়ো
জিরা ভাঙা
ভিটামিন সি ট্যাবলেট ১ টি ( ভেঙে নিতে হবে )
ভিটামিন ই ক্যাপসুল ১ টি ( ভেঙে নিতে হবে )
দেশি ঘি ( পরিমান মত )

ব্যবহার প্রণালি :
প্রথমে সব উপকরন এক সাথে মিশিয়ে পেস্ট বানান  ।  এরপর ব্রাশ দিয়ে গলায় ভালো করে লাগিয়ে নিন । ৪০ মিনিট পর শুকিয়ে এলে, গোলাপ জল দিয়ে আস্তে আস্তে তুলে ফেলুন । এই পেস্ট দিনে ২ বার করে গলায় এবং ঘাড়ের অংশে নিয়মিত লাগাতে হবে ।
টিপস :
  • প্রতিদিন ২ বার করে ১ টেবিল চামচ ভিটামিন বি কমপ্লেক্স সিরাপ পান করুন ।
  •  প্রচুর পানি খান ।
  •  ঔষধের দোকানে উপতান পাওয়া না গেলে ১ কাপ বেসন, ১ চা চামচ লেবুর রস, ১ চা চামচ দুধ এবং ১ চা চামচ বাদাম তেল বা নারিকেল তেল মিশিয়ে উপতান বানিয়ে ফেলুন ।

ত্বকের কালো দাগ দূর করতে নিমপাতা আর গোলাপজল

 
যা যা লাগবে
-দুই চা চামচ নিমপাতা বাটা,
- এক চা চামচ মধু ও
-দুই চা চামচ গোলাপজল।

নিমপাতা ত্বকে অ্যান্টিসেপটিকের কাজ করে।
এ ছাড়া এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস ও ফ্যাটি এসিড রয়েছে, যা ত্বকের কালো ছোপ ছোপ দাগ সহজেই দূর করে।
গোলাপজল ত্বকের ময়লা-ধুলাবালি দূর করে, লোমকূপের মুখ পরিষ্কার করে এবং ত্বকের অতিরিক্ত তেলতেলে ভাব দূর করে।
অন্যদিকে মধু ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং ত্বককে নরম ও মসৃণ রাখে।
যেভাবে ব্যবহার করবেন
-প্রথমে একটি বাটিতে নিমপাতা, মধু ও গোলাপজল একসঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে নিন।
-এবার মুখ ভালো করে পরিষ্কার করে প্যাকটি লাগান।
-১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন।
-ঠান্ডা পানি মুখ ভিজিয়ে হালকাভাবে ম্যাসাজ করুন।
-এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
-ভালো ফল পেতে সপ্তাহে অন্তত তিনদিন এই প্যাক ব্যবহার করুন।-

ওজন কমাতে দারুণ সুস্বাদু সালাদ

 
উপকরণ
✿ – কাঁচা পেঁপে দেড় কাপ ( চিকন ঝুরি ঝুরি হবে)
✿ – চেরি টমেটো ৮-১০ টি (দুই ফালি করে কেটে নিন। এটা না পেলে রেগুলার টমেটো ব্যবহার করুন)
✿ – গাজর ১/৪ কাপ (ছবি দেখে কেটে নিন)
✿ – বর বটি ২ টি লম্বা পিস করা
✿ – বাদাম
✿ – ফিস সস ২ টেবিল চামচ
✿ – লেবু ২ টি
✿ ব্রাউন সুগার ২ টেবিল চামচ (যারা ডায়েট করবেন তাঁরা যতটা সম্ভব কম দিন কিংবা দেবেন না)
✿ – লাল কাঁচা মরিচ ৩-৪ টি [ স্বাদ মত কম বেশি হতে পারে ]
✿ – রশুন ৩-৪ কোয়া
প্রণালি
► প্রথমে একটি হামান দিস্তা নিয়ে রশুন আর কাঁচা মরিচকে হাল্কা করে ছেঁচে নিন।
► এর পর ফিশ সস , লেবু রস , চিনি , টমেটো , বর বটি ছেড়ে দিন। হাল্কা ভাবে আবারো ছেঁচে নিন । খেয়াল রাখবেন যেন বেশি ছেঁচা না হয় ।
► এর পর পেঁপে এবং গাজর দিয়ে আবারো ছেঁচে নিন। ভালভাবে সব কিছু মিক্স করে নিন ।
► প্লেটে পরিবেশন করুন। উপর দিয়ে বাদাম ছড়িয়ে দিন।

কেন কমবে ওজন?
ভাত বা রুটির তুলনায় এই সালাদে ক্যালোরি নেই বললেই চলে। যদি চিনিটা বাদ দিয়ে দেন তাহলে তো কথাই নেই। ডায়েট খাবার যেমন বিস্বাদ হয় খেতে, এটি মোটেও তেমন নয়। তাই আপনার একঘেয়েমিও লাগবে না। সবজি গুলো ব্যবহার করা হচ্ছে কাঁচা, ফলে অটুট থাকছে পুষ্টি গুণ। আছে ফাইবার, ফলে পেট ভরা ভাবটাও থাকবে অনেকক্ষণ। কাঁচা পেঁপে, রসুন ইত্যাদি মেটাবোলিজম বৃদ্ধিতে সহায়ক ফলে ওজন কমাতেও সহায়ক।

যেভাবে সাজাবেন আপনার প্রি-ব্রাইডাল প্যাকেজ

থ্রেডিং
ব্রাইডাল মেক-আপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে চোখের সাজ আর চোখের সাজ সুন্দর আকর্ষণীয় একজোড়া ভ্রু ছাড়া অসম্ভব। পারফেক্ট শেপের এক জোড়া ভ্রু পালটে দিতে পারে আপনার পুরো চেহারাটাই। তাই ভালো কোন পার্লার থেকে থ্রেডিং করিয়ে নিন বিয়ের ৪-৫ দিন আগে। আপনার মুখ যদি লম্বা বা ডিম্বাকার হয় তবে রাউন্ড শেপ আর গোলাকার হলে ভি শেপের ভ্রু আপনাকে ভালো মানাবে। ভ্রু এর সাথে থ্রেডিং করে নিন আপার লিপ আর ফোরহেডও। ভ্রু যদি পাতলা ও অসমান হয় ২ – ১ মাস আগে থেকে নিয়মিত রাতে ক্যাস্টর ওয়েল মাখুন।

ওয়াক্সিং
সুন্দর মুখের সাথে প্রয়োজন সুন্দর লোমহীন হাত পাও। পার্লার থেকে অথবা বাড়িতেই করে নিন ওয়াক্সিং। আপনার বিয়ের দিনের ৭ দিন হাতে রেখেই ওয়াক্সিং করুন। কারণ ওয়াক্সিং এর পর অনেকেই হাত পায়ে র‌্যাশ ওঠে বা ফুলে যায়। ওয়াক্সিং পর হাত পায়ের বাড়তি যত্ন নিন।

– ওয়াক্সিং শেষে হাত পায়ে বরফ ঘষুন।
– ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার লাগান।
– অ্যালোভেরা জেল /টি ট্রি অয়েল লাগাতে পারেন। এটি ত্বককে ঠান্ডা ও সতেজ রাখে, র‌্যাশ ওঠা প্রতিরোধ করে।

পার্লারে হাত ও পায়ের ওয়াক্সিং এ খরচ পড়তে পারে ৩০০-৫০০ টাকা।
বিয়ে একটি মেয়ের জীবনে নিয়ে আসে মনোঃদৈহিক নানা পরিবর্তন। এজন্য প্রয়োজন মানসিক ও শারীরিক প্রস্তুতি। ওয়াক্সিং করতে পারেন আপনার বিকিনি লাইন ও আন্ডার-আর্মও। কিন্তু বিকিনি লাইনের ওয়াক্সিং অত্যন্ত বেদনাদায়ক। বাড়িতে চেষ্টা না করাই ভালো। অনেক পার্লারে ওয়াক্সিং ছাড়াও বিকিনি লাইন ও আন্ডার-আর্মে থ্রেডিং এর ব্যবস্থা থাকে।

ফেসিয়াল
বিয়ের কনের থাকা চাই দাগমুক্ত, উজ্জ্বল, সুন্দর আর ঝলমলে ত্বক। সুন্দর কোমল ত্বকে মেক-আপ বসে ভালো আর সুন্দর দেখায়। এজন্য প্রয়োজন ত্বকের নিয়মিত যত্ন। বিয়ের অন্তত ৬ মাস আগে থেকেই নিয়মিত ফেসিয়াল করা উচিত। গোল্ড ফেসিয়াল, সিল্ভার, ডায়মন্ড বা পার্ল ফেসিয়াল বিয়ের কনের জন্য উপযুক্ত।পার্লার ভেদে এসব ফেসিয়ালে খরচ পড়বে ১০০০-২৫০০ টাকা। চাইলে বাড়িতেও করতে পারেন। নিউমার্কেট, গাউসিয়াতে গোন্ড, সিল্ভার ফেসিয়াল কিট কিনতে পাওয়া যায়।

মেনিকিউর-পেডিকিউর
সুন্দর কোমল হাত পায়ের জন্য চাই হাত-পায়ের নিয়মিত যত্ন। বিয়ের ৩ মাস আগে থেকেই মাসে ২ বার মেনিকিউর-পেডিকিউর করুন। হাত পায়ের যত্নে নিয়মিত মুলতানি মাটি ও হলুদের প্যাক ব্যবহার করুন। পার্লারে মেনিকিউর-পেডিকিউরে খরচ পড়বে ৭০০-১০০০ টাকা।

বডি পলিশিং
বিয়ের নানা রকম স্ট্রেস, শপিং আর হাজার কাজের চাপে প্রভাব পড়ে শরীরের ত্বকেও। তাই মুখের সাথে নিন শরীরের যত্নও। এজন্য করতে পারেন বডি পলিশিং। এটি দেহের মরা কোষ দূর করে ত্বক উজ্জ্বল ও কোমল করে। বডি পলিশিং বা বডি স্পা করতে খরচ পড়বে ১৫০০-২৫০০ টাকা।

চুলের যত্ন
বিয়ের সময় চুলের উপর দিয়ে যায় নানা রকম অত্যাচার। হেয়ার সেটিং স্প্রে, হিটিং, গ্লিটার, কালারিং এসবে চুল হয়ে পড়ে দূর্বল, প্রাণহীন। তাই আগে থেকে চুলের যত্ন নিয়ে চুলকে প্রস্তুত করে তুলুন। চুলের যত্নে করতে পারেন হেয়ার স্পা, ডিপ কন্ডিশনিং বা হেনা। চুলের ধরন ও দৈর্ঘ্যের উপর নির্ভর করে এই সেবা গুলোতে খরচ পড়বে ১০০০-১৫০০ টাকা।

পারসোনা, ওমেন্স ওয়ার্ল্ড, ড্রিমস, লা বেল, ফারজানা শাকিলস এসব নামকরা পার্লার গুলোতে বিভিন্ন প্রি-ব্রাইডাল প্যাকেজ অফার করে থাকে। খরচ পড়বে ১০০০০-১৫০০০ টাকা। আপনার পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো পার্লার থেকে প্রি-ব্রাইডাল সেবা গুলো নিতে পারেন। বিবাহ পূর্বক সৌন্দর্য চর্চায় হয়ে উঠুন অনন্য।

ফ্রেঞ্চ ম্যানিকিউর যেভাবে করবেন

প্রথমে রিমুভার দিয়ে নখের পুরোনো নেইল পলিশ তুলে ফেলুন। এবার কিউটিক্যাল অয়েল লাগিয়ে নিন নখের চামড়া বা কিউটিক্যালের উপর। কিছুক্ষণ এভাবে রেখে দিন, যাতে চামড়া কিছুটা নরম হয়। এবার হালকা হাতে নখের ওপর তেলটা একটু ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করে নিন। তারপর একটি কিউটিক্যাল পুশার দিয়ে আস্তে আস্তে কিউটিক্যাল পিছনের দিকে পুশ করুন। কিউটিক্যাল পুশারের অপর প্রান্ত দিয়ে নখে জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করে ফেলুন।

এবার নেইল কাটার এবং ফাইলার দিয়ে নখকে দিন আপনার পছন্দ অনুযায়ী আকার।
এবার চলে আসি মূল প্রসঙ্গে।
প্রথমেই আপনার কয়েক ধরনের নেইলপলিশ দরকার। কয়েক ধরনের বলতে তিন রঙের ওয়াটার কালার, পিঙ্ক বা বেইজ এবং ঝকঝকে উজ্জ্বল সাদা রঙ। এক নজরে দেখে নিন সেই রঙ গুলো।

 স্বচ্ছ নেইল পলিশ লাগিয়ে নিন প্রথমে নখে। তাতে নখ ভালো থাকবে এবং যেকোনো রঙের নেইল পলিশ ব্যবহার করা হলে কেমিক্যাল থেকে সৃষ্ট হলুদ ছাপ নখে পড়া থেকে বিরত রাখবে। ক্লিয়ার কালারের নেইল পলিশটি শুকিয়ে গেলে এর উপর হালকা গোলাপি বা বেইজ রঙের নেইলপলিশ লাগিয়ে নিন। শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর আরেক কোট নেইলপলিশ লাগান।

এরপর নেইল পলিশ শুকিয়ে যাওয়ার পর নখের সামনের দিকে অর্থাৎ আপনার নখের ওপর যেটুকু অংশ আপনি সাদা রাখতে চান,সেটি বাদে বাকি অংশে নেইল গাইড লাগিয়ে নিন ঠিক ছবিটির মত করে। এবার বাড়তি নখের উপর উজ্জ্বল সাদা রঙের নেইল পলিশ লাগিয়ে দিন। যেকোনো দোকানে আপনি এই স্টিকারগুলো কিনতে পারেন। এ ছাড়া স্টিকার ব্যবহার না করে সাবধানেও নেইল পলিশ দিয়ে নখের ওপরের অংশটি সাদা করে নিতে পারেন।

কয়েক মিনিট অপেক্ষা করুন এবার নেইল গাইডটি তুলে ফেলুন। ভালো করে নেইলপলিশ শুকালে এবার পুরো নখে স্বচ্ছ কালারের নেইল পলিশ লাগিয়ে নিন। এভাবেই হয়ে গেল আপনার ফ্রেঞ্চ ম্যানিকিউর।

ফ্রেঞ্চ ম্যানিকিউরের পরিচ্ছন্নতা, হালকা ভাব এবং একই সঙ্গে ফ্যাশনেবল ভাবের জন্য খুবই জনপ্রিয়। তবে বর্তমানে ফ্রেঞ্চ ম্যানিকিউরের ধরনেও এসেছে বৈচিত্র্য। আজকাল ফ্রেঞ্চ ম্যানিকিউরের সাদা রঙের বদলেও এসেছে বিভিন্ন রঙের ব্যবহার। লাল, কালো বা ছাই রং অথবা আপনার পছন্দ অনুযায়ী নির্বাচন করতে পারেন যেকোনো রং।  ফ্রেঞ্চ ম্যানিকিউর অনেক দিন ধরে রাখতে কয়েক দিন পর পর ওপরের নেইল পলিশের কোটটি লাগিয়ে নিন।

শ্যাম্পুর পর ঝলমলে সুন্দর চুল পেতে করণীয়

চায়ের লিকার থেরাপি –
ঝলমলে চুলের জন্য দারুণ কাজ করে চায়ের লিকার। চুল যেমনি হোক না কেন তৈলাক্ত, শুষ্ক বা স্বাভাবিক- এই চায়ের লিকার মানিয়ে যাবে খুব সহজে।

এটা তৈরির জন্য দুই কাপ পানি নিন। তার মাঝে ৬ টেবিল চামচ ফ্রেশ চা পাতা দিন। এটাকে এখন অল্প আঁচে চুলায় ফুটতে দিন। ফুটে ফুটে লিকার ঘন হবে। এবং দুই কাপ পানি কমে এক কাপের কম হলে বুঝবেন যে রেডি।

এখন এটাকে ঠাণ্ডা করে ছেঁকে নিন। শ্যাম্পু করার পর ভেজা চুলে এই মিশ্রণ মাখুন। ৫ মিনিট পর সাধারণ পানিতে ধুয়ে ফেলুন।

ভিনেগারে চুলের চমক –
শ্যাম্পু করে ফেলছেন? এবার ভিনেগার মেশানো পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন চুল। আধা কাপ ভিনেগার এক মগ পানিতে মিশিয়ে নিন। তারপর সেটা দিয়ে ধুয়ে ফেলুন শ্যাম্পু করা চুল। ৫ মিনিট পর আবার একটু স্বাভাবিক পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। শুকিয়ে নিলেই পাবেন ঝলমলে চুল।

বেকিং সোডায় উজ্জ্বল চুল –
নিস্প্রান চুলকে ঝলমলে করে তুলতে বেকিং সোডার কোন বিকল্প নেই। এ কাপ হালকা গরম পানির মাঝে ১ টেবিল চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে নিন। শ্যাম্পু করা ভেজা চুলে এই মিশ্রণ লাগান। ৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এবার চুলের চমক দেখে নিজেই অবাক হয়ে যাবেন!

মেকআপের কিছু অজানা টিপস

আপনার ত্বক যদি বেশ উজ্জ্বল হয়ে থাকে তাহলে কোনো ধরনের ফাউন্ডেশন ব্যবহার করার দরকার নেই। এর জন্য শুধু চোখের নিচে কনসিলার ব্যবহার করুন। পাশাপাশি চোখের শ্যাডোর সঙ্গে ত্বকের উজ্জ্বলতা ঠিক করে নিন।

* মেকআপ করার আগে মুখের ত্বককে পরিষ্কার এবং ময়েশ্চারাইজ করে নিন। এতে করে মেকআপটি ত্বকে ভালোভাবে বসে যাবে এবং বেশ কমনীয় ও নমনীয় দেখাবে। ব্রোনজার মুখের মেকআপে এক ধরনের গ্লামার নিয়ে আসে। এটি কপালে এবং গালে ব্যবহার করলে একটি গ্লামারাস লুক তৈরি করে।

* ত্বকের কালার টোন বুঝে সঠিক ফাউন্ডেশনটি ব্যবহার করুন। ফাউন্ডেশনের গায়ে স্কিন টোন অনুযায়ী নম্বর দেওয়া আছে। এ নিয়মটিকে অনুসরণ করুন। তাহলে মেকআপটি আপনার ত্বকের রংয়ের সঙ্গে মিশে যাবে।

* স্কিনের টোন অনুযায়ী মুখের মেকআপ গাঢ় করুন। এতে করে মেকআপটি বেশ উজ্জ্বল হবে। কখনোই নিজের ত্বকের চেয়ে হালকা রঙের মেকআপ নির্বাচন করবেন না। যদি দ্বিধায় পড়ে যান, তাহলে কাছাকাছি হালকা ও গাঢ় দুটি রংই নিন এবং কাঙ্ক্ষিত রং পেতে ব্যবহারের সময় দুটো মিশিয়ে ব্যবহার করুন।

* ঠোঁটের মেকআপটি ন্যাচারাল করলে ভালো দেখাবে। যেমন- ত্বকের রংয়ের সঙ্গে যায় এমন রংয়ের লিপস্টিক ব্যবহার করুন। ফর্সাদের উজ্জ্বল রঙে বেশ ভালো মানিয়ে যায়। পার্টি মেকআপে অবশ্যই উজ্জ্বল লিপস্টিক ব্যবহার করুন। তবে গায়ের রংটাও মাথায় রাখতে ভুলবেন না যেন।

* ফ্রেশ এবং তারুণ্যতা ফুটিয়ে তুলতে চোখে জেল লাইনার ব্যবহার করতে পারেন। এটি চোখের মেকআপটিকে প্রাণবন্ত করে তুলবে। অন্যের কথার চেয়ে নিজের দৃষ্টির ওপর ভরসা করুন। মেকআপের জন্য যে রংটি আপনার কাছে ত্বকের সঙ্গে সবচেয়ে মানানসই লাগে, সেটিই বাছুন।

* মুখের সৌন্দর্য অনেকটাই নির্ভর করে আইব্রোর ওপর। মেকআপে আইব্রো অাঁকার সময় শেষটা কখনোই হঠাৎ করে করা যাবে না। এতে আপনাকে অনেক বেশি বয়স্ক দেখাবে। এ জন্য আইব্রোর শেষ পর্যন্ত এঁকে সঙ্গে সঙ্গে আরও একটু বাড়িয়ে নিন হালকা করে। তাহলে চেহারায় বেশ একটা শার্পনেস চলে আসবে।

* ফটোগ্রাফিক লুক আনার জন্য মেকআপটিতে হাইলাইটস ব্যবহার করুন। আইব্রোর নিচে এবং নাকের মাঝখানে হাইলাইটস ব্যবহার করলে মুখের আকৃতি শার্প হবে। ফলে ছবি ভালো আসবে।

* চোখের ক্লান্তিভাব দূর করতে বেগুনি এবং সবুজ লাইনার ব্যবহার করতে পারেন। চোখের সাজে শ্যাম্পেন কালারড আইশ্যাডো লাগান। চোখের ওপরের পাতায় মোটা রেখায় কালো আইলাইনার লাগান। চোখের নিচের পাতায় কাজল দিয়ে রেখা টানুন। ঘন করে মাশকারা লাগান চোখের পাপড়িতে।

ত্বকের দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়

১) টমেটো ও বেসনের মাস্ক

বেসন ত্বকের দাগ দূর করতে অনেক আগে থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই ত্বকের নানা ধরণের দাগ দূর করতে এর জুড়ি নেই।
 – ২ টেবিল চামচ বেসনের সাথে প্রয়োজন মতো টমেটো রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন।
– এরপর এই পেস্টটি মুখ, ঘাড় ও গলায় ভালো করে লাগিয়ে নিন।
– ১৫ মিনিট পর পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।
– সপ্তাহে ২ বার ব্যবহার করবেন এই মাস্কটি।

২) শসা ও লেবুর রসের মাস্ক

লেবুর রসের ব্লিচিং এজেন্ট ত্বকের দাগ ফিকে হয়ে আসতে সহায়তা করে এবং শসা প্রাকৃতিক ময়েসচারাইজার হিসেবে ত্বকের যত্ন নেয়।
– ৩ টেবিল চামচ শসা ও ৩ টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে মিশ্রন তৈরি করে নিন।
– এই মিশ্রণটি মুখ, ঘাড় ও গলায় লাগিয়ে রাখুন ১৫ মিনিট।
– এরপর সাধারণ পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। এই মাস্কটি প্রতিদিনই ব্যবহার করতে পারবেন।

৩) দুধ, মধু ও লেবুর রসের মাস্ক

প্রাচীনকাল থেকেই দুধ ও মধু রূপচর্চায় ব্যবহার হয়ে আসছে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিহীন উপাদান বলে এর কদর রয়েছে বেশ।
– ১ টেবিল চামচ দুধ, ১ টেবিল চামচ মধু ও ১ টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিন ভালো করে।
– এরপর মুখ, ঘাড় ও গলায় লাগিয়ে রাখুন মাত্র ১০ মিনিট।
– পানি দিয়ে ধুয়ে নিন ভালো করে এবং তোয়ালে আলতো চেপে মুখ শুকিয়ে ফেলুন।
– সপ্তাহে ২-৩ দিন ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন।

চুলের সমস্যা দূর করতে টক দইয়ের হেয়ার প্যাক

১। চুল নরম কোমল করতে
টক দই, নারকেল তেল এবং অ্যালোভেরা জেল ভাল করে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। এই প্যাকটি চুলে ব্যবহার করুন। ১৫ মিনিট পর শ্যাম্পু করে ফেলুন।  প্রাণহীন, নির্জীব, রুক্ষ চুলকে নরম, কোমল, এবং ময়োশ্চারাইজ করে তুলবে এই প্যাকটি। নিয়মিত ব্যবহারে এই প্যাকটি চুলের রুক্ষতা দ্রুত দূর করে দেবে।

২। চুল পড়া রোধ
১/৪ কাপ মেথি গুঁড়োর তার সাথে ১ কাপ টক দই মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। মাথার তালুসহ সম্পূর্ণ চুলে এই প্যাকটি ব্যবহার করুন। ২ ঘন্টা রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন। এটি সপ্তাহে এক বার ব্যবহার করুন।  এই প্যাকটি চুল পড়া রোধ করতে সাহায্য করে।

৩। রুক্ষতা দূর করতে
টকদই, বাদাম তেল এবং একটি ডিম ভাল করে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। এই প্যাকটি চুলের গোড়া থেকে সম্পূর্ণ চুলে ভাল করে লাগিয়ে রাখুন। ৩০ মিনিট পর চুল শ্যাম্পু করে ফেলুন। ডিমের পুষ্টি এবং তেলে চুলের রুক্ষতা দূর করে দিয়ে চুল স্লিকি করে তোলে।

৪। খুশকি দূর করতে
মাথার তালুর রুক্ষতা, খুশকি দূর করতে এই প্যাকটি বেশ কার্যকর। তিন টেবিল চামচ অলিভ অয়েল টক দইয়ের সাথে ভাল করে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। এটি মাথার তালুতে ১০ মিনিট চক্রাকারে ম্যাসাজ করে লাগান। ৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি সপ্তাহে দুই বার ব্যবহার করুন।

মধু-পানি পানের স্বাস্থ্য উপকারিতা

১। ওজন হ্রাস করতে
ওজন কমাতে মধু পানি জাদুর মত কাজ করে।  প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস কসুম গরম পানিতে এক চামচ মধু মিশিয়ে নিন। এবার এটি পান করুন। এর সাথে আপনি চাইলে লেবুর রস মিশিয়ে নিতে পারেন। এটি আপনার পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করবে।

২। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
প্রতিদিন এক গ্লাস মধু পানি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এর অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান শরীরকে সবল রাখে এবং যেকোন ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে দেহকে রক্ষা করে।

৩। অ্যালার্জি দূর করে
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মধু পানি পানে দেহের পোলেন অংশগুলো যেখানে অ্যালার্জি রয়েছে সেসকল স্থানে এক ধরণের প্রতিরক্ষা পর্দা সৃষ্টি করে যা অ্যালার্জির যন্ত্রণা দূর করে দেয়।

৪। হজমশক্তি বৃদ্ধি করে
মধুতে এনজাইম আছে যা খাবার হজম করতে সাহায্য করে। যদি আপনার হজমে সমস্যা থাকে তবে খাওয়ার পর এক গ্লাস কুসুম গরম মধু পানি পান করুন, দেখবেন হজমের সমস্যা দূর হয়ে গেছে।

৫। হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
দারুচিনি এবং মধুর মিশ্রণ হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। এটি রক্তে কোলেস্টে্রলের মাত্রা ১০% পর্যন্ত কমিয়ে দেয়। এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে এক টেবিল চামচ মধু এবং এক চামচ দারুচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে প্রতিদিন পান করুন।

৬। কোষ্টকাঠিন্য প্রতিরোধে
শরীরে পানির অভাব দেখা দিলে কোষ্টকাঠিন্য দেখা দেয়। এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে মধু মিশিয়ে পান করুন। এটি সকালে খালি পেটে একবার এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে একবার পান করুন। এটি আপনার কোষ্টকাঠিন্য সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে।

৭। এনার্জি বৃদ্ধিতে
দুর্বলতা অনুভব করছেন? তাহলে তাৎক্ষনিক এক গ্লাস মধু পানি পান করুন। শরীরে চিনির মাত্রা কমে গেলে দুর্বলতা অনুভব হয়। মধু পানি শরীরে পানির পরিমাণ বজায় রেখে শরীরের এনার্জি বৃদ্ধি করে।

“নখের কোণা ওঠা” সমস্যার সমাধান

-হাত বা পা উষ্ণ লবণ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন মিনিট দশেক। যতটা সহ্য করতে পারেন, ততটা গরম পানি নেবেন।

-কাজ শুরুর আগে মেনিকিউর সেট গরম পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিন।

-এবার পা/হাত ভালো করে মুছে নিন। মুছে নেয়ার পর নখ কাটুন। বেড়ে ওঠা বাড়তি নখ ও তার আশেপাশে যতটা সম্ভব কেটে ফেলুন।

-এবার রয়ে যাওয়া বাড়তি নখ চিমটার সাহায্যে সামান্য উঁচু করে ধরুন এবং আরেকটি চিমটার সাহায্যে সামান্য একটু তুলো নখের নিচে গুঁজে দিন। খুব সাবধানে কাজটি করুন। এই কাজটি আপনার নখে ব্যথা হতে দেবে না।

-যতদিন নখে বড় না হচ্ছে আর আপনি কেটে যন্ত্রণাদায়ক বাড়তি কোণা বাদ দিতে না পারছেন, ততদিন পর্যন্ত এভাবেই তুলো দিয়ে রাখুন। দিনে ২/১ বার বা জীবাণুনাশক দিয়ে ধুয়ে তুলো বদলে দেবেন।

-যদি ইতিমধ্যেই ইনফেকশন হয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে অবিলম্বে ডাক্তারের কাছে যান। এই পদ্ধতি অবলম্বন করবেন না।

-পা/হাত সর্বদা পরিষ্কার রাখুন এবং এমন হলে মোজা পরিধান করবেন না।

ফেসিয়াল করার সঠিক নিয়ম

ক্লিঞ্জিং
প্রথমে ক্লিঞ্জিং দিয়ে মুখ ধোয়ার পূর্বে প্রথমে গরম ভাপ নিয়ে নিন। এটি আপনার মুখের লোমকুপগুলো খুলে দিতে সাহায্য করবে। ভাপ নেয়া হয়ে গেলে ক্লিঞ্জার দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন ভালো করে। দুধে তুলা ভিজিয়ে ত্বক পরিস্কার করে নিতে পারেন।

ক্রিম ম্যাসাজ
ফেসিয়াল ক্রিম দিয়ে ১০ মিনিট ত্বকে হালকা হাতে ম্যাসাজ করে নিন।

স্ক্র্যাবিং
এবার স্ক্র্যাব দিয়ে মুখ আলতো ভাবে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ঘষুন। তারপর উষ্ণ তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছে ফেলুন। উজ্জ্বল ত্বকের জন্য চালের গুঁড়া, সুজি অথবা চিনি হতে পারে সবচেয়ে ভালো স্ক্র্যাব।

টোনিং
সমপরিমাণ ভিনেগার ও গোলাপ জল মিশিয়ে তৈরি করতে পারেন টোনার। যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে খুবই উপযোগী। তুলা দিয়ে টোনার মুখে লাগান কিন্তু ভুলেও ঘষবেন না। চোখের কাছে লাগাবেন না।

এই পর্যায়ে ফেসিয়াল যে কোনো একটি মাস্ক প্রস্তুত করুন।

একটা শসা কুড়িয়ে, সেটা থেকে রসটা বের করে এক চামচ চিনি ভাল করে মিশিয়ে কিছুক্ষণ ফ্রিজে রেখে দিন। ত্বকে মেখে দশ মিনিট রেখে ধুয়ে নিন। শসার রস ত্বককে হাইড্রেট করে, ফলে ত্বক অনেক মসৃণ ও উজ্জ্বল হয়।

দু’চামচ মসুর ডাল সারারাত ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে মসুর ডাল বেটে তার মধ্যে অল্প দুধ ও আমণ্ড তেল মিশিয়ে একটা মিশ্রণ তৈরি করে নিন। এই প্যাকটা মুখে মেখে দশ মিনিট অপেক্ষা করুন। এবার পানি দিয়ে ঘষে ঘষে ধুয়ে নিন।

শসার রস, এক কাপ ওটমিল ও এক টেবিল চামচ দই একসঙ্গে মিশিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন। এবার এই মিশ্রণটা পুরো মুখে মেখে তিরিশ মিনিট রেখে হালকা গরম পানিতে ধুয়ে নিন।

একটা ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে এই মিশ্রণটা ২০ মিনিট মুখে রেখে ধুয়ে ফেলুন।

আজকাল সারা বছর টমেটো পাওয়া যায়। একটি টমেটো ভাল করে চটকে নিন। সঙ্গে আধা চা চামচ মধু মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এই প্যাক নিয়মিত ব্যবহারে আমাদের ত্বকের দাগগুলো সব মিলিয়ে যাবে।

ফুটন্ত গরম পানিতে ১ চামচ গ্রিন টি কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন। ১টি বাটিতে ২ চামচ মুলতানি মাটি নিন। তাতে ২-৩ চামচ গ্রিন টি ভেজানো পানি মেশান। অ্যালোভেরার আবরণ সরিয়ে রস বের করে নিন। এবার মুলতানি মাটি ও গ্রিন টির মিশ্রণে মিলিয়ে নিন। প্যাকটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রাখুন, তারপর পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।